চারা গাছ নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। রবিবার আরামবাগের পল্লিশ্রী এলাকায়।
আমপান এবং কালবৈশাখী— সাত দিনের মধ্যে দুই ঝড়ে হুগলিতে অন্তত ৭৫ হাজার গাছ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। বন দফতর জেলার ১২টি ব্লকে নষ্ট হয়ে যাওয়া গাছের সমীক্ষার কাজ শুরু করেছে। এই আবহে প্রাকৃতিক ভারসাম্যের বিষয়টি নিশ্চিত করতে চাইছে হুগলি জেলা প্রশাসন। তাই ‘সবুজমালা’ প্রকল্পে নষ্ট হয়ে যাওয়া গাছপিছু ২০টি চারা লাগানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বৃক্ষরোপণকে হাতিয়ার করে ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পেও শ্রমদিবস বাড়ানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে।
জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও বলেন, “সবুজমালা অভিযানে আমরা সামনের দু-আড়াই মাসের মধ্যে ৫ লক্ষ গাছ লাগানোর লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছি। ভেঙে যাওয়া গাছপিছু ২০টি গাছ লাগানো হবে। এই প্রকল্পের সুফল হিসেবে জেলায় ১০০ দিনের কাজে শ্রমদিবস বাড়ছে।”
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, গত বছর ১০০ দিনের কাজে হুগলিতে কোনও গতি ছিল না। লক্ষ্যমাত্রা থেকে অনেক পিছিয়ে ছিল জেলা। তাই শ্রমদিবস ঘাটতির মোকাবিলায় জেলায় ‘সবুজমালা’ প্রকল্পটি চালু করা হয়। প্রকল্পের রূপরেখা তৈরি করে জেলার ১৮টি ব্লকের সব বিডিওকে তা রূপায়ণের নির্দেশ দেওয়া হয়। ‘সবুজমালা’ প্রকল্পে জেলার ২০৭টি পঞ্চায়েতে কমপক্ষে ২৫০টি ব্যক্তিগত উপভোক্তা পরিবারকে চিহ্নিত করা হয়। ওই পরিবারপিছু ২৫টি চারা লাগাতে বলা হয়। সব মিলিয়ে জেলার সব পঞ্চায়েতে ১২ লক্ষ ৯৩ হাজার ৭৫০টি বিভিন্ন প্রজাতির চারা লাগানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। একইসঙ্গে প্রত্যেক পঞ্চায়েতে নার্সারি তৈরির জন্য জায়গা এবং স্বনির্ভর গোষ্ঠী চিহ্নিত করারও কথা বলা হয়। যাতে রাস্তার ধারে গাছ লাগানোর সংস্থান হাতের কাছেই থাকে। অভিযানের অগ্রগতি দেখার জন্য ‘সবুজ মিত্র’ পদে লোক নিয়োগ করা হয়। যদিও গত বছর বর্ষায় শেষে গাছ লাগানোর ওই নির্দেশ সে ভাবে ফলপ্রসূ হয়নি। তাই ফের জোর দেওয়া হচ্ছে ওই প্রকল্পে।
বলাগড়ের বিডিও সমিত সরকার জানান, গত বছর ১ লক্ষ ৪০ হাজার সুপারি, আম, কুল, নারকেল গাছ বসানো হয়েছে ‘সবুজমালা’ প্রকল্পের মাধ্যমে। এ বছরে এক লক্ষ বিভিন্ন প্রজাতির চারা বসানো হবে পঞ্চায়েতগুলির মাধ্যমে। পান্ডুয়ার বিডিও স্বাতী চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সবুজমালা প্রকল্পে গাছ বসানো নিয়ে ব্লকের প্রতিটি পঞ্চায়েতের প্রধান এবং একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে নিয়ে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’ পোলবা-দাদপুরের ব্লকের বিডিও সন্তু দাস বলেন, ‘‘ইতিমধ্যেই পঞ্চায়েত প্রধানদের চারা রোপণের জায়গা ঠিক করতে বলা হয়েছে। বর্ষার আগে গাছ লাগানো হবে।’’
তথ্য সহায়তা: সুশান্ত সরকার।