আহত বিজেপি নেত্রী ও তার স্বামী। —নিজস্ব চিত্র
বাড়িতে ঢুকে এক বিজেপি নেত্রীকে মারধর এবং হেনস্থার অভিযোগ উঠল তৃণণূলের বিরুদ্ধে। প্রতিবাদ করতে গিয়ে আক্রান্ত হন তাঁর স্বামী। রড দিয়ে তাঁর মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়। রেয়াত করা হয়নি দম্পতির ৯ বছরের মেয়েকেও। তাকে চড়-থাপ্পড় মারা হয়। আলমারি ভেঙে তৃণমূলের ছেলেরা লুটপাটও চালায় বলে অভিযোগ।
রবিবার রাতে গোঘাটের বেঙ্গাই পঞ্চায়েত এলাকার নরহরবাটী গ্রামের এই ঘটনায় তাদের কেউ জড়িত নয় বলে তৃণমূলের দাবি। রাতেই পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। ঘটনার প্রতিবাদে এবং দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে সোমবার সকালে আরামবাগ-কোতলপুর রোডের খাঁদিঘিতে অবরোধ করে বিজেপি। পুলিশ দোষীদের ধরার আশ্বাস দিলে আধ ঘণ্টা পরে অবরোধ ওঠে। পুলিশ জানায়, অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। এলাকায় পুলিশ টহল চলছে।
মামণি রায় নামে ওই বিজেপি নেত্রী দলের মহিলা মোর্চার হুগলি জেলার সাধারণ সম্পাদিকা। রাতেই তাঁকে এবং স্বামী বিপ্লবকে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য কামারপুকুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। মামণি মোট ১২ জনের নামে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ প্রথমে শাবল দিয়ে মামণিদের বাড়ির গ্রিল খুলে ঢোকে কয়েকজন যুবক। তারপরে মামণির ঘরের ‘লক’ ভাঙে তারা। মামণি জানান, শাবল ছাড়াও ওদের হাতে বাঁশ, লাঠি এবং রড ছিল। চার জনের মুখ খোলা থাকলেও বাকিদের গামছা দিয়ে ঢাকা ছিল।
মামণির অভিযোগ, “বিজেপি করা যাবে না বলে অনেকদিন ধরেই হুমকি দিচ্ছিল তৃণমূলের ছেলেরা। সংগঠনের কাজ বন্ধ করিনি। ভোট যত এগিয়ে আসছে, আমাদের দলের সমর্থন তত বাড়ছে। তাতেই ভয় খেয়ে ওরা হামলা করল। আমাকে হেনস্থা করছে দেখে স্বামী প্রতিবাদ করায় ওঁর মাথা ফাটিয়ে দেয়। মেয়েকেও ছাড়ল না। নিজেকে বাঁচাতে ওদের একজনকে ঘরে থাকা ইট দিয়ে আঘাত করেছি। তারপরেও ওরা আলমারি ভেঙে টাকা-গয়না লুট করল। মোবাইলও কেড়ে নেয়।’’
বিজেপির আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিমান ঘোষের দাবি, “তৃণমূলের পাশে মানুষ নেই। বিধানসভা ভোটে নিশ্চিত হার নিশ্চিত বুঝতে পরে এলাকা সন্ত্রস্ত করতেই এই হামলা পরিকল্পিত।
পক্ষান্তরে, তৃণমূলের গোঘাট-২ ব্লক সভাপতি তপন মণ্ডলের দাবি, “বিজেপি নেত্রীর ঘরে হামলার সঙ্গে আমাদের দলের কোনও যোগ নেই। দলের কেউ যুক্ত থাকলে পুলিশ তদন্ত করে আইনগত পদক্ষেপ করুক।” তৃণমূলের বেঙ্গাই অঞ্চলের কার্যকরী সভাপতি বাসব চট্টরাজ অবশ্য বলেন, “আমাদের দলীয় কর্মী চন্দন দুলে রাতে ফেরার পথে ওই নেত্রীর বাড়ির লোকজনের হাতেই আক্রান্ত হন। তারই প্রতিবাদ করেছে দলের ছেলেরা।”
কিন্তু চন্দনের তরফে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। এ নিয়ে বাসব বলেন, “অভিযোগ করা নিয়ে দলের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”