বন্যা-সহনশীল ধান, উদ্যোগ সিঙ্গুরে

সম্প্রতি সিঙ্গুরের নসিবপুরে এমনই ১২টি প্রজাতির ধান পরীক্ষামূলক ভাবে রোপণ করা হল বিজ্ঞানীদের তদারকিতে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সিঙ্গুর শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০১৮ ০১:১১
Share:

নিরীক্ষা: হাতে কলমে চাষের পদ্ধতি শিখিয়ে দিচ্ছেন বিজ্ঞানী। নিজস্ব চিত্র

বৃষ্টির জলে ধান ফলান চাষিরা। আবার অতিরিক্ত বৃষ্টিতে নদী, খাল-বিল উপচে খেতে জল দাঁড়িয়ে গেলে নষ্ট হয় সেই ধানই। মাথায় হাত পড়ে ধানচাষির। এই সমস্যা থেকে চাষকে বাঁচাতে বন্যার জলের চাপ সহনশীল প্রজাতির আমন ধান নিয়ে গবেষণা করছেন কৃষি-বিজ্ঞানীরা। সম্প্রতি সিঙ্গুরের নসিবপুরে এমনই ১২টি প্রজাতির ধান পরীক্ষামূলক ভাবে রোপণ করা হল বিজ্ঞানীদের তদারকিতে।

Advertisement

চুঁচুড়া ধান্য গবেষণা কেন্দ্র এবং ফিলিপিন্সের আন্তর্জাতিক ধান্য গবেষণা কেন্দ্রের যৌথ উদ্যোগে ‘ট্রাসা’ (স্ট্রেস টলারেন্ট রাইস ইন আফ্রিকা অ্যান্ড সাউথ এশিয়া) প্রকল্পে পরীক্ষামূলক ওই চাষ হচ্ছে সিঙ্গুরের নসিবপুর পঞ্চায়েতের বাগপাড়ায় গোপীনাথ চালকি নামে এক কৃষকের জমিতে।

কৃষি-বিজ্ঞানীরা জানান, এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য বন্যার জলের চাপ থেকে আমন ধানকে বাঁচানো এবং চাষিদের লাভের মুখ দেখানো। প্রথাগত স্বর্ণ, স্বর্ণপঙ্কজ, স্বর্ণ মাসুরী, নিরঞ্জন মাসুরী, প্রতীক্ষা প্রভৃতি প্রজাতির আমন ধানের গাছ তিন-চার দিনের বেশি জলে ডুবে থাকলে পচে নষ্ট হয়ে যায়৷ কিন্তু ওই কৃষকের জমিতে যে সব প্রজাতির ধানের চারা রোপণ করা হয়েছে, তা ৭০ সেন্টিমিটার উচ্চতা পর্যন্ত জলের চাপ সহ্য করে ১২-১৪ দিন বেঁচে থাকতে পারে। এর মধ্যে কোন প্রজাতির ধান কতটা জলের চাপ কত দিন সহ্য করে অপেক্ষাকৃত ভাল ফলন দিতে পারছে, তা দেখে সেই প্রজাতির ধান বাজারে আনার ব্যবস্থা করা হবে।

Advertisement

সিঙ্গুরে ওই প্রক্রিয়ার নেতৃত্ব দেন চুঁচুড়া গবেষণা কেন্দ্রের সহকারী কীটতত্ত্ববিদ চিরশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি জানান, চাষিরাই ঠিক করবেন কোন প্রজাতির ধান জলে বেশি দিন ডুবে থেকেও ভাল ফলন দিতে পারে এবং স্বাদও অপেক্ষাকৃত ভাল। তার পরে নির্বাচিত ধানের প্রজাতি জাতীয় ধান্য গবেষণা কেন্দ্রে পাঠানো হবে ছাড়পত্রের জন্য। তারপরে চাষিদের ওই প্রজাতির বীজ দেওয়া হবে৷ এর আগেও বন্যার জলের চাপ সহনশীল নানা প্রজাতির ধান গবেষণার মাধ্যমে বাজারে এসেছে।

গোপীনাথবাবু বলেন, ‘‘প্রতি বছর বিঘের পর বিঘে ধানজমিতে জল দাঁড়িয়ে প্রচুর লোকসান হয়। কৃষি-বিজ্ঞান‌ীদের হাত ধরে নতুন প্রজাতির ধান চাষ করতে পারলে এই সমস্যা থাকবে না। তাতে চাষিরা লাভের মুখ দেখতে পারবেন‌। সবচেয়ে বড় কথা চাষের পদ্ধতি কৃষি-বিজ্ঞানীরা হাতেকলমে শিখিয়ে দিচ্ছেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement