TMC

সরানো হল বিদায়ী ভাইস-চেয়ারম্যানকে

সম্প্রতি পুরসভায় ‘বেআইনি’ নিয়োগের প্রতিবাদে অস্থায়ী সাফাইকর্মীরা যে আন্দোলন করেন, তার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন অমিতবাবু।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০২০ ০৪:০৪
Share:

হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভার বিদায়ী ভাইস-চেয়ারম্যান অমিত রায়। ছবি: তাপস ঘোষ

প্রশাসকমণ্ডলী থেকে সরিয়ে দেওয়া হল হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভার বিদায়ী ভাইস-চেয়ারম্যান তৃণমূলের অমিত রায়কে। মঙ্গলবার রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর একটি নির্দেশিকা জারি করে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন পুরসভা কর্তৃপক্ষকে।

Advertisement

সম্প্রতি পুরসভায় ‘বেআইনি’ নিয়োগের প্রতিবাদে অস্থায়ী সাফাইকর্মীরা যে আন্দোলন করেন, তার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন অমিতবাবু। আন্দোলনের জেরে অচলাবস্থা শুরু হয়েছিল পুরসভার। সেই কারণেই তাঁকে পুর-প্রশাসকমণ্ডলী থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে মনে করছেন পুরসভার অস্থায়ী কর্মীদের বড় অংশ। অমিতবাবুর প্রতিক্রিয়া, ‘‘আমি দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সততায় বিশ্বাসী। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, দিদিকে না-জানিয়েই আমাকে সরানো হয়েছে। ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়ানোয় অন্যায় করা হল আমার সঙ্গে। এই ঘটনা অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করার জেদ আরও বাড়িয়ে দিল।’’ পুর-প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান তথা বিদায়ী পুরপ্রধান তৃণমূলের গৌরীকান্ত মুখোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, ‘‘পুর দফতর থেকে চিঠি পেয়েছি। ওই চিঠিতে বলা হয়েছে প্রশাসক বোর্ড থেকে অমিতবাবুকে অব্যহতি দেওয়া হোক। এটা পুরোপুরি সরকারি বিষয়। এর বেশি কিছু আমি বলতে পারব না।’’ পুরসভার বিরোধী দলনেতা সিপিএমের সমীর মজুমদারের মন্তব্য, ‘‘পুরসভার নিয়োগে দুর্নীতি নিয়ে সরব হওয়ায় দলেরই একাংশের রোষের বলি হলেন অমিতবাবু।’’ বিজেপির হুগলি জেলা সাংগঠনিক সভাপতি গৌতম চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘তৃণমূলের এখন এমন অবস্থা যে, দলের কেউ দুর্নীতির প্রতিবাদ করলেও তাকে রেয়াত করা হয় না। অমিতবাবুর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে ওরা সেটাই বুঝিয়ে দিল।’’

বিদায়ী উপ-পুরপ্রধানকে প্রশাসকমণ্ডলী থেকে সরিয়ে দেওয়ার খবর প্রকাশ্যে আসার পরেই অসন্তোষ তৈরি হয় পুরসভার অস্থায়ী কর্মীদের মধ্যে। বিকেলে তাঁরা বৈঠকে বসেন। তাঁদের তরফে রাধেশ্যাম শঙ্খবণিক জানান, অমিতবাবুকে সরানোর প্রতিবাদে আজ, বুধবার পুরসভা থেকে ঘড়ির মোড় পর্যন্ত মিছিল হবে। ওই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে আগামী এক সপ্তাহ পুরসভায় গেট মিটিং হবে। পোস্টার-ও পড়বে শহরজুড়ে।

Advertisement

সম্প্রতি পুরসভার অস্থায়ী সাফাইকর্মীদের একাংশ অভিযোগ তোলেন, নিয়মরীতির তোয়াক্কা না করে একটি বেসরকারি সংস্থাকে দিয়ে পুরসভায় ৭২ জনকে স্থায়ী পদে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আন্দোলন শুরু করেন তাঁরা।

তাঁদের আন্দোলনে পাশে দাঁড়িয়েছিলেন অমিতবাবু।

অস্থায়ী সাফাইকর্মীদের কর্মবিরতির জেরে শহরের বিভিন্ন জায়গায় আবর্জনা জমে যায়। নিয়োগ নিয়ে জলঘোলা হওয়ায় গোটা প্রক্রিয়া বাতিল করে রাজ্য সরকার। তদন্তের নির্দেশও দেওয়া হয়। তবে

তাতেও পুরসভায় অচলাবস্থা কাটেনি। বেশ কিছু দিন কেটে যাওয়ার পরেও নিয়োগ বাতিল সংক্রান্ত সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি না-হওয়ায় ফের আন্দোলনে নেমেছিলেন অস্থায়ী কর্মীরা। পরে বিজ্ঞপ্তি এলে তাঁরা আন্দোলনে ইতি টানেন।

অমিতবাবুকে প্রশাসকমণ্ডলী থেকে সরিয়ে দেওয়ায় ফের পুরসভার কাজকর্মে সমস্যা হতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement