রক্ষা: এই গাছটি কাটা হচ্ছিল বলে অভিযোগ। —নিজস্ব িচত্র
আমপানের তাণ্ডব রুখে দাঁড়িয়েছিল একটি নিমগাছ। সরকারি সম্পত্তিতে বেড়ে ওঠা গাছটিতে কোপ পড়তেই ময়দানে নামলেন পরিবেশকর্মীরা। আর তাতেই রক্ষা পেল গাছটি।
মঙ্গলবার মহকুমাশাসকের (উলুবেড়িয়া) দফতরের পাশে উলুবেড়িয়া উপসংশোধনাগার চত্বরে একটি প্রাচীন নিমগাছ কাটার কাজ চলছিল বলে অভিযোগ। উলুবেড়িয়া পুরসভার প্রাক্তন প্রধান সাইদুর রহমান এবং কয়েক জন পরিবেশকর্মীর নজরে আসতেই তাঁরা যোগাযোগ করেন মহকুমাশাসকের দফতরে। অভিযোগ পেয়ে মহকুমাশাসক অরণ্য বন্দ্যোপাধ্যায় গাছ কাটা বন্ধ করে দেন। যদিও উপসংশোধনাগার কর্তৃপক্ষের দাবি, গাছ নয়, কাটা হচ্ছিল ডাল।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আমপানে ওই উপসংশোধনাগার চত্বরে একাধিক গাছ পড়ে যায়। রাতারাতি সেগুলি কেটে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তবে ঝড়ের তাণ্ডব সামলে দাঁড়িয়েছিল নিমগাছটি। সেটির গায়ে কোপ পড়ায় এ দিন ক্ষোভ সামলাতে পারেননি এলাকার পরিবেশকর্মীরা।
গাছকাটার খবর পেয়েই এ দিন সকলে ঘটনাস্থলে আসেন সাইদুর, অজয় দাস, স্বপন চেটেল ও দীপক দাসের মতো বেশ কয়েকজন পরিবেশকর্মী। গাছ কাটা রুখে দিয়ে সকাল ১০টা নাগাদ তাঁরা চলে যান মহকুমাশাসকের কার্যালয়ে। গাছ কাটার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন মহকুমাশাসকের কাছে। মহকুমাশাসক তৎক্ষণাৎ ডেকে পাঠান উপসংশোধনাগারের জেলারকে। তারপর বন্ধ হয় গাছ কাটা।
উপসংশোধনাগারের জেলার চিরঞ্জিৎ ঘোষ বলেন, ‘‘আমপানে অনেক গাছ পড়ে গিয়েছিল। একটি গাছ বিপজ্জনক অবস্থায় ছিল। বন দফতরের অনুমতি নিয়ে সেটি কাটা হয়েছে। নিমগাছটির কয়েকটি ডাল বিদ্যুতের তারের দিকে হেলে পড়েছিল বলে তার ডালপালাগুলি কাটা হয়েছে। বন দফতরের অনুমতি ছাড়া কোনও গাছ কাটা হয় না।’’ যদিও সাইদুরের দাবি, ‘‘ঠিক সময়ে না পৌঁছলে নিমগাছটি কেটে ফেলা হত। ওই গাছের পাশ দিয়ে কোনও বিদ্যুতের তার যায়নি। অনেকটা দূর দিয়ে একটি বিদ্যুতের তার গিয়েছে। কোনও একটি উদ্দেশ্য নিয়েই গাছটি কাটা হচ্ছিল।’’ তাঁর আক্ষেপ, ‘‘আমপানে উলুবেড়িয়া শহরে পড়ে যাওয়া অনেক গাছ পুনঃস্থাপন করা যেত। কিন্তু বন দফতর ও প্রশাসনের উদাসীনতায় সেগুলি শুকিয়ে গিয়েছে। বন দফতরকে বারবার জানানো হয়েছিল। একটি গাছকেও পুনঃস্থাপন করা হয়নি।’’
উলুবেড়িয়া বন দফতরের রেঞ্জ অফিসার সুকুমার সরকার বলেন , ‘‘উপ সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষকে একটি গাছ কাটার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল অনেক আগে। কিন্তু নিমগাছটি কাটার অনুমতি দেওয়া হয়নি। এই গাছটি কাটার চেষ্টা হয়ে থাকলে তার তদন্ত হবে।’’ মহকুমাশাসক বলেন, ‘‘গাছের ডাল কাটা হচ্ছিল বলে আমাকে জানানো হয়েছে। বিষয়টি জানার পরেই তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।’’