উলুবেড়িয়ায় ইডি-র প্রতিনিধি দল। —নিজস্ব চিত্র।
গত মাসের মাঝামাঝি জেলা কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কগুলিতে বাতিল নোটের লেনদেন বন্ধে ফরমান জারি করেছিল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। তা নিয়ে বিতর্ক কম হয়নি। নোট বাতিলের ঘোষণার পর থেকে জমা পড়া টাকার খোঁজখবর নিতে এ বার দুই জেলার কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কে হানা দিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)।
শুক্রবার দুপুরে ইডি-র চার সদস্যের দু’টি পৃথক প্রতিনিধি দল উলুবেড়িয়ায় হাওড়া জেলা কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্ক এবং চুঁচুড়ায় হুগলি জেলা কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কে হানা দেয়। তবে, তারা কোথাও কোনও গরমিল পায়নি বলে দাবি করেছে ওই ব্যাঙ্কগুলি।
উলুবেড়িয়ার ওই ব্যাঙ্ক সূত্রের খবর, সেখানে ব্যাঙ্কে বর্তমানে প্রায় ৩০ কোটি টাকা আমাত রয়েছে। ইডির তরফে জানতে চাওয়া হয় ৯ নভেম্বর থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত বাতিল ৫০০ এবং ১০০০ হাজারের নোটে মোট কত টাকা জমা পড়েছে। মোট ৫০ কোটি ৮১ লক্ষ টাকা ওই পাঁচ দিনে জমা পড়ার কথা জানানো হয়। জেলা প্রাথমিক কৃষি সমবায় সমিতিগুলি থেকে যে ওই টাকা এসেছে, জানানো হয় সে কথাও। হাওড়াতে মোট ৫২টি কৃষি সমবায় সমিতি রয়েছে। এর মধ্যে উদয়নারায়ণপুরের একটি প্রাথমিক কৃষি সমবায় সমিতি জমা করেছে সব থেকে বেশি, চার কোটি টাকা। সে তথ্যও ইডি-র প্রতিনিধিদের কাছে তুলে ধরা হয়।
হাওড়া জেলা কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কের কর্তারা জানান, প্রাথমিক কৃষি সমবায় সমিতি এখানে যখন তাদের আমানতের টাকা রাখে তখন তাদের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় নথি নিয়ে রাখা হয়। কিন্তু প্রাথমিক কৃষি সমবায় সমিতিগুলি যখন চাষিদের কাছ থেকে আমানতের টাকা সংগ্রহ করে, তার কোনও তথ্য তাদের কাছে আছে কিনা সেটা তারাই বলতে পারবে। প্রাথমিক কৃষি সমবায় সমিতিগুলিতে খোঁজ-খবর করা হবে কিনা সে বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকার করেন ইডি কর্তারা।
চুঁচুড়ার ব্যাঙ্কটিতে ইডি-র প্রতিনিধিরা যান বিকেলে। বাতিল নোটে ওই ব্যাঙ্কে জমা রয়েছে প্রায় ১০০ কোটি টাকা। ব্যাঙ্ক সূত্রের খবর, তার মধ্যে ৬৫ কোটি টাকা এসেছে ব্যাঙ্কের ১৯টি শাখা থেকে। সেই শাখাগুলির আমানতকারীদের ‘কেওয়াইসি’ পরীক্ষার জন্য আগেই নির্দেশ দিয়েছিল ইডি। ব্যাঙ্কের প্রধান হিসাবরক্ষক শুভ্রান্তি সেন বলেন, ‘‘তদন্তকারীরা আমানতকারীদের টাকা জমা সংক্রান্ত কিছু কাগজপত্র চেয়েছেন। সেগুলি পাঠিয়ে দেওয়া হবে। তবে এ দিন তারা কোনও গরমিল পায়নি। ব্যাঙ্ক য়ে সুনামের সঙ্গে কাজ করছে, ইডি তার প্রশংসাই করেছে।’’