উদ্ধার হওয়া চিল। —নিজস্ব িচত্র
ঘুড়ির সুতো জড়িয়ে রয়েছে ডানায়। এই অবস্থায় ছটফট করছিল একটি চিল। এক ব্যক্তি সেটিকে উদ্ধার করেন। নিজের বাড়িতে রেখেই পাখিটির শুশ্রুষা করছেন তিনি। শেওড়াফুলির সুকান্তপল্লি এলাকার ঘটনা। তবে এটা কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। ঘুড়ি ওড়ানোর ধারালো সুতোয় বারবারই বিপন্ন হচ্ছে উড়ন্ত পাখপাখালির প্রাণ। এই ঘটনা তারই এক সংযোজন। বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ পাখিপ্রেমীরা।
স্থানীয় সূত্রের খবর, সোমবার বিকালে সুকান্তপল্লিতে একটি পুকুর পাড়ে চিলটি আহত অবস্থায় পড়েছিল। পাখিটিকে দেখে স্থানীয় বাসিন্দা অঞ্জন ভট্টাচার্য কাছে গেলে সেটি ওড়ার চেষ্টা করে। কিন্তু উড়তে না পেরে পুকুরে পড়ে ছটফট করতে থাকে। অঞ্জন সেটিকে জল থেকে তুলে বাড়িতে নিয়ে যান। দেখা যায়, ডানায় এবং লেজে সুতো জড়িয়ে রয়েছে৷ পেশায় সরকারি বাস কন্ডাক্টর অঞ্জন বলেন, ‘‘এত বাজেভাবে সুতো জড়িয়েছে যে, ডানা ভেঙে গিয়েছে বলে মনে হচ্ছে। বোঝাই যাচ্ছে উড়ন্ত অবস্থায় সে ঘায়েল হয়েছে। এখন ওড়ার ক্ষমতাই নেই। চিনা সুতোয় সর্বনাশটা হয়েছে। পাখিটাকে দেখে মায়া হচ্ছিল।’’
বিষয়টি নিয়ে অঞ্জন বন দফতরে যোগাযোগ করেন। তিনি জানান, বন দফতরের পরামর্শ অনুযায়ী পাখিটার চিকিৎসা করছেন। মাংসের টুকরো খেতে দিচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘‘বন দফতর থেকে বলা হয়, লকডাউনের জন্য গাড়ি বন্ধ থাকায় পাখিটিকে নিয়ে যাওয়া অসুবিধা। তবে আমি শুশ্রুষা করতেই পারি। পাখিটার বেশি সমস্যা হলে ফের তাঁদের জানাতে বলা হয়েছে। আমি পাখিটাকে সুস্থ করে আকাশে ছেড়ে দিতে চাই।’’ তাঁর ক্ষোভ, ‘‘যতটুকু জানি, চিনা সুতো বিক্রি নিষিদ্ধ। তা সত্বেও বাজারে এই ধরনের মারাত্মক সুতো কী ভাবে বিক্রি হয়! পুলিশকেও বিষয়টি জানিয়েছি।’’
সিন্থেটিকের তৈরি এই সুতো বিক্রি অবিলম্বে বন্ধের দাবি জানিয়েছেন পক্ষিপ্রেমীরা। বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ নিয়ে কাজ করা শিমূলতলা কনজ়ার্ভেশনিস্ট নামে একটি সংগঠনের সদস্য, পক্ষিপ্রেমী বিশাল সাঁতরা বলেন, ‘‘চিনা সুতো পাখিদের জন্য সাক্ষাৎ মৃত্যু। যাঁরা এই ধরনের সুতো দিয়ে ঘুড়ি ওড়ান, তাঁদের দায়িত্বজ্ঞানহীনতার জন্য পাখিদের প্রাণ যায়। এটা অবিলম্বে বন্ধ হওয়া দরকার। এই বিষয়ে প্রশাসনের পদক্ষেপ করা উচিত।’’