আরামবাগ-তারকেশ্বর রোডে এ ভাবেই মণ্ডপ তৈরি চলছে। —নিজস্ব চিত্র।
গত বছর পূর্ত দফতরে মুচলেকা দিয়ে কোনও মতে পুজোর অনুমোদন মিলেছিল। অথচ, এ বারও আরামবাগ-তারকেশ্বর রোডের একাংশ দখল করে পুজোর আয়োজন করছে আরামবাগের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের দুয়ের পল্লি। যা পুর প্রশাসকের পাড়া। মিলেছে অনুমোদনও। তফাত একটাই, গতবার মণ্ডপ হয়েছিল পিচ রাস্তার একাংশ দখল করে। এ বার মণ্ডপ হচ্ছে পিচ রাস্তার গা ঘেঁষে।
গৌরহাটি মোড়ের কাছে যেখানে মণ্ডপ হচ্ছে, রাজ্য সড়কের ওই এলাকাটি সরকারি ভাবেই দুর্ঘটনাপ্রবণ (ব্ল্যাক স্পট) হিসেবে চিহ্নিত। রাস্তাটি আশপাশের জেলাগুলির মধ্যে সংযোগ ঘটিয়েছে। এখানে পুজোর অনুমতি মিলল কী করে?
পুজো কমিটির সম্পাদক সুবীর দে বলেন, “এ বার পিচরাস্তা ছেড়ে মণ্ডপ করা সত্ত্বেও মহকুমা পূর্ত দফতর থেকে অনুমোদন পাচ্ছিলাম না। ৪৩ বছরের পুজোটা যাতে বন্ধ না হয়, সে কথা জানিয়ে জেলা পূর্ত দফতরের এগ্জিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ারের কাছে আবেদন করি। তিনি অনুমোদন দিয়েছেন।”
পূর্ত দফতরের জেলা এগ্জিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার নিমাইচন্দ্র পাল বলেন, “দীর্ঘদিনের পুজোটা বন্ধ করা যায়নি। শর্তসাপেক্ষে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।”
নিমাইবাবুর দেওয়া ছ’দফা শর্তের প্রথমেই রয়েছে পিচরাস্তার তফাতে মণ্ডপ করতে হবে। কিন্তু মণ্ডপ আর পিচরাস্তার মধ্যে একচুলও ব্যবধান নেই বলে অনেকের অভিযোগ। মহকুমা পূর্ত দফতরের আধিকারিকদের একাংশ মনে করছেন, এ বারও পুজোর সময় ওই মণ্ডপের জন্য যানজট হবে। যদিও নিমাইবাবুর দেওয়া শর্তে যানজট না-হওয়ার কথা রয়েছে। তা ছাড়া, দুর্ঘটনার আশঙ্কাও করছেন অনেকে।
আগে মহকুমা পূর্ত দফতরের সহকারী বাস্তুকার নিরঞ্জন ভড় জানিয়েছিলেন, প্রথমে মণ্ডপটি সরেজমিনে তদন্তের পর তাঁদের পক্ষ থেকে পুজোর অনুমোদন দেওয়া হয়নি। মহকুমাশাসক (আরামবাগ) নৃপেন্দ্র সিংহ জানিয়েছিলেন, রাস্তা দখল করে মণ্ডপ করা যাবে না। পুজো কমিটিকে বলা হয়েছে, পূর্ত দফতরের ‘নো অবজেকশন সার্টিফিকেট (এনওসি) নিতে হবে। এরপরেই পুজো কমিটি নিমাইবাবুর দ্বারস্থ হয়। ১৬ অক্টোবর অনুমোদন মেলে।
পুর প্রশাসক স্বপন নন্দী বলেন, “গত বছর মণ্ডপ ছিল পিচের উপর। এ বার পিচরাস্তা সম্পূর্ণ ছেড়ে মণ্ডপ করা হয়েছে। প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তদন্ত করেই অনুমোদন দিয়েছেন।”