দূষিত: দুধপুকুরের অবস্থা এখন এমনই। নিজস্ব চিত্র
পরিকল্পনা ছিল, পঞ্জাবের স্বর্ণমন্দিরের ধাঁচে তারকেশ্বরের দুধপুকুরের দূষণ নিয়ন্ত্রণে প্রকল্প তৈরি করবে তারকেশ্বর উন্নয়ন পর্ষদ (টিডিএ)। এ বিষয়ে মন্দির কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনাও হয়। কিন্তু প্রকল্পের কাজে হাত দিতে গিয়েই ধাক্কা খেল টিডিএ। কারণ মন্দিরের মোহন্ত মহারাজ সুরেশ্বর আশ্রম সাফ জানিয়েছেন, এই প্রকল্পে তাঁর অনুমোদন নেই।
মোহন্ত মহারাজের কথায়, ‘‘ওঁরা আলোচনা করেছেন, ঠিক আছে। কিন্তু দুধপুকুরের ভালমন্দের বিষয়টি মন্দির কর্তৃপক্ষ ফের খতিয়ে দেখবে। অথচ ওঁরা কারও সঙ্গে আলোচনা না করেই প্রকল্পের কথা ঘোষণা করে দিলেন। এটা ঠিক নয়।’’
দুধ পুকুরের অপরিষ্কার জল নিয়ে বহুবার অভিযোগ উঠেছে। বাম আমলে ওই পুকুরের জলকে দূষণমুক্ত রাখতে পিএইচই (পাবলিক হেল্থ ইঞ্জিনিয়ারিং) একটি প্রকল্প তৈরি করে। তাতে মূর্তির উপর ঢালা জল সরাসরি পুকুরে যেত না। ওই প্রকল্পের মাধ্যমে জলকে পরিস্রুত করে ফেলা হত পুকুরে। কিন্তু যন্ত্রের সমস্যার জন্য সেই প্রকল্প বন্ধ রয়েছে বেশ কয়েক বছর ধরে।
টিডিএ গঠনের পর ফের শুরু হয় দুধপুকুর সংস্কারের পরিকল্পনা। টিডিএ-র এক কর্তা জানান, পরিকল্পনা ছিল স্বর্ণমন্দিরের ধাঁচে ওই পুকুরেই বসানো হবে একটি যন্ত্র। সেটাই অহরহ পরিস্রুত করবে জল। এমনকী এই নিয়ে তারকেশ্বর মন্দির কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার পর সবুজ সঙ্কেত মেলে বলেও দাবি ওই কর্তার। কিন্তু তারপর মহন্ত মহারাজ এ বিষয়ে নারাজ হওয়ায় এই প্রকল্প গিয়েছে থমকে।
২০১৭ সালে তারকেশ্বরে প্রশাসনিক বৈঠকে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টিডিএর কথা ঘোষণা করেন। তারকেশ্বর ডেভলপমেন্ট অথরিটির জন্য পাঁচ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়। রাজ্যের পূর্ত মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে মাথায় রেখে প্রশাসনিক স্তরে কমিটি তৈরি হয়। কিন্তু কাজের ক্ষেত্রে বারবারই মন্দির কর্তৃপক্ষের সঙ্গে টিডিএ-র সমন্বয়ে ফাঁক থেকে যাচ্ছে বলে অভিযোগ।
এই বিষয়ে জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘কোথাও একটা সমন্বয়ের সমস্যা হচ্ছে। মন্দির কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা মেটানো হবে।’’