পিরপুরে জল প্রকল্প। — নিজস্ব চিত্র
বাড়ি বাড়ি পরিস্রুত পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার জন্য প্রকল্প হাতে নিয়েছে জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতর। পাইপ পাতার কাজ শেষ হলেও এখনও চালু হয়নি প্রকল্প। অভিযোগ, রাতের আঁধারে পাইপ ফুটো করে জলের সংযোগ দেওয়া হয়েছে বহু বাড়িতে। জলের এই অবৈধ কারবার চলছে উলুবেড়িয়া ২ ব্লকের বাণীবন পঞ্চায়েতের উত্তর পিরপুর গ্রামে। অভিযোগ, এই চক্রের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে অসাধু কিছু ঠিকাদার। তারা মোটা টাকায় বিনিময়ে বাড়ি-বাড়ি জলের সংযোগ দিচ্ছে।
জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতর সূত্রে খবর, ওই জল সরবরাহ প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০১৯ সালে। রাস্তায় পাইপ বসে। পাইপ লাইন দিয়ে জল ঠিকমতো আসছে কিনা, তা দেখতে রাস্তায় কিছু ‘স্ট্যান্ড পোস্ট’ তৈরি করা হয়েছে। অভিযোগ, কিছু অসাধু ঠিকাদার পাইপ ফুটো করে জলের সংযোগ দিচ্ছে বাড়ি বাড়ি। বিজেপি পরিচালিত ওই পঞ্চায়েতের সদস্যদের একাংশের মদতে এই কাজ হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বেশ কয়েক জন গ্রামবাসী। পঞ্চায়েত প্রধান মিঠু অধিকারী অবশ্য এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি। তাঁর স্বামী স্থানীয় বিজেপি নেতা রমেন অধিকারী বলেন, ‘‘এই বিষয়ে কিছু জানা নেই।’’
স্থানীয় সূত্রে খবর, পাইপ ফুটো করে জলের সংযোগ নেওয়ার সময় সম্প্রতি হাতেনাতে ধরা পড়ে এক ঠিকাদার। পরে পুলিশের কাছে মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পায় সে। জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের সহকারী বাস্তুকার পার্থসারথি হালদার বলেন, ‘‘অবৈধ ভাবে জলের সংযোগ দেওয়া হচ্ছে বলে বেশ কয়েকটি অভিযোগ পেয়েছি। পদক্ষেপ করার জন্য পঞ্চায়েত এবং পুলিশকে জানানো হয়েছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘বিনা শুল্কে বাড়ি বাড়ি জল পৌঁছে দেওয়াই জল প্রকল্পের উদ্দেশ্য। সেই মতো কাজ চলছে। কিন্তু বেশ কয়েক জন অসাধু ঠিকাদার মানুষের থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে জলের সংযোগ দিচ্ছে।’’ ওই আধিকারিক জানান, অবৈধ জলের সংযোগগুলি ছিন্ন করা হবে।
ওই পঞ্চয়েত এলাকার বিজেপি নেতা শঙ্কর চক্রবর্তী বলেন, ‘‘মানুষ জলের জন্য হাহাকার করছে। প্রকল্পের কাজ শেষ হয়ে গেলেও বাড়ি বাড়ি জল পৌঁছে দিচ্ছে না জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতর। একাধিক বার দফতরকে জানিয়েও লাভ হয়নি। পঞ্চায়েতকে প্রকল্প হস্তান্তর করেনি জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতর।’’ তবে বেআইনি ভাবে জলের সংযোগ নেওয়ার অভিযোগ সত্য বলে জানান ওই বিজেপি নেতা। তাঁর সংযোজন: ‘‘প্রকল্প চালু হলে নিয়ম মেনে জল নেওয়ার জন্য আমরা পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে মানুষের কাছে অনুরোধ করব।’’ জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, বাড়িবাড়ি জল পৌঁছনোর কাজ তারাই করবে। পঞ্চায়েতকে উপভোক্তাদের থেকে আবেদন পত্র জমা নিতে বলা হয়েছে। পঞ্চায়েত সব উপভোক্তার নাম জানালে জল সরবরাহ শুরু হবে।