এই প্রবল গরমে পরিস্রুত পানীয় জলের তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে। আট মাস ধরে হাসপাতাল ভবন সংস্কার হচ্ছে। ফলে, বিভিন্ন জায়গায় বসানো ট্যাপকলগুলি বন্ধ। নেই কোনও নলকূপ। ফলে, ক্ষোভ বাড়ছে রোগী ও তাঁদের আত্মীয়-স্বজনের। অনেকেই জল কিনতে বাধ্য হন। কেউ বা ব্লক অফিস চত্বরের নলকূপ থেকে বোতলে জল সংগ্রহ করে আনছেন। সমস্যার দ্রুত সমাধানের দাবি তুলেছেন তাঁরা।
জলকষ্টের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন হাসপাতালের সুপার শান্তনু নন্দী। তিনি বলেন, ‘‘বিভিন্ন ওয়ার্ডের জল পরিস্রুত করার যন্ত্রগুলির সব ক’টি প্রায় অকেজো হয়ে গিয়েছে। যে সব ট্যাপকল খারাপ বা ভবন সংস্কারের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে, সেগুলি দ্রুত মেরামত এবং খোলার সিদ্ধান্ত হয়েছে। হাসপাতাল চত্বরে একটি নলকূপ বসানো জন্য পুরসভার কাছে সুপারিশ করেছি।’’
বহির্বিভাগ এবং অন্তর্বিভাগ মিলিয়ে এই হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে হাজারেরও বেশি রোগী এবং তাঁদের আত্মীয়-স্বজনের ভিড় হয়। মহকুমার শুধু ছ’টি ব্লকের রোগীরাই নন, মহকুমার আশপাশের এলাকা এবং বর্ধমান, বাঁকুড়া, দুই মেদিনীপুর এবং হাওড়া জেলারও বহু রোগী এই হাসপাতালের উপরে নির্ভরশীল। কিন্তু গত আট মাস ধরে এখানে পরিস্রুত পানীয় জলের ব্যবস্থা বলতে হাসপাতালে মূল ভবন থেকে অন্তত দু’শো মিটার দূরে পাম্পঘরের দেওয়ালে লাগানো ট্যাপকল। তা-ও পাম্প চালানোর সময়েই সেই গভীর নলকূপের জল মেলে। অন্য সময়ে জলের জন্য হা-পিত্যেশ করতে হয় রোগীর আত্মীয়দের। অথচ, হাসপাতালে জল সরবরাহের প্রাথমিক পরিকাঠামোর কোনও অভাব নেই। দু’টি গভীর নলকূপের সঙ্গে দু’টি পাম্প আছে। হাসপাতাল ভবনের ছাদগুলিতে দু’হাজার লিটার থেকে ২০ হাজার লিটার ধারণ ক্ষমতার মোট ৩৯টি জলাধার আছে। দিনের চার বার তিন ঘণ্টা করে পাম্পও চালানো হয়। কিন্তু অধিকাংশ ট্যাপকল বন্ধ থাকায় সেই জল সরবরাহের রাস্তা নেই। শুধু কিছু ওয়ার্ডের ট্যাপকলে জল পড়ছে।
খানাকুলের ঘোষপুর থেকে ওই হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে আসা মনোজ রায় জলাভাবের কারণে ক্ষুব্ধ। তাঁর অভিযোগ, ‘‘পরিস্রুত পানীয় জলের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ উদাসীন। বাড়ির লোক থাকলে সে বাইরে থেকে জল এনে দেয়, নইলে ওয়ার্ডের ট্যাপের জলই ভরসা।’’