টোটন বিশ্বাস
ছোট আগ্নেয়াস্ত্র তো প্রচুর রয়েছেই। কিন্তু কার্বাইনও!
শনিবার রাতে অস্ত্রশস্ত্র-সহ চুঁচুড়ার রবীন্দ্রনগরের ‘ত্রাস’ টোটন বিশ্বাসকে গ্রেফতার করার পরে ওই কার্বাইন দেখে তাজ্জব হয়ে গিয়েছেন চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের কর্তারা। কী কাজের জন্য টোটন কার্বাইন আমদানি করেছিল, তা নিয়ে শুরু হয়ে যায় জল্পনা। পুলিশকর্তারা নিজেদের কার্বাইনের সঙ্গে টোটনের কার্বাইন মিলিয়েও দেখেন।
চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের কর্তাদের দাবি, শনিবার রাতে টোটনের নেতৃত্বে বেশ কিছু দুষ্কৃতী চুঁচুড়া ধান্য গবেষণা কেন্দ্রে জড়ো হয়েছিল কোনও অপরাধ সংঘটিত করার লক্ষ্যে। চুঁচুড়া থানার আইসি প্রদীপ দাঁ সূত্র মারফত সেই খবর পান। তার পরেই ডিসি (চন্দননগর) কে কান্নান, এসিপি (১) যশপ্রীত সিংহ, এসিপি (ডিডি) গোলাম সারওয়ার বাহিনী নিয়ে সেখানে হানা দেন। টোটোনের সঙ্গে তার দুই শাগরেদ প্রবীর মণ্ডল এবং কিশোর বিশ্বাস ওরফে লেবুও ধরা পড়ে। বাকিরা পালায়।
পুলিশ কমিশনার হুমায়ুন কবীর জানান, ধৃত তিন জনেরই বাড়ি রবীন্দ্রনগরে। তাদের থেকে একটি দেশি কার্বাইন, পাঁচটি নাইন এমএম এবং চারটি সেভেন এমএম পিস্তল ও দু’টি ওয়ান শটার উদ্ধার হয়। একই সঙ্গে নাইন এমএম-এর ১৮টি, সেভেন এমএম-এর ১৪টি, ওয়ান শটারের ৪টি অর্থাৎ মোট ৩৬ রাউন্ড গুলি উদ্ধার হয়। ধৃতদের রবিবার চুঁচুড়া আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক তাদের সাত দিন পুলিশ হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
গত ১৩ জুলাই রাতে টোটন-সহ দুই দুষ্কৃতীকে ধরতে রবীন্দ্রনগরে টোটোনের ডেরায় অভিযান চালাতে গিয়েছিল পুলিশ। কিন্তু দুষ্কৃতীদের বাধায় পুলিশকে পিছু হঠতে হয়। পুলিশকে লক্ষ করে দুষ্কৃতীরা গুলি ছোড়ে। সেই সুযোগে টোটোন-সহ বেশ কয়েক জন সমাজবিরোধী সেখান থেকে পালায়। রবিবার ধৃতদের নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করেন পুলিশ কমিশনার। তিনি বলেন, ‘‘মাস দেড়েক আগে ওই রাতে পুলিশকে লক্ষ করে ৩০-৪০ রাউন্ড গুলি ছোড়ে দুষ্কৃতীরা। আমরা দেখি, টোটন খুব বড় ডন হয়েছে। বিষয়টি পুলিশ চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেয়। সেই থেকেই ওকে খোঁজা হচ্ছিল। ওর যে শাগরেদরা সাগরেদরা পালিয়েছে, তাদেরও শীঘ্রই গ্রেফতার করা হবে।’’ তিনি জানান, টোটনের শাগরেদ ১৭-১৮ জন দুষ্কৃতীর নাম পুলিশ পেয়েছে। তারা সকলেই আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে।
পুলিশ সূত্রের খবর, ডাকাতির চেষ্টা এবং অস্ত্র আইনে ধৃতদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে, ১৩ জুলাই রাতে পুলিশের উপরে গুলি চালানোর অভিযোগ তাতে নেই। কমিশনারেটের তদন্তকারী অফিসারদের অবশ্য দাবি, আপাতত একটি মামলায় অভিযুক্ত করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। পুলিশের উপরে হামলা-সহ আরও অন্তত সাতটি মামলায় টোটনকে যুক্ত করা হবে। পুলিশ কমিশনারের কথায়, ‘‘ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। টোটোনের আস্তানায় পুলিশ তদন্তে যাবে। যদি দেখা যায় সে মাদক চোরাচালান বা অন্য অসামাজিক কাজে যুক্ত, সে ক্ষেত্রে ওই সব ব্যাপারেও মামলা হবে।’’