দেখা গেল এ রকমই ব্যানার।
আর ‘পরিযায়ী’ নয়, এ বার ‘ভূমিপুত্র’-এর দাবি উঠল ডোমজুড়ে।
দু’দিন ধরে এমনই ব্যানার-ফ্লেক্সে ছেয়ে গিয়েছে ডোমজুড় বিধানসভা এলাকা। মুখমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি দেওয়া ওই সব ব্যানার-ফ্লেক্সে লেখা— ‘আর নয় পরিযায়ী, এ বার ভূমিপুত্র চাই’। কোথাও আবার ওই বাক্যের আগে ‘সুটে-বুটে’ শব্দও ব্যবহার করা হয়েছে। নীচে ‘সৌজন্যে’ লেখা হয়েছে ডোমজুড় কেন্দ্র তৃণমূল কংগ্রেসের নাম।
সাধারণ মানুষ ধরেই নিচ্ছেন, এ বার বিধানসভা ভোটে ডোমজুড়ের মানুষকেই প্রার্থী করার দাবি তুলছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। কারণ, বর্তমান বিধায়ক তথা বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ডোমজুড়ের বাসিন্দা নন। তাঁর আদি বাড়ি হাওড়া শহরে। বর্তমানে তিনি কলকাতায় থাকেন।
সম্প্রতি রাজীব দল পরিচালনা নিয়ে একাধিক অনুষ্ঠানে ‘বেসুরো’ গাইতে থাকেন। যা নিয়ে দলের অন্দরে বিতর্কও তৈরি হয়। রাজীবের ক্ষোভ প্রশমনে দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় উদ্যোগী হন। দু’জনের দু’দফা বৈঠকও হয়। তার মধ্যেই কয়েকদিন আগে ‘আমরা দাদার অনুগামী’ বলে ডোমজুড়, পাঁচলা প্রভৃতি এলাকায় রাজীবের সমর্থনে পোস্টার পড়ে। এ বার ‘ভূমিপুত্রের’ দাবিতে ব্যানার-ফ্লেক্স টাঙিয়ে দলে রাজীবের বিরুদ্ধ গোষ্ঠী পাল্টা মাঠে নামল বলে মনে করছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের একটা বড় অংশ। তৃণমূলের নিচুতলার কর্মীদের একাংশও মানছেন, দলের অন্দরে এমন দাবি উঠছে।
কিন্তু তৃণমূল শাসিত ডোমজুড় পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সুবীর চট্টোপাধ্যায় এ কথা মানেননি। ওই ব্যানার-ফ্লেক্সও তাঁরা টাঙাননি বলে দাবি করেছেন ওই তৃণমূল নেতা। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা ডোমজুড়ের তৃণমূল কর্মীরা একটা কথাই বলতে চাই। আমরা দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুগামী। এর বাইরে আমাদের কোনও নেতা নেই। বিধানসভা নির্বাচনে দলনেত্রী যাঁকে প্রার্থী করবেন, আমরা তাঁকে জেতানোর জন্যই ঝাঁপাব।’’
তাঁর পক্ষে বা বিপক্ষে পড়া ফ্লেক্স-ব্যানার নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি রাজীব। তিনি বলেন, ‘‘আমার পক্ষে যখন ব্যানার-ফ্লেক্স পড়েছে, তখন কোনও মন্তব্য করিনি। বিপক্ষে মারা ব্যানার নিয়েও কোনও মন্তব্য করব না। কারা এইসব পোস্টার মেরেছে, তা-ও বলতে পারব না।’’
মঙ্গলবার ডোমজুড় ব্লক যুব তৃণমূলের উদ্যোগ বিশাল বাইক-মিছিল হয়। মিছিলের উদ্দেশ্য ছিল কেন্দ্রীয় কৃষি আইনের বিরোধিতা করা। কিন্তু মিছিল থেকে সারাক্ষণ মমতার জয়গান করেই স্লোগান দেওয়া হয়। উদ্যোক্তাদের মধ্যে ছিলেন সুবীর চট্টোপাধ্যায়, সৌরভ চট্টোপাধ্যায়ের মতো নেতারা।