স্তব্ধ: বাউড়িয়া লেভেল ক্রসিংয়ের সামনে যানজট।
রেল ও রাজ্য সরকার যৌথ ভাবে হাওড়ার বাউড়িয়ায় রেল উড়ালপুলের নকশা চূড়ান্ত করেছে। খরচের হিসাবও তৈরি। তা অনুমোদনের জন্য রেলের তরফে পাঠানো হয়েছে রাজ্য সরকারের কাছে। রাজ্য সরকার সবুজ সঙ্কেত দিলেই কাজ শুরু হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় ঘোষ।
নিয়ম মেনেই বাউড়িয়া লেভেল ক্রসিংয়ে ওই উড়ালপুলটি তৈরি হবে রেল ও রাজ্য সরকারের যৌথ উদ্যোগে। রেলের অংশের কাজ করবে রেল। আর অ্যাপ্রোচ রোড-সহ বাকি অংশ করবে রাজ্য সরকার। এর জন্য খরচ ধরা হয়েছে ৮০ কোটি টাকা। রেলের খরচ হবে ৪০ কোটি টাকা। বাকি টাকা খরচ করবে রাজ্য সরকার। রাজ্য পূর্ত (সড়ক) দফতরের এক আধিকারিক জানান, রেলের প্রস্তাব খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যথাসময়ে রেলকে মতামত জানিয়ে দেওয়া হবে। উলুবেড়িয়ার সাংসদ সাজদা আহমেদ বলেন, ‘‘প্রাথমিক কাজ অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে। আশা করা যায় এ বার আসল কাজ শুরু হয়ে যাবে।’’ উলুবেড়িয়া দক্ষিণের বিধায়ক পুলক রায় বলেন, ‘‘পূর্ত (সড়ক) দফতর যাতে দ্রুত তাদের সিদ্ধান্তের কথা রেলকে জানায়, সে জন্য তদ্বির করছি।’’
দক্ষিণ-পূর্ব রেলের হাওড়া খড়্গপুর শাখার বাউড়িয়া স্টেশনে লেভেল ক্রসিংয়ের দাবি বহুদিনের। বাউড়িয়া ফেরিঘাট থেকে বহু মানুষ কলকাতায় যাতায়াত করেন। কিন্তু লেভেল ক্রসিংয়ের গেট বন্ধ থাকায় তাঁরা সময়ে লঞ্চ ধরতে পারেন না। আইনশৃঙ্খলার অবনতি হলে ওই লেভেল ক্রসিংয়ের জন্যই বাউড়িয়া থেকে পুলিশ ঠিক সময়ে ঘটনাস্থলে বা শহরেও ঢুকতে পারে না। শহরের বিভিন্ন কারখানারর পণ্যবাহী ট্রাকও বহুক্ষণ ধরে দাঁড়িয়ে থাকে লেভেল ক্রসিংয়ে। বাউড়িয়া স্টেট জেনারেল হাসপাতাল থেকে ‘রেফার’ হওয়া রোগীর গাড়িকেও লেভেল ক্রসিংয়ে থমকাতে হয়। সেখানে যানজট হলে দাঁড়িয়ে যায় ট্রেনও। ফলে, ব্যাহত হয় ট্রেন চলাচল।
এই সমস্যা দূর করতেই বছর দুয়েক আগে উড়ালপুলটি তৈরির জন্য রেল এবং রাজ্য সরকার চিন্তাভাবনা শুরু করে। হাওড়া-খড়্গপুর শাখায় বহু লোকাল এবং দূরপাল্লার ট্রেন চলে। ট্রেনের ‘লেট’ হওয়াও নিত্যদিনের সমস্যা। এ জন্য ওই লেভেল ক্রসিংকেই অনেক সময় দায়ী করেন রেল কর্তৃপক্ষ।
ইতিমধ্যেই চালু হয়ে গিয়েছে বাগনান রেলওয়ে উড়ালপুল। উলুবেড়িয়া উড়ালপুলের কাজও শেষের পথে। বাউড়িয়া উড়ালপুলটি হয়ে গেলে ট্রেনের গতি বাড়বে এবং ‘লেট’ হওয়া এড়ানো যাবে বলে মনে করেন রেলকর্তারা।