প্রতীকী চিত্র
শ্বশুরবাড়িতে ‘নির্যাতনের’ জন্য তিনি বাপের বাড়িতে থাকেন। স্বামীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিল। শুক্রবার রাতে অস্বাভাবিক মৃত্যু হয় স্বামীর। কিন্তু স্বামীকে শেষ দেখা দেখতে না দিয়ে ছেলে-সহ তাঁকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়, শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ তুলে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন ভদ্রেশ্বরের বাবুবাজারের এক মহিলা। শনিবার সকালে পুলিশের কাছে বধূ নির্যাতনের অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত শুরু হয়েছে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, প্রিয়া পাল নামে ওই মহিলার বাপের বাড়ি ভদ্রেশ্বরের বাবুবাজারে। বছর পাঁচেক আগে তাঁর সঙ্গে চন্দননগরের খলিসানির ব্রাহ্মণপাড়ার বাসিন্দা দেবাশিস পালের বিয়ে হয়। দম্পতির সাড়ে তিন বছরের একটি ছেলে আছে। প্রিয়ার অভিযোগ, নানা কারণে শ্বশুরবাড়ির লোকেরা তাঁর উপরে নির্যাতন চালাতেন। সন্তান হওয়ার পরে অত্যাচারের মাত্রা বাড়ে। সংসার করার তাগিদে প্রথমে বুজে থাকলেও বছর তিনেক আগে ছেলেকে নিয়ে বাপের বাড়িতে চলে আসেন তিনি।
শুক্রবার রাতে বছর পঁয়ত্রিশের দেবাশিসের ঝুলন্ত দেহ মেলে তাঁর ঘর থেকে। রাতে দেহটি ভদ্রেশ্বর থানায় (খলিসানি এলাকাটি ওই থানার অন্তর্গত) রাখা হয়। খবর পেয়ে সকালে প্রিয়া ছেলেকে নিয়ে প্রথমে শ্বশুরবাড়িতে, তারপরে থানায় আসেন। তাঁর অভিযোগ, শ্বশুরবাড়ির লোকেরা দেবাশিসের দেহ তাঁদের দেখতে দেননি। উল্টে বিদ্রুপ করেন। তাঁর বাপের বাড়ির লোকজনকেও অপমান করা হয়। বাধ্য হয়ে সেখান থেকে তাঁরা চলে যান। প্রিয়া বলেন, ‘‘ওদের অনেক অত্যাচার মুখ বুজে সহ্য করেছি। কিন্তু স্বামীকে শেষ দেখাও দেখতে দিল না। এইটুকু ছেলেকেও ফিরিয়ে দিল। বিচার পেতেই পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছি।’’চন্দননগর কমিশনারেটের এক কর্তা জানান, বধূর অভিযোগের ভিত্তিতে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। অবসাদের জেরে দেবাশিস আত্মঘাতী হয়ে থাকতে পারেন বলে পুলিশ মনে করছে। একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করা হয়েছে। শনিবার দেহের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে।প্রিয়ার বাপের বাড়ির লোকজনের দাবি, স্ত্রী-ছেলেকে কাছে না পেয়ে দেবাশিস মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। তিনি স্ত্রী-ছেলেকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে চাইলেও তাঁর পরিবারের অন্যেরা রাজি হননি। লকডাউনের সময় প্রিয়া শ্বশুরবাড়িতে গেলেও ননদ, শাশুড়ি এবং জায়ের অত্যাচারে ফিরে আসেন বলে তাঁদের অভিযোগ। দেবাশিসের পরিবারের লোকেরা কোনও মন্তব্য করেননি।