ছবি: সংগৃহীত
জগদ্ধাত্রী ঠাকুর দেখতে লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হয় চন্দননগরে। কিন্তু বিপুল সংখ্যক মানুষের জন্য পর্যাপ্ত শৌচাগারের ব্যবস্থা থাকে না বলে অভিযোগ। এই অবস্থায় এখানে যথেষ্ট সংখ্যক জৈব শৌচাগার বসানোর দাবি উঠছে। সংশ্লিষ্ট পুরসভাগুলির আশ্বাস, সেই চেষ্টা চলছে।
মাহেশের রথের মেলা থেকে তারকেশ্বরের শ্রাবণী মেলা, বিভিন্ন এলাকায় দুর্গাপুজো, পান্ডুয়ার কালীপুজো, চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পুজো-সহ নানা উৎসবে মানুষের ঢল নামে। সব জায়গাতেই শৌচাগারের অভাবে সমস্যায় পড়েন সাধারণ মানুষ। যত্রতত্র মলমূত্র ত্যাগের ফলে রাস্তাঘাট নোংরা হয়। দূষিত হয় পরিবেশ। জগদ্ধাত্রী পুজোয় চন্দননগরে বিভিন্ন পুজো কমিটির তরফে অস্থায়ী শৌচাগারের ব্যবস্থা করা করা হয়। পুরসভার তরফেও ব্যবস্থা থাকে। কিন্তু তা যে পর্যাপ্ত এবং স্বাস্থ্যসম্মত নয়, তা মানছেন সকলেই।
কেন্দ্রীয় জগদ্ধাত্রী পুজো কমিটির তরফে চন্দননগর পুরসভার কাছে দাবি জানানো হয়েছে, যাতে পর্যাপ্ত ভ্রাম্যমান জৈব শৌচাগার বসানো হয়। কমিটির কার্যকরী সভাপতি তথা খলিসানি জগদ্ধাত্রী পূজা সমিতির সম্পাদক নিমাইচন্দ্র দাস বলেন, ‘‘অনেক বারোয়ারি কমিটি অস্থায়ী শৌচাগারের ব্যবস্থা করে। তবে আরও কিছু থাকলে ভাল হয়। জৈব শৌচাগার হলে খুবই ভাল।’’
একটি নাগরিক সংগঠনের কর্তা শৈলেন পর্বতের ক্ষোভ, ‘‘ঐতিহ্যের শহর চন্দননগরে মান্ধাতা আমলের ভাবনাচিন্তা বেমানান। বহু মানুষ ডায়াবেটিসে ভোগেন। তাঁদের কথা, মহিলাদের কথা কে ভাববে?’’ অনেকেই বলছেন, রিষড়া পুরসভা গত বছর প্রায় ৭০টি জৈব শৌচাগার কিনেছেন। তাতে ওই শহরে সমস্যা মিটেছে। চন্দননগর, ভদ্রেশ্বরেও সেই ব্যবস্থা করা উচিত। এখানকার বাসিন্দাদের অনেকেই জানান, বিপাকে পড়ে মহিলাদের আশপাশের বাড়িতে কড়া নাড়তে হয়। শ্রীরামপুর হাউজিংয়ের বাসিন্দা কবিতা দে বলেন, ‘‘চন্দননগরে ঠাকুর দেখতে যাই। শৌচাগারের জন্য ভীষণ সমস্যা হয়। সবাই বাড়িতে ঢুকতে দিতে চান না। লজ্জায় পড়তে হয়। বাধ্যতামূলক ভাবে জৈব শৌচাগার বসানো হোক।’’
নতুনপাড়া সর্বজনীনের সভাপতি জয়দীপ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আমরা অস্থায়ী শৌচাগার তৈরি করি। এ বার একটা জৈব শোচাগার ভাড়া করার চেষ্টা করছি। পুরসভা আরও কয়েকটা বসালে ভাল হয়।’’ বাগবাজার চৌমাথা পুজো কমিটির সম্পাদক ভাস্কর দে সরকার বলেন, ‘‘পুলিশের যাঁরা ডিউটি করেন, তাঁরা আশপাশের বাড়িতে যান। দর্শনার্থীদের প্রয়োজনে ব্যবসায়ীদের একটি শৌচাগার অথবা বাড়িতে ব্যবস্থা করা হয়। জৈব শৌচাগার থাকলে সত্যিই ভাল হয়।’’
কী বলছেন পুর-কর্তৃপক্ষ?
চন্দননগরের পুর-কমিশনার স্বপন কুণ্ডুর দাবি, ‘‘জৈব শৌচাগার কেনার ব্যাপারে আমরা অনেকটা এগিয়েছি। স্থানীয় বিধায়ক তথা মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেনও উদ্যোগী হয়েছেন। এ বারই অবশ্য কেনা যাবে না। তবে, পর্যাপ্ত সংখ্যক জৈব শৌচাগার ভাড়া করার চেষ্টা চলছে।’’ ভদ্রেশ্বরে চারটি জৈব শৌচাগারযুক্ত একটি ভ্রাম্যমান গাড়ি আছে। পুজোর সময় জিটি রোডের ধারে সেটি রাখা থাকে। উপ-পুরপ্রধান প্রকাশ গোস্বামী বলেন, ‘‘এই ধরনের আরও শৌচাগার যাতে বসানো, সেই চেষ্টা করছি।’’