আজ টিডিএ-র প্রথম বৈঠক

স্বপন-উত্তমকে দায়িত্ব নয়, উঠছে দাবি

স্থানীয়দের অভিযোগ, স্বপন-উত্তমের আমলে তারকেশ্বরের তেমন কোনও উন্নতি হয়নি। ফলে, তাঁদের হাতে বাড়তি দায়িত্ব দেওয়া হলে কতটা কাজ হবে, সেই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। আশঙ্কার কথা জানিয়ে ইতিমধ্যেই এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চিঠিও দিয়েছেন।

Advertisement

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

তারকেশ্বর শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০১৭ ০২:৫০
Share:

সদ্যগঠিত তারকেশ্বর উন্নয়ন পর্ষদের (টিডিএ) প্রথম বৈঠক হচ্ছে আজ, শনিবার। আসবেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তারকেশ্বর মন্দির ও সংলগ্ন এলাকার উন্নয়নের দায়িত্বের জন্য পুরমন্ত্রীর কাছে পুর কর্তৃপক্ষ আবেদন জানাবেন বলে তৃণমূলের অন্দরের খবর। আর সেটাই ভাবাচ্ছে তারকেশ্বরের বাসিন্দাদের। কারণ, পুরপ্রধান স্বপন সামন্ত এবং উপ-পুরপ্রধান উত্তম কুণ্ডুর কাজিয়া।

Advertisement

স্থানীয়দের অভিযোগ, স্বপন-উত্তমের আমলে তারকেশ্বরের তেমন কোনও উন্নতি হয়নি। ফলে, তাঁদের হাতে বাড়তি দায়িত্ব দেওয়া হলে কতটা কাজ হবে, সেই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। আশঙ্কার কথা জানিয়ে ইতিমধ্যেই এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চিঠিও দিয়েছেন। তাঁদের অনুরোধ, দুই নেতার কাউকেই যেন টিডিএ-তে না-রাখা হয়।

দুই নেতাকে টিডিএ-তে চান না পুর কর্তৃপক্ষের একাংশও। এক তৃণমূল কাউন্সিলরই বলছেন, ‘‘যে কোনও দুর্নীতিতে পুরসভার দুই মাথার নাম জড়ায়। পুরমন্ত্রী দলের বিচক্ষণ নেতা। ওঁদের ফাঁদে পড়লে টিডিএ-র উন্নয়ন থমকে যাবে। কাউন্সিলরদের অনেকেই যোগ্য। ওই দু’জনকে অব্যাহতি দিয়ে অন্যদের সুযোগ দেওয়া হোক।’’ এ নিয়ে অবশ্য স্বপন বা উত্তম কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

Advertisement

প্রায় এক দশক আগে তারকেশ্বর পুরসভায় ক্ষমতায় আসে তৃণমূল। এলাকাবাসীর অভিযোগ, স্বপন ও উত্তম গোষ্ঠীর কোন্দলে আইন বজায় রাখাই বড় বালাই। সম্প্রতি সালিশি ডেকে এক ব্যক্তির থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল স্বপন-অনুগামী মহারাজ নাগ নামে এক তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। পরে সেই ব্যক্তি আত্মঘাতী হন। মহারাজকে পুলিশ এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘দুই নেতার দলবল প্রশাসনকে সহযোগিতা করল না। মানুষ সব জানেন। ভরসা রাখবেন কোথা থেকে?’’

গত পুর নির্বাচনে তৃণমূলের টিকিট নিয়ে কোন্দল চরমে ওঠে তারকেশ্বরে। শাসকদলের রাজ্য নেতারা ঠিক করেন, উত্তমকে টিকিট দেবেন না। কিন্তু জেলার নেতারা রাজ্য নেতৃত্বকে জানান, উত্তমকে টিকিট না-দিলে পুরসভা চালানো কঠিন। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, তারপর এলাকার যা পরিস্থিতি সেটা জেলা ও রাজ্য নেতাদের হাতের বাইরে।

পুরসভা বাম আমলে (২০০২) ভাগাড় তৈরির জন্য একটি জমি কিনেছিল। অভিযোগ, পুরপ্রধান স্বপনের মধ্যস্থতায় ওই জমিটি প্লট করে সাত জনকে বিক্রি করে দেওয়া হয় কোনও বিভাগীয় অনুমতি ছাড়াই। আবার বাসস্ট্যান্ডে (১৪ নম্বর ওয়ার্ড) একটি বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে (পিপিপি) দশতলা একটি ভবন নির্মাণে উপপ্রধান উত্তমের স্ত্রীকে অংশীদার করা হয় বলেও অভিযোগ। শহরে কান পাতলেই দুই নেতার বিরুদ্ধে এমন বহু অভিযোগ শোনা যায়। পুরপ্রধান অভিযোগ মানেননি। তাঁর দাবি, ‘‘ওই ভাগাড়ের জমি কোনও কাজে লাগত না। তাই পুরবোর্ডের অনুমতিতে বিক্রি করা হয়েছে। তবে উপপ্রধানের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ, তার সারবত্তা আছে। ওঁর কথা ওঁর মুখ থেকে শোনাই ভাল।’’ উপ-পুরপ্রধান ‘ব্যস্ত আছি’ বলে ফোন কেটে দেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement