প্রতীকী ছবি
শ্রমিক, মালিক— দু’পক্ষই নিজেদের অবস্থানে অনড়। ফলে, শ্রীরামপুরের বাঙ্গিহাটিতে লোহার যন্ত্রাংশ তৈরির কারখানায় অচলাবস্থা কাটছে না। জট কাটাতে বুধবার শ্রীরামপুর শ্রম দফতরে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডাকা হয়েছিল। মালিকপক্ষ না আসায় বৈঠক বাতিল হয়ে যায়। এখনও অচল ডানকুনির বামুনারির রেলের ওয়াগন তৈরির কারখানা এবং রিষড়ার ওয়েলিংটন জুটমিল।
বাঙ্গিহাটির কারখানাটির সমস্যা সমাধানে আজ, বৃহস্পতিবার বৈঠক ডেকেছেন শ্রীরামপুরের মহকুমাশাসক সম্রাট চক্রবর্তী। কারখানা কর্তৃপক্ষের দাবি, গত ২০ মে আমপানে শেড এবং যন্ত্রপাতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেগুলি মেরামত না করে উৎপাদন চালানো যাবে না। ওই কাজের জন্য ২২ মে কারখানায় ‘সাসপেনশন অব অপারেশন’ ঘোষণা করা হয়।
শ্রমিকদের অভিযোগ, বেআইনি ভাবে ওই সিদ্ধান্তে শ্রমিকের পেটে লাথি পড়ছে। অবিলম্বে উৎপাদন চালুর দাবি জানান তাঁরা। লকডাউন-পর্বে এপ্রিল মাসে শ্রমিকরা দৈনিক চার ঘণ্টা হিসেবে বেতন পেয়েছেন। ৮ ঘণ্টার টাকা দাবি করেন তাঁরা। শ্রমিক সংগঠনগুলিও আন্দোলনে নামে। লকডাউনে প্রচুর লোকসান হওয়ায় দাবি মানতে অপারগ বলে কর্তৃপক্ষ জানান। তাঁদের অভিযোগ, শেড মেরামতের লোকজনকে শ্রমিকেরা ঢুকতে দিচ্ছেন না।
প্রশাসন সূত্রের খবর, গোটা ঘটনায় ক্ষুব্ধ মালিকপক্ষ জেলাশাসকের দফতরে লিখিত ভাবে বিষয়টি জানান। শ্রম দফতরে আলোচনা নিষ্ফলা হওয়ায় মহকুমাশাসক বৈঠক ডেকেছেন। মালিলকপক্ষ, শ্রমিক নেতাদের পাশাপাশি শ্রম দফতরের আধিকারিকও বৈঠকে থাকবেন।
শ্রম আধিকারিকরা মনে করছেন, শ্রমিকেরা বিপাকে পড়েছেন ঠিকই, কিন্তু শেড সারানোর লোক ঢুকতে না দিলে তাঁদের সঙ্কট বাড়বে।
শ্রীরামপুরের ডেপুটি শ্রম কমিশনার পার্থপ্রতিম চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ আলোচনার মাধ্যমেই সমস্যা মিটবে।’’
শ্রমিক অসন্তোষের কারণ দেখিয়ে গত ২৬ মে বামুনারির রেলের ওয়াগন তৈরির কারখানায় ‘সাসপেনশন অব ওয়ার্ক’ ঘোষণা করা হয়। বুধবার ওই কারখানা নিয়েও পার্থপ্রতিমবাবুর দফতরে বৈঠক ছিল। মালিকপক্ষ না আসায় বৈঠক বাতিল হয়। শ্রমকর্তারা জানান, আগামী সোমবার ফের বৈঠক ডাকা হয়েছে।
ওয়েলিংটন জুটমিলের পরিস্থিতিও তিমিরেই। প্রশাসন সূত্রের খবর, মিল-কর্তৃপক্ষ চাইছেন শ্রমিকদের সঙ্গে কিছু বিষয়ে নতুন চুক্তি করে উৎপাদন চালু করা হবে। পার্থপ্রতিমবাবু জানান, আগামী মঙ্গলবার কলকাতায় রাজ্যের অতিরিক্ত শ্রম কমিশনারের দফতরে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হবে।