Cyclone Amphan

পঞ্চায়েতে তালা, অবরোধ পান্ডুয়ায়

পান্ডুয়ার সিমলাগড়-ভিটাসিন পঞ্চায়েতে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।

Advertisement

সুশান্ত সরকার ও দীপঙ্কর দে

পান্ডুয়া-চণ্ডীতলা শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০২০ ০৫:১৩
Share:

দুই চিত্র: সিমলাগড়ের গোয়াড়া গ্রামে ডাক্তার মুর্মুর বাড়ির চাল উড়ে গিয়েছে। কিন্তু ক্ষতিপূরণের টাকা পাননি তিনি (বাঁ দিকে)। ওই গ্রামেরই তৃণমূল নেতা দেবাশিস মুখোপাধ্যায়ের দোতলা বাড়ি থাকা সত্বেও তাঁর মা ক্ষতিপূরণের টাকা পেয়েছেন বলে অভিযোগ। —ফাইল িচত্র।

আমপানে ক্ষতিপূরণ নিয়ে অনিয়মের অভিযোগে হুগলি জেলায় ক্ষোভ-বিক্ষোভ চলছেই। শুক্রবারেও এই নিয়ে কোথাও পঞ্চায়েতে তালা ঝুলল, কোথাও চলল অবরোধ।

Advertisement

পান্ডুয়ার সিমলাগড়-ভিটাসিন পঞ্চায়েতে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। খোঁজ নিয়ে দেখা গিয়েছে, কাঁচাবাড়ি ভেঙে গিয়েছে, এমন গ্রামবাসীর নাম তালিকায় ওঠেনি। অথচ দোতলা পাকা বাড়ি রয়েছে, এমন তৃণমূল নেতার মায়ের নামে টাকা উঠেছে। আনন্দবাজারে এই নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পরে বিষয়টি নিয়ে আন্দোলনে নেমেছেন বিরোধীরা।

শুক্রবার দুপুরে পঞ্চায়েতের সামনে বিজেপির লোকজন বিক্ষোভ দেখান। পঞ্চায়েত ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। বিজেপির অভিযোগ, রামনগর গ্রামের তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য আনিসুল আনসারের বাবা আকবর এবং কাকা মকবুল ক্ষতিপূরণের টাকা পেয়েছেন। যদিও তাঁদের পাকা বাড়ি অটুট।

Advertisement

স্থানীয় বিজেপি নেতা ভজহরি শর্মা বলেন, ‘‘আনিসুলদের বাড়ি শুধু পাকা নয়, ওঁদের আর্থিক অবস্থাও ভাল। অবিলম্বে ওঁরা টাকা ফেরৎ দিন। প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত গরিব মানুষকে ওই টাকা দেওয়া হোক।’’ আনিসুলের দাবি, ‘‘বাবা-কাকার ঘর ভেঙেছে, তাই ক্ষতিপূরণের আবেদন করা হয়েছে। গ্রামের কুড়িটি ঘর ভেঙেছে। তাঁদের নামও তালিকায় আছে। সকলেই টাকা পাবেন।’’

পঞ্চায়েত প্রধান রেজনা খাতুন বলেন, ‘‘সদস্যদের পাঠানো তালিকা ব্লকে জমা দিয়েছি। বাড়ি ধরে ধরে অনুসন্ধান করা হয়নি। তবে সদস্যের বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছি।’’

পান্ডুয়ার হরাল-দাসপুর পঞ্চায়েতেও বিজেপি দুপুরে বিক্ষোভ দেখায়। প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের নাম ক্ষতিপূরণের তালিকাভুক্ত করা, ঝড়ে ভেঙে পড়া গাছ টেন্ডার করে বিক্রি-সহ নানা দাবিতে প্রধানকে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। বেলা ৩টে নাগাদ বৈঁচী থেকে গুড়াপ যাওয়ার রাস্তা ঘণ্টা দু’য়েক অবরোধ করা হয়। পুলিশের হস্তক্ষেপে অবরোধ ওঠে।

পঞ্চায়েতের উপপ্রধান হাসিনূর রহমান বলেন, ‘‘বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। দাবি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ বিডিও স্বাতী চক্রবর্তীর সঙ্গে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি।

ক্ষতিপূরণে অনিয়মের অভিযোগে চণ্ডীতলা-১ ব্লকের গঙ্গাধরপুর পঞ্চায়েতে বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি। স্মারকলিপি দেওয়া হয়। একই দাবিতে ওই ব্লকের কুমিরমোড়া এবং চণ্ডীতলা-২ ব্লকের গরলগাছা পঞ্চায়েতে সিপিএম বিক্ষোভ দেখায়।

ক্ষতিপূরণের তালিকায় স্ত্রীর নাম থাকায় তৃণমূল নেতৃত্ব গরলগাছার দলীয় প্রধান মনোজ সিংহকে ইস্তফার নির্দেশ দেন। নির্দেশ না মানায় তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। মনোজ অবশ্য পঞ্চায়েতে স্বপদেই রয়েছেন। সিপিএম নেতা বাবুলাল মান্নার অভিযোগ, ‘‘দুর্নীতি প্রমাণিত হওয়া সত্বেও প্রধান এখনও কী ভাবে পদ আগলে রেখেছেন তৃণমূলকে জবাব দিতে হবে।’’ প্রধানের অবিলম্বে পদত্যাগের পাশাপাশি ক্ষতিপূরণের তালিকা জনসমক্ষে প্রকাশের দাবি তোলেন বিক্ষোভকারীরা। প্রধান পঞ্চায়েতে আসেননি। ত্রাণ এবং জবকার্ডের দাবিতে এ দিন তারকেশ্বরের রামনগর পঞ্চায়েতে বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement