হাতছাড়া বলাগড় পঞ্চায়েত সমিতি

সিপিএমের পাঁচ সদস্যের ভোটে হার দলীয় সভাপতির

তৃণমূলের আনা অনাস্থায় হেরে গেলেন বলাগড় পঞ্চায়েত সমিতির সিপিএম সভাপতি। সিপিএমের টিকিটে জয়ী পাঁচ সদস্য সভাপতির বিরুদ্ধে সই করলেন। ফলে এই পঞ্চায়েত সমিতির ক্ষমতা দখল করল রাজ্যের শাসক দল। তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, ওই পাঁচ সদস্যই তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন‌।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বলাগড় শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:০৬
Share:

তৃণমূলের আনা অনাস্থায় হেরে গেলেন বলাগড় পঞ্চায়েত সমিতির সিপিএম সভাপতি। সিপিএমের টিকিটে জয়ী পাঁচ সদস্য সভাপতির বিরুদ্ধে সই করলেন। ফলে এই পঞ্চায়েত সমিতির ক্ষমতা দখল করল রাজ্যের শাসক দল। তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, ওই পাঁচ সদস্যই তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন‌। মহকুমাশাসক (সদর) সুদীপ সরকার বলেন, ‘‘অনাস্থার পক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের ভোট পড়েছে। আইনানুগ যা ব্যবস্থা নেওয়ার, প্রশাসনের তরফে তা নেওয়া হবে।’’

Advertisement

বলাগড় পঞ্চায়েত সমিতির আসন সংখ্যা ৩৬টি। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে বামেরা ১৯টি আসনে জেতে। তৃণমূল পায় ১৭টি আসন। সভাপতি হন সিপিএমের মহুয়া বাগ। গত ৩০ অগস্ট তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব জমা দেন তৃণমূল সদস্যরা। তাঁদের অভিযোগ, সভাপতি বিভিন্ন কাজে অনিয়ম এবং দুর্নীতি করছিলেন। সমিতির কাজ পরিচালনার ক্ষেত্রে তিনি ব্যর্থ। অনাস্থা প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার তলবি সভা ডাকা হয় প্রশাসনের তরফে। তৃণমূলের ১৭ জন সদস্যই সভায় উপস্থিত ছিলেন। পাঁচ সিপিএম সদস্য এসেছিলেন। তাঁরা সকলেই অনাস্থার পক্ষে সই করেন। তবে সভাপতি, সহ-সভাপতি-সহ সিপিএমের বাকি ১৪ জন সভায় উপস্থিত হননি। ফলে সভাপতি ২২-০ ব্যবধানে হেরে যান।

সিপিএম সূত্রের খবর, সভাপতি মহুয়াদেবীকে সিপিএমের একাধিক সদস্য মেনে নিতে পারেননি। সেই নিয়ে তাঁদের মধ্যে ক্ষোভ ছিল। তৃণমূল শিবির সূত্রে খবর, সভাপতির বিরুদ্ধে ওই ক্ষোভকে কাজে লাগানো হয়েছে। ওই দলের একাধিক সদস্য তৃণমূলে যোগ দেবেন, এ ব্যাপারে নিশ্চিত হয়েই অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়েছিল। তৃণমূলের এক ব্লক নেতার কথায়, ‘‘কিছু দিনের মধ্যে আরও কয়েক জন সদস্য সিপিএম ছেড়ে আমাদের দলে যোগ দিতে পারেন।’’

Advertisement

সিপিএমের জেলা সম্পাদক সুদর্শন রায়চৌধুরীর অভিযোগ, ‘‘লোভ আর ভয় দেখিয়ে বিরোধী সদস্যদের দলত্যাগ করতে বাধ্য করছে। এ সব করে ওরা আসলে জনসাধারণের রায়কে অস্বীকার করছে।’’ বলাগড়ের বিধায়ক তথা তৃণমূলের ব্লক সভাপতি অসীম মাঝি অবশ্য বলেন, ‘‘ভয় বা লোভ দেখানোর প্রশ্নই নেই। উন্নয়নের নিরিখে বলাগড়কে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার স্বার্থেই তাঁরা আমাদের দলে এসেছেন। এখন থেকে সবাই মিলে আরও ভাল ভাবে মানুষকে পরিষেবা দেওয়া যাবে।’’

সিপিএম ছেড়ে যে পাঁচ জন তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন এবং অনাস্থার পক্ষে সই করেছেন, তাঁরা হলেন মণীষা ঘোষ, ঝুমা পান, পুষ্প বাগ, পদ্ম বিশ্বাস এবং ভবেশ প্রধান। তাঁদের বক্তব্য, ‘‘প্রধান উন্নয়নমূলক কাজ ঠিক ভাবে পরিচালনা করতে পারছিলেন না।’’

মণীষাদেবী বলেন, ‘‘‘সভাপতিকে নিয়ে দলীয় সদস্যদের মধ্যে ক্ষোভ ছিল। অপেক্ষাকৃত বেশি যোগ্যদের বাদ দিয়ে তাঁকে সভাপতি করা হয়। সে কথা দলকে জানানো হয়েছিল। কিন্তু দল আমাদের কথা কানেই তোলেনি। সে জন্য আমরা দল ছেড়েছি।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘নিজেদের এলাকায় কাজ করতে দেওয়া হচ্ছিল না আমাদের।’’

মহুয়াদেবীর দাবি, ‘‘ব্যক্তিস্বার্থেই ওঁরা দলত্যাগ করেছেন। এতে সিপিএমের কোনও ক্ষতি হবে না। ওঁদের মতো কিছু সদস্য চলে যাওয়ায় বরং দলেরই ভাল হল।’’ উন্নয়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘উন্নয়নের কাজ হয়েছে কি না, মানুষ জানেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement