সিপিএমের এক নেত্রীর বাড়িতে দলবল নিয়ে হামলার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতির বিরুদ্ধে। ওই নেত্রীর ছেলে এবং মেয়েকে টানাহ্যাঁচড়া করা এবং মেয়েকে ধর্ষণের হুমকি দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। শনিবার বিকেলে ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায় হুগলির চণ্ডীতলা বিধানসভা কেন্দ্রের গরলগাছা সাহাপাড়ায়। পরিবারটির তরফে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। রাত পর্যন্ত কেউ অবশ্য ধরা পড়েনি। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত চলছে। ওই সিপিএম নেত্রী স্থানীয় পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান। চণ্ডীতলা ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভানেত্রীও ছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘হারের ব্যাপারে যতই ওরা নিশ্চিত হচ্ছে, ততই দাঁত-নখ বের করতে চাইছে। এ ভাবে দিনে-দুপুরে বাড়িতে হামলা করবে ওরা, কল্পনাও করতে পারিনি।’’ অভিযোগ মানেনি তৃণমূল। অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা তথা চণ্ডীতলা ২ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি মনোজ সিংহ বলেন, ‘‘ওরা আমাদের পতাকা খুলে ফেলেছিল। আমাদের ছেলেরা ফের পতাকা লাগাতে যাওয়ায় ওই সিপিএম নেত্রীর স্বামী এবং ছেলে গালিগালাজ করছিলেন। তা নিয়েই বচসা বাধে। আমি পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়েছিলাম মাত্র। এর বেশি কিছু হয়নি।’’
তৃণমূল নেতারা যাই বলুন, স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, রীতিমতো পরিকল্পিত ভাবেই ওই বাড়িতে হামলা করা হয়। সিপিএম নেতৃত্বের অভিযোগ, এ দিন দুপুর আড়াইটে নাগাদ মনোজ সিংহের নেতৃত্বে তৃণমূলের জনা পঁচিশ লোক মোটরবাইকে চেপে ওই বাড়িতে চড়াও হয়। কেলাপসিবল গেট ধরে টানাটানি করা হয়। ভিতরে ঢুকে দরজা ভাঙা হয়। তার পরে ওই সিপিএম নেত্রীর ছেলেকে টানতে টানতে বাইরে নিয়ে আসা হয়। তাঁর কলেজ পড়ুয়া মেয়ের হাত ধরেও টানাটানি করে হামলাকারীরা। নেত্রীর স্বামী তখন স্নান করছিলেন। তিনি এসে ছেলেমেয়েকে কোনওক্রমে ঘরে ঢুকিয়ে নেন। তখন ছেলেটি মোবাইলে ভিডিও রেকর্ডিং করেন। তাতে পরিষ্কার শোনা যায়, হামলাকারীরা বলছে, ‘‘১৯ তারিখের পরে তোদের বুঝে নেব।’’ মেয়েটির অভিযোগ, ‘‘আমাকে ওরা ধর্ষণের হুমকি দেয়। এর পরে কী ভাবে বাইরে যাব?’’ চণ্ডীতলার সিপিএম প্রার্থী আজিম আলি বলেন, ‘‘এখন চণ্ডীতলার তৃণমূল নেতারাও আজিম আলি হতে চাইছেন। তবে চণ্ডীতলার মানুষ কিন্তু এটা মেনে নেবে না।’’
এ দিনই তৃণমূল অবশ্য পুলিশে অভিযোগ জানায়, ওই নেত্রীর স্বামী ও ছেলে তৃণমূলের দলীয় পতাকা খুলে ফেলছে। সেই অভিযোগ পেয়ে দুপুরে পুলিশ গ্রামে যায়। নেত্রীর স্বামীর সঙ্গে কথা বলে তারা ফিরে যায়। পুলিশ ফিরে যাওয়ার ঘণ্টাখানেক পরেই শাসক দলের লোকেরা হামলা চালায় বলে অভিযোগ। সিপিএমের দাবি, ওই এলাকায় তৃণমূল পতাকা আদপেই লাগায়নি। মিথ্যা অভিযোগ তুলেই পরিকল্পনা করে হামলা করা হয়েছে।