দুর্ঘটনাগ্রস্ত সেই গাড়ি।
ফের দুর্ঘটনা দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে। ফের মৃত্যু।
শুক্রবার দুপুরে সিঙ্গুরের ঘনশ্যামপুরে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ডাম্পারের পিছনে গাড়ির ধাক্কায় মৃত্যু হল আসানসোলের এক বৃদ্ধ দম্পতির। গুরুতর জখম হন তাঁদের ছেলে। তিনিই গাড়িটি চালাচ্ছিলেন।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃতেরা হলেন আসানসোলের দক্ষিণ থানা এলাকার রামতলা মাস্টারপাড়ার বাসিন্দা নির্মাল্যকুসুম ভট্টাচার্য (৮৫) এবং তাঁর স্ত্রী মণিমালাদেবী (৭৭)। তাঁদের ছেলে দেবর্ষিকে গুরুতর জখম অবস্থায় প্রথমে সিঙ্গুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁর অবস্থার অবনতি হলে কলকাতার একটি নার্সিংহোমে স্থানান্তরিত করানো হয়। তিন জনে কলকাতায় এক আত্মীয়ের বাড়ি যাচ্ছিলেন। ওই জাতীয় সড়কে দুর্ঘটনা এবং তার জেরে মৃত্যু অব্যাহত। রাস্তার দু’ধারে বেআইনি পার্কিংয়ের অভিযোগও ফের উঠছে। ফলে, পুলিশের নজরদারিও প্রশ্নের মুখে। ঘনশ্যামপুরের বাসিন্দা সুজিত ভাদুড়ির অভিযোগ, ‘‘মাঝে কিছুদিন এক্সপ্রেসওয়ের ধারে লরি-ট্রাক-ডাম্পার দাঁড়ানো বন্ধ ছিল। আবার শুরু হয়েছে। আমাদের এলাকায় বেশ কয়েকটি কারখানা ও ধাবা রয়েছে। কারখানা-ধাবার গাড়ি ওই রাস্তায় দাঁড়ায়। পুলিশ আপত্তি করে না। আমাদের যাতায়াতে সমস্যা হয়।’’
পুলিশকর্তাদের অবশ্য দাবি, এক্সপ্রেসওয়েতে নিয়মিত গাড়ি ‘চেকিং’ হয়। রাস্তার পাশে পার্কিংয়ের ক্ষেত্রে নজরদারিও চলে। পুলিশ আইন ভাঙা গাড়ির ক্ষেত্রে মামলা করে। বৃহস্পতিবারের দুর্ঘটনাটি সম্ভবত চালকের কোনও অসতর্ক মুহুর্তে ঘটেছে। তদন্ত চলছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকালে আসানসোলের বাড়ি থেকে মা-বাবাকে গাড়িতে চাপিয়ে বের হন ওষুধ ব্যবসায়ী দেবর্ষি। তাঁর বাবা ছিলেন গাড়ির সামনে আসনে। মা বসেছিলেন পিছনে। ঘনশ্যামপুরের কাছে একটি ট্রাককে গাড়িটি পাশ কাটিয়ে বেরোতে গিয়েই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে থাকা ডাম্পারে ধাক্কা মারে। ধাক্কার অভিঘাতে গাড়িটির সামনের অংশ দুমড়ে-মুচড়ে যায়। গ্রামবাসীরাই প্রথমে তিন জনকে উদ্ধার করে সিঙ্গুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসকেরা দম্পতিকে মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে দেবর্ষিদের প্রতিবেশীরা সিঙ্গুর রওনা হন।
পর পর দুর্ঘটনায় প্রাণহানি হয়ে চললেও কেন তাতে লাগাম পরানো যাচ্ছে না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। গত ২৬ জানুয়ারি সিঙ্গুরের মল্লিকপুর সেতুর কাছে দ্রুত গতিতে মোটরবাইক চালাতে গিয়ে মৃত্যু হয় ব্যারাকপুরের এক যুবকের। তার আগের চার মাসে মারা গিয়েছেন অন্তত তিন জন। জখম হন ১২ জন।