মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে সাহায্য সাংসদের হাতে। —নিজস্ব িচত্র
রাজ্য সরকারের ত্রাণ তহবিলে চেক দেওয়ার জন্য মঞ্চ বেঁধে অনুষ্ঠানের আয়োজন!
বুধবার দুপুরে গোঘাটের কামারপুকুর চটিতে দলের তরফে তোলা ওই চেক নিতে এসে করোনা আবহে ওই আয়োজন দেখে খেপে গেলেন শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। মাইকে ঘোষণা করে দলের নেতাকর্মীরা তাঁকে বরণ করতে এবং সংবর্ধনা দিতে এগোচ্ছিলেন। কিন্তু কল্যাণ সে সব ফিরিয়ে দিয়ে বলে ওঠেন, ‘‘মঞ্চ করে এ সব হবে জানলে আসতাম না।’’ কেন মঞ্চ তৈরি হয়েছে, এই প্রশ্নও তোলেন তিনি। শেষমেশ নেমেও যাচ্ছিলেন। জেলা সভাধিপতি মেহেবুব রহমান আবার তাঁকে বসান। সেখানে তাঁর হাতে গোঘাট বিধানসভা এলাকার ১৬টি পঞ্চায়েতের ২৭৯টি বুথ এলাকা থেকে সংগ্রহ করা ১৮ লক্ষ ৭ হাজার ৪৫৫ টাকার চেক তুলে দেওয়া হয়।
পরে কল্যাণ বলেন, “আমি চাইছিলাম না মঞ্চ হোক। সেখানে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখাটা মানা হচ্ছিল না। তাই বলেছিলাম, তা হলে তোমরা থাকো। আমি নেমে যাচ্ছি। তারপরে ওঁরা অবশ্য শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখেই কর্মসূচি পালান করেছেন। সংবর্ধনা নিইনি। এখন এ সবের সময় নয়।’’
করোনা ও আমপান মোকাবিলায় রাজ্য সরকারের ত্রাণ তহবিলে ওই চেক তুলে দেওয়ার এ দিনের কর্মসূচিটির আয়োজক গোঘাটের বিধায়ক মানস মজুমদার। মঞ্চের সামনে প্রায় সাড়ে ৫০০ চেয়ার সাজানো ছিল। বিভিন্ন পঞ্চায়েত এলাকা থেকে আসা তৃণমূল নেতাকর্মীরা প্রায় ঠাসাঠাসি করে দাঁড়িয়ে ছিলেন। সকলের মুখে অবশ্য মাস্ক ছিল। সাংসদ এসেছিলেন ‘ফেস লক’-এ মুখ ঢেকে। সভাধিপতি ছাড়াও তাঁর সঙ্গে ছিলেন দলের জেলা সভাপতি দিলীপ যাদব। কল্যাণ উপস্থিত নেতাকর্মীদের রাজনীতির রং বা জাতি-ধর্ম না দেখে বিপন্ন মানুষের কাছে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার আবেদন জানান।
কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে এই টাকা তো অনলাইনেও পাঠানো যেত। লকডাউনে অনুষ্ঠান করে কল্যাণবাবুর হাতেই কেন দিতে হল? বিধায়ক মানস মজুমদারের দাবি, “এ রকমই দলের নির্দেশ।” তবে, জেলা তৃণমূল সভাপতি দাবি করেছেন, ‘‘দলের নির্দেশ থাকলেও মঞ্চ ওঁরা নিজেদের উদ্যোগে করেন।’’ কল্যাণের এ দিনের ভূমিকা বহু মানুষের প্রশংসা কুড়োলেও বিজেপি কটাক্ষ করতে ছাড়েনি। বিজেপির আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিমান ঘোষ বলেন, “মঞ্চ থেকে সাংসদের নেমে যাওয়ার চেষ্টা স্রেফ নাটক। করোনা সংক্রমণ নিয়ে ওঁদের মাথাব্যথা নেই।’’