Coronavirus

ঝাঁপ বন্ধ কারখানার, ঋণ মিটবে কী করে?

সুগন্ধার ওই কারখানার তিনটি ইউনিট রয়েছে। একটিতে ত্রিপল তৈরি হয়। বাকি দু’টির একটিতে প্লাস্টিকের বড় বস্তা, অন্যটিতে জলের পাইপ বানানো তৈরি হয়।

Advertisement

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২০ ০৬:৩১
Share:

বন্ধ রয়েছে ত্রিপল কারখানা। ছবি: দীপঙ্কর দে

দ্বিতীয় দফায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ৩ মে পর্যন্ত লকডাউনের মেয়াদ বাড়িয়েছেন। তারপরেও কি পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে? কেউ জানেন না।

Advertisement

পোলবার সুগন্ধার একটি ত্রিপল কারখানার কর্তৃপক্ষের ঘুম উবেছে তিন প্রশ্নে। ব্যাঙ্ক ঋণ মেটাবেন কী করে? কী করে আগামী মাসে শ্রমিকদের বেতন দেবেন, কী করেই বা বাজার ধরে রাখবেন?

সুগন্ধার ওই কারখানার তিনটি ইউনিট রয়েছে। একটিতে ত্রিপল তৈরি হয়। বাকি দু’টির একটিতে প্লাস্টিকের বড় বস্তা, অন্যটিতে জলের পাইপ বানানো তৈরি হয়। ঠিকাদারের শ্রমিক এবং কারখানার স্থায়ী শ্রমিক মিলিয়ে সাড়ে ৩০০ জন কাজ করেন। কেন্দ্র লকডাউন ঘোষণার পরই বাঁকুড়া, বীরভূম, মেদিনীপুর এবং মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা সেই সব শ্রমিক যে যাঁর বাড়ি ফিরে গিয়েছেন। শ্রমিকদের গত মাসের বেতন মিটিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এরপর? কারখানা তো বন্ধ!

Advertisement

কারখানার মালিক মৈনাক মণ্ডল বলেন, ‘‘এই পরিস্থিতিতে আমাদের ব্যবসা গভীর সঙ্কটে পড়ে গিয়েছে। ব্যবসার জন্য ব্যাঙ্কের উপর নির্ভর করতে হয় অনেকটাই। কিন্তু কেনাকাটা না হলে, ব্যবসা চালু না থাকলে, আমরা ব্যাঙ্ক-ঋণ শোধ করব কী করে? কী করেই বা বেতন মেটাব শ্রমিকদের?’’

ওই কারখানার ত্রিপল ইউনিটটি সবচেয়ে বড়। এখানকার ত্রিপল দু’ভাবে ব্যবহার হয়। সরকার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাথার ছাউনির জন্য ত্রাণ হিসেবে এখানকার ত্রিপল কেনে। গ্রামাঞ্চলে ধান ঝাড়ার পুরো কাজটাই মাটিতে ত্রিপল বিছিয়ে করা হয়। সেই কাজেও এখানকার ত্রিপল লাগে। সামনেই ধান ওঠার মরসুম। হুগলি রাজ্যের অন্যতম ধান উৎপাদক জেলা। এখানকার বহু চাষি ওই কারখানার ত্রিপল কেনেন। কিন্তু এ বার উৎপাদনই বন্ধ। চাষিদের চাহিদা কী করে মেটাবেন, সেই দুশ্চিন্তাতেই কারখানা কর্তৃপক্ষ দিশাহারা।

মৈনাক বলেন, ‘‘ধান ওঠার সঙ্গেই আমাদের ব্যবসার মরসুম শুরু ধরা যায়। বহু চাষি তাঁদের ধান ঝাড়ার প্রয়োজনে ত্রিপল কিনে নিয়ে যান। লকডাউনের মেয়াদ আবার বাড়বে কিনা, জানি না। ধান ঝাড়ার মরসুমে ত্রিপল না-পেলে সমস্যায় পড়বেন চাষিরা।’’

ধান বা অন্য শস্য রাখার জন্য বস্তারও প্রয়োজন। চটের মতো প্লাস্টিকের বস্তা বার বার ব্যবহার করা যায় না। তাই একবার ব্যবহার করেই প্লাস্টিকের বস্তা ফেলে দিতে হয়। নতুন বস্তা লাগে। কিন্তু উৎপাদনই যেখানে বন্ধ, সেখানে চাষিদের ওই কারখানার নতুন বস্তা পাওয়াও দূরঅস্ত্‌।

কারখানার শ্রমিক-মালিক দু’পক্ষই হা-পিত্যেশ করে বসে রয়েছেন। কবে খুলবে কারখানার দরজা? কবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে?

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement