—ফাইল চিত্র।
স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিনের তথ্য অনুযায়ী, হাওড়ায় করোনা আক্রান্ত এবং হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। প্রায় সাত দিন আগে হাওড়া জেলা প্রশাসনও জানিয়েছিল, গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়ে গিয়েছে সেখানে। কিন্তু সাত দিনের মধ্যেই আগের বক্তব্য থেকে সম্পূর্ণ ঘুরে জেলা প্রশাসন জানাল, পরিস্থিতি এখন অনেক ভাল!
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের তথ্য অনুযায়ী, গত মাসে শহরাঞ্চলে সংক্রমণের হার ছিল ৩৭ শতাংশ, বর্তমানে তা ১১-১২ শতাংশ। এ দিকে, রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী, ২১ জুলাই হাওড়া জেলায় মোট আক্রান্ত ছিলেন ১৬৪২ জন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন ১৫৩৯ জন। ১০ অগস্টের বুলেটিনে দেখা যাচ্ছে, হাওড়ায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২০০৩ জন। হাসপাতালে ভর্তি আছেন ১৯০০ জন।
তা হলে করোনা সংক্রমণ কমেছে কী ভাবে বলা হচ্ছে? জেলা প্রশাসনের এক কর্তার যুক্তি, “পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ায় আক্রান্ত বেশি করে সামনে আসছে। এ দিকে অ্যান্টিজেন পরীক্ষার ফল বেশি নেগেটিভ হওয়াই প্রমাণ করছে যে করোনা ছড়াচ্ছে না।”
সপ্তাহখানেক আগে র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষা শুরুর পরেই জেলা স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছিল, গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়েছে। এ বার তাদের দাবি, প্রায় পাঁচ হাজার বাসিন্দার র্যাপিড পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, হাওড়ায় করোনা সংক্রমণ আগের থেকে অনেকটা কমেছে। যদিও গোষ্ঠী সংক্রমণের প্রসঙ্গটি এড়িয়ে যাচ্ছে জেলা প্রশাসন বা জেলা স্বাস্থ্য দফতর।
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, সম্প্রতি হাওড়া পুর এলাকা, জেলা হাসপাতাল ও গ্রামীণ অঞ্চলের ১৪টি জায়গায় র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষা শুরু হয়। সরকারি হাসপাতাল ছাড়াও বেসরকারি সংগঠন এবং ক্লাবে এ জন্য স্বাস্থ্য শিবিরও হয়। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, ইতিমধ্যে হাওড়া পুর এলাকার সাতশো জনের র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষা হয়েছে। যাঁদের মধ্যে ৮৪ জন, অর্থাৎ ১২ শতাংশের করোনা পজ়িটিভ হয়েছে।
কয়েক দিন আগেই জেলা স্বাস্থ্য দফতরের তরফে বলা হয়েছিল, হাওড়ায় কয়েকটি এলাকায় বিক্ষিপ্ত ভাবে গোষ্ঠী সংক্রমণ হয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তা হলে কি ওই এলাকাগুলিতেও সংক্রমণ কমেছে? জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, “যেখানে র্যাপিড পরীক্ষা হয়েছে, সেখানে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে না বোঝা যাচ্ছে। বাকি সংক্রমিত এলাকায় পরীক্ষা করলেই এটা স্পষ্ট হবে গোষ্ঠী সংক্রমণের হার কমেছে কি না।”
হাওড়া জেলা প্রশাসনের এক কর্তার দাবি, “গোষ্ঠী সংক্রমণ এমন একটি বিষয়, যেটা হয়েছে আবার হয়নি, দুটোই ধরে নেওয়া যায়। তাই সেটিকে গুরুত্ব না দিয়ে, কত বাসিন্দার মধ্যে করোনা ছড়িয়েছে সে দিকেই নজর রাখা হচ্ছে। তাতেই প্রাথমিক ফল মিলছে।”
তিনি জানান, সংক্রমণ শহরাঞ্চলের থেকে বেশি কমেছে হাওড়ার গ্রামীণ এলাকায়। সেখানে এই হার হয়েছে ৪-৫ শতাংশ। মাস্ক পরা ও দূরত্ব-বিধি মেনে চলার সচেতনতা বাড়ায় এই সাফল্য বলে তাঁর মত। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের অন্য এক কর্তা বলেন, ‘‘হাওড়ায় র্যাপিড পরীক্ষার কিট প্রচুর আছে। সেগুলি দিয়ে বিভিন্ন এলাকায় পরীক্ষা হবে। যেহেতু সংক্রমণ শহরের কয়েকটি জায়গায় সম্প্রতি নতুন করে ছড়িয়েছে, সেখানে আরও পরীক্ষার পরেই স্পষ্ট হবে গোষ্ঠী সংক্রমণের বিষয়টি।”
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)