—ফাইল চিত্র।
করোনা সংক্রমণ হাওড়ার আরও নতুন কয়েকটি জায়গায় ছড়িয়ে পড়ায় বাড়ানো হল কন্টেনমেন্ট জ়োনের সংখ্যা। সোমবার হাওড়া পুরসভা এলাকায় ১৭টি কন্টেনমেন্ট জ়োন বেড়ে হয়েছে ২২টি। জেলার প্রশাসনিক আধিকারিকদের ধারণা, যে ভাবে শহরে সংক্রমণ বাড়ছে, তাতে সার্বিক লকডাউনের দিন আরও বাড়ানো হতে পারে। সেই সঙ্গে বাড়তে পারে কোভিড হাসপাতালের সংখ্যা। ইতিমধ্যেই জেলা স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, টেলি-মেডিসিন ব্যবস্থা চালু করা হবে শীঘ্রই। টোল ফ্রি নম্বরে ফোন করলেই মিলবে চিকিৎসকের পরামর্শ।
গত ৯ জুলাই বিকেল ৫টা থেকে হাওড়ার ১৭টি জায়গায় ফের কড়া লকডাউন চালু হয়। আরও নতুন জায়গায় সংক্রমণের খবর মেলায় জেলা প্রশাসন জানিয়েছিল কন্টেনমেন্ট জ়োন বাড়তে পারে। শুক্রবার থেকে জেলাশাসকের দফতরে এই নিয়ে বৈঠক করেন জেলা প্রশাসন, পুলিশ ও জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা। রবিবার রাত ১২টায় কন্টেনমেন্ট জ়োন বৃদ্ধির তালিকা ঘোষণা করা হয়। ওই তালিকায় দেখা যাচ্ছে লিলুয়া, ব্যাঁটরা, মালিপাঁচঘরা, বটানিক্যাল গার্ডেন এলাকায় করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে। ওই চারটি এলাকার মোট পাঁচটি জায়গা চিহ্নিত করে সোমবার বিকেল ৫টায় রাস্তাঘাটে ব্যারিকেড করে দেওয়া হয় বলে পুলিশ জানিয়েছে।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, হাওড়ায় প্রতিদিন গড়ে পাঁচ-ছ’জনের মৃত্যু হচ্ছে। রোজ সংক্রমিত হচ্ছেন গড়ে ১৩৫ জন। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক পদস্থ কর্তা জানান, বহু মানুষই বিধি মেনে চলছেন না, আর তার জেরেই বেড়ে চলেছে সংক্রমণ। ওই কর্তা বলেন, ‘‘হোম কোয়রান্টিনে থাকা মানুষদের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ আরও বাড়াতে হবে। ১৫ শতাংশ রোগীর সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। অনেককে মোবাইলে পাওয়া যাচ্ছে না। ফোন বাজলেও কেউ কেউ ধরছেন না।’’ এ ছাড়া, বাড়িতে থাকা অনেক প্রবীণ বাসিন্দার সঙ্গে যোগাযোগ করতেও সমস্যা হচ্ছে। ওই সব বাসিন্দার সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রয়োজনে করোনা পরীক্ষা করা হবে। কেউ পজ়িটিভ হলেই শুরু হবে ট্র্যাকিং। যাঁরা হোম কোয়রান্টিনে আছেন, তাঁদের নোডাল অফিসারের তত্ত্বাবধানে দেখভাল করা হবে। প্রয়োজনে গাড়ি পাঠিয়ে হাসপাতালে এনে ভর্তি করা হবে। তবে প্রাথমিক ভাবে পরিস্থিতির মোকাবিলা করার জন্য টেলি-মেডিসিন ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে। এর জন্য তিনটি টোল ফ্রি নম্বর দ্রুত চালু হবে। ওই সব নম্বরে ফোন করলেই মিলবে চিকিৎসকের পরামর্শ। চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন মতো ওষুধ খেতে হবে বাসিন্দাদের।
আরও পড়ুন: ফেরাল দুই সরকারি হাসপাতাল, বাড়িতেই মৃত্যু প্রৌঢ়ার
আরও পড়ুন: পাড়ায় আক্রান্ত ১৬, তবু বাজারে বেরোনো চলছেই
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, সংক্রমণ আরও বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে। এর জন্য প্রস্তুত হচ্ছে প্রশাসন। করোনা রোগীর সংখ্যা বাড়ার আশঙ্কায় ইতিমধ্যে বালিতে একটি বেসরকারি হাসপাতালকে কোভিড হাসপাতাল করার জন্য রাজ্যের কাছে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁদের একটি তিনতলা ফাঁকা বাড়িকে কোভিড লেভেল-২ হাসপাতাল করতে চাইছেন।