Coronavirus in West Bengal

এক দিনে পরিযায়ী-সহ ২৯ আক্রান্তের খোঁজ

তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, আক্রান্তদের বেশিরভাগই পরিযায়ী শ্রমিক। অনেকেই ফিরেছেন মহারাষ্ট্র থেকে। কেউ ফিরেছেন পঞ্জাব বা অন্য রাজ্য থেকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০২০ ০০:১১
Share:

প্রতীকী ছবি।

শহরাঞ্চল ছাড়িয়ে এ বার হুগলির গ্রামীণ এলাকাতেও করোনা প্রভাব বিস্তার শুরু করল।

Advertisement

শুধু শনিবারেই অন্তত ২৯ জনের শরীরে ওই ভাইরাসের উপস্থিতি মিলেছে বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর। তাঁদের মধ্যে শুধু খানাকুলেরই রয়েছেন ১০ জন। এক জন করে রয়েছেন আরামবাগ, ধনেখালি, পুরুষোত্তমপুর, বলাগড়, হরিপাল এবং পান্ডুয়ার। দু’জন করে রয়েছেন দাদপুর, জাঙ্গিপাড়া এবং চণ্ডীতলা থেকে। সিঙ্গুরের চার জন এবং তারকেশ্বরের তিন জনও আক্রান্ত হয়েছেন। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, আক্রান্তদের বেশিরভাগই পরিযায়ী শ্রমিক। অনেকেই ফিরেছেন মহারাষ্ট্র থেকে। কেউ ফিরেছেন পঞ্জাব বা অন্য রাজ্য থেকে।

এ দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত ১৮ জন আক্রান্তকে ভর্তি করানো হয়েছে শ্রীরামপুর শ্রমজীবী হাসপাতালে। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা জানিয়েছেন, আক্রান্তদের সংস্পর্শে যাঁরা এসেছেন, তাঁদের চিহ্নিত করার কাজ চলছে। আক্রান্তদের পরিবারের সদস্যদের লালারসের নমুনা সংগ্রহের কাজ চলছে।

Advertisement

গত বৃহস্পতিবারই আরামবাগ মহকুমায় ঘরে ফেরা ১৩ শ্রমিকের শরীরে করোনা ধরা পড়েছিল। তারপরে এ দিন ফের নতুন করে ১১ জনের করোনা পজ়িটিভ হওয়ায় সাধারণ মানুষ এবং প্রশাসনের কর্তাদেরও উদ্বেগ বেড়েছে। ওই ১১ জনও পরিযায়ী শ্রমিক। মহকুমায় লকডাউন বিধি পালন নিয়ে প্রশাসনের বিরুদ্ধে আগেই উদাসীনতার অভিযোগ তুলেছিলেন বহু সাধারণ মানুষ। উঠেছিল ‘গৃহ নিভৃতবাস’ও ঠিকঠাক পালন না-করা নিয়ে অভিযোগ। এ বার নতুন করে ১১ জন আক্রান্ত হওয়ায় সেই অভিযোগ আরও জোরালো হল। অনেকেই দাবি করছেন, ভিন রাজ্য থেকে ফেরা শ্রমিকদের যথাযথ ভাবে আলাদা করে রেখে কোনও নজরদারি করছে না প্রশাসন। অনেকেই গৃহ-নিভৃতবাস না-মেনে হাট, বাজার এবং মদের দোকানে যাতায়াত করেছেন। খানাকুলের দু’টি ব্লক এলাকাকে ‘রেড জ়োন’ ঘোষণার দাবিও উঠেছে। প্রশাসনের কর্তাদের একাংশও মানছেন, সদ্য ঘরে ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকদের পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি।

স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, ওই ১১ জনের পরিবারের সদস্য এবং তাঁদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের গৃহ-নিভৃতবাসে রেখেই লালারসের নমুনা পরীক্ষা হবে। কারণ, মহকুমার কোভিড হাসপাতালে আর জায়গা নেই।

কয়েকদিন আগে মহারাষ্ট্র থেকে দু’টি বিশেষ ট্রেনে হুগলিতে ফিরেছিলেন ৩০৩ জন শ্রমিক। সকলের লালারসের নমুনমা পরীক্ষায় পাঠানো হয়। তাঁদের মধ্যে সিঙ্গুর এবং তারকেশ্বরের মোট সাত জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন বলে এ দিন জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কাছে রিপোর্ট এসেছে। তাঁদের চিকিৎসা শুরু হয়েছে বলে ওই দফতর জানিয়েছে।

হুগলিতে করোনা প্রথমে হানা দিয়েছিল শহরাঞ্চলে। রিষড়া, শ্রীরামপুর, চন্দননগর, কোন্নগর, ভদ্রেশ্বর, শেওড়াফুলি, আরামবাগ থেকে থেকে আক্রান্তের খোঁজ মিলছিল। এর মধ্যে বেশ কিছু এলাকাকে ‘কন্টেনমেন্ট জ়োন’ হিসেবে চিহ্নিতও করা হয়। কিন্তু গ্রামীণ এলাকায়, বিশেষ করে পরিযায়ী শ্রমিকদের মধ্যে যে ভাবে সংক্রমণ ধরা পড়ছে, তাতে অশনিসঙ্কেত দেখছেন অনেকে।

তবে, গত দু’দিনে চন্দননগরের উর্দিবাজার, ভদ্রেশ্বরের অ্যাঙ্গাস, তেলেনিপাড়া, শ্রীরামপুরের প্রভাসনগর এবং রিষড়ার গোয়ালাপাড়া এলাকাগুলির আক্রান্তদের মধ্যে ১৮ জন সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরেছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement