ছবি: সংগৃহীত।
সর্বত্র লকডাউন। করোনা ছাড়া অন্যান্য রোগে আক্রান্তেরা যাবেন কোথায়?
গ্রামীণ হাওড়ার বেশিরভাগ চিকিৎসক নিজেদের ব্যক্তিগত ‘চেম্বার’ বন্ধ রেখেছেন। তাঁরা রোগীদের মূলত ফোনেই পরামর্শ দিচ্ছেন। কিছু ক্ষেত্রে রোগী দেখা হচ্ছে। না হলে সরাসরি যেতে বলা হচ্ছে হাসপাতালে। হুগলিতে অবশ্য বেশির ভাগ চিকিৎসক ‘চেম্বার’ খোলা রেখেছেন। তবে, রোগীদের ঢুকতে হচ্ছে যথাযথ নিরাপত্তা-বিধি মেনেই। অর্থাৎ, মাস্ক পরে এবং স্যানিটাইজ়ার দিয়ে হাত ধুয়ে।
হুগলির চিকিৎসকদের অনেকে জানান, জ্বর, সর্দি-কাশির উপসর্গ নিয়ে অনেকেই আসছেন। উপসর্গ অনুযায়ী তাঁদের চিকিৎসা হচ্ছে। আইএমএ-র শ্রীরামপুর শাখার সভাপতি প্রদীপকুমার দাস জানান, তাঁর চেম্বারে ঢোকার সময় রোগী এবং তাঁর বাড়ির লোককে হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার দিয়ে হাত ধুতে বলা হচ্ছে। মাস্ক পরতে বলা হচ্ছে। বেরনোর সময়েও অ্যালকোহলযুক্ত হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার দেওয়া হচ্ছে। প্রদীপবাবু নিজেও ঘনঘন হাত ধুচ্ছেন।
শেওড়াফুলির চিকিৎসক দীপ্তেন চট্টোপাধ্যায় এবং তাঁর ছেলে, দন্ত শল্য চিকিৎসক সপ্তর্ষিও একই নিয়ম অনুসরণ করছেন। দীপ্তেনবাবুর কথায়, ‘‘জরুরি পরিস্থিতিতে আমরা যদি সাধারণ রোগীদের না দেখি, তাঁরা যাবেন কোথায়?’’
আরামবাগ শহরে অন্তত ১১০ জন চিকিৎসকের ‘চেম্বার’ চলে। এর মধ্যে শুধু আরামবাগ হাসপাতাল রোডের ওষুধের দোকানগুলিতে সব মিলিয়ে ৫২ জন চিকিৎসকের ‘চেম্বার’ রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৩০টি ‘চেম্বার’ বন্ধ থাকছে।
কারণ, সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকেরা অন্যত্র থাকায় আসতে পারছেন না। বাকি ‘চেম্বার’ চলছে। তবে, রোগীর ভিড় খুব একটা
নেই। উত্তরপাড়া পুর কর্তৃপক্ষ শহরের অসুস্থ বয়স্ক মানুষদের জন্য
চিকিৎসা পরিষেবা তাঁদের বাড়িতেই পৌঁছে দিচ্ছেন। পুরসভা জানতে পারলে তাদের চিকিৎসক পৌঁছে যাচ্ছেন ওই সব রোগীর বাড়িতে। বুধবার থেকে চালু হয়েছে এই বিশেষ পরিষেবা।
পাশের জেলা হাওড়াতে অবশ্য ছবিটা অনেকটাই আলাদা। বিশেষ করে গ্রামীণ হাওড়ায় অনেক চিকিৎসক ‘চেম্বার’ খুলছেন না। রোগীকে আসতেও বারণ করে দিচ্ছেন তাঁরা। রোগীদের মোবাইলেই প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছেন। একান্ত দেখার দরকার হলে চেম্বারে ডাকছেন। তবে সেটাও কঠোর নিয়ম মেনে।
উলুবেড়িয়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালের মালিক তথা চিকিৎসক সুশান্ত মাইতি প্রতিদিন বহির্বিভাগে নিয়ম করে রোগী দেখতেন। এখন সব বন্ধ। হাসপাতালের জরুরি বিভাগটি শুধু খোলা আছে। সাধারণ রোগীকে আগামী এক মাস আসতে বারণ করা হয়েছে। সুশান্তবাবু বলেন, ‘‘অনেক রোগীকেই ফোনে পরামর্শ দিচ্ছি। কাউকে যদি দেখতেই হয়, একা ডেকে নিচ্ছি। একাধিক রোগীকে দেখতে হলে এমন ভাবে ডাকছি, যাতে দু’জন রোগী একই সময়ে না আসেন।’’
বাগনানের কয়েকজন চিকিৎসকও জানান, তাঁরা চেম্বার বন্ধ রেখেছেন। জরুরি প্রয়োজন না থাকলে ফোনেই পরামর্শ দিচ্ছেন। একান্ত প্রয়োজনে রোগী চেম্বারে এলে তাঁকে হাত ‘স্যানিটাইজ়’ করতে হচ্ছে।