Corona Virus

করোনা রোধে হুগলিতে নজরে বিদেশিরাও 

বিদেশিদের মধ্যে ভাইরাস বহনকারী পর্যটক রয়েছেন কিনা, সতর্কতা হিসাবে নজরদারি চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ওয়াই রত্নাকর রাও, জেলাশাসক (হুগলি)

Advertisement

তাপস ঘোষ

চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২০ ০২:০৫
Share:

সতর্কতায়: চন্দননগর স্ট্র্যান্ডে বিদেশি পর্যটকদের এমন ভিড় দেখা যায় হামেশাই

চন্দননগর স্ট্র্যান্ড হোক বা ব্যান্ডেল চার্চ, শ্রীরামপুরের গির্জা হোক বা কামারপুকুরে শ্রীরামকৃষ্ণের জন্মভিটে— হুগলির বেশ কিছু জায়গায় বছরভর বিদেশি পর্যটকদের আনাগোনা লেগে থাকে। করোনাভাইরাস যাতে এ জেলায় না-ছড়ায় সে জন্য সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে ওই সব বিদেশিদের উপরেও নজরদারির সিদ্ধান্ত নিল জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতর।

Advertisement

শুক্রবার চুঁচুড়া রবীন্দ্রভবনে জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় স্বাস্থ্য দফতরের উদ্যোগে করোনাভাইরাস সংক্রান্ত একটি সচেতনতা শিবির আয়োজন করা হয়। সেখানেই জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও ওই নজরদারির কথা জানান। তিনি বলেন, ‘‘এ রাজ্যে করোনায় কেউ আক্রান্ত হননি। ওই রোগ মোকাবিলায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ভুল তথ্য জেনে আতঙ্কিত হবেন না। এই জেলার বেশ কয়েকটি শহরে প্রাচীন ঐতিহ্য দর্শনে বিদেশি পর্যটকেরা ভিড় জমান। সে ক্ষেত্রে তাঁরা কোন দেশ থেকে এসেছেন বা তাঁদের মধ্যে ওই ভাইরাস বহনকারী কোনও পর্যটক রয়েছেন কিনা, সতর্কতা হিসাবে সে দিকে বিশেষ নজরদারি চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাঁরা জেলার যে সব হোটেলে থাকেন, সেখানেও নজরদারি চালানো হবে।’’

কী ভাবে চলবে ওই নজরদারি?

Advertisement

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জনপ্রিয় পর্যটনস্থলগুলিতে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত জেলা প্রশাসন এবং স্বাস্থ্য দফতরের প্রতিনিধিরা থাকবেন। তাঁরা বিদেশি পর্যটকদের যাবতীয় নথিপত্র খতিয়ে দেখবেন। এমনকি, এ দেশের এয়ারপোর্টে নামার পরে তাঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার কাগজও খতিয়ে দেখা হবে। তেমন কেউ আক্রান্ত থাকলে তাঁকে সঙ্গে সঙ্গে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে নিয়ে যাওয়া হবে। তারপরে রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে কলকাতায় পাঠানো হবে।

করোনাভাইরাসকে ‘অতিমারি’ ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)। এ দেশেও লাফিয়ে বাড়ছে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা। এ রাজ্যে অবশ্য এখনও কারও ওই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর নেই। তবু সতর্কতা হিসেবে নানা পদক্ষেপ করছে রাজ্য প্রশাসন। বিদেশি পর্যটকেরা যাতে এখন আর এ দেশে আসতে না-পারেন, সে জন্য শুক্রবার থেকেই ভিসা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্র। তবু, যে সব বিদেশি পর্যটক ইতিমধ্যে এ দেশে চলে এসেছেন, তাঁদের মধ্যে কোনও আক্রান্ত যদি এ জেলায় চলে আসেন, তাই ওই বিশেষ সতর্কতা বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।

এ দিনের সচেতনতা শিবিরে জেলাশাসক ছাড়াও চুঁচুড়ার বিধায়ক অসিত মজুমদার, মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শুভ্রাংশু চট্ট্যোপাধ্যায়, হু-র প্রতিনিধি এবং জেলার বিভিন্ন পুরসভার চেয়ারম্যান, জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ, স্বাস্থ্যকর্মী এবং চিকিৎসকেরা উপস্থিত ছিলেন। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে জানানো হয়, জ্বর বা সর্দি-কাশি হয়েছে মানেই যে কেউ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত, তা ভাবার কোনও কারণ নেই। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জানান, অযথা আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। ওই ভাইরাস মোকাবিলায় যা যা পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন, করা হয়েছে। সতর্কতা হিসাবে কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে। অ্যালকোহলযুক্ত হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার দিয়ে বারবার হাত ধোয়া-সহ সেই সব নিয়ম নিয়েও শিবিরে আলোচনা হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement