ফাইল চিত্র
করোনা মোকাবিলার কাজে শৃঙ্খলা আনতে শুক্রবারেই হাওড়া জেলার ১৪টি ব্লকে গঠন করা হল টাস্ক ফোর্স। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির নেতৃত্বে গঠিত এই টাস্ক ফোর্সে থাকছেন বিডিও, বিএমওএইচ, থানার আইসি-ওসি, জয়েন্ট বিডিও এবং পঞ্চায়েত সমিতির জনস্বাস্থ্য সংক্রান্ত কর্মাধ্যক্ষ। জেলাশাসক মুক্তা আর্য জানিয়েছেন, সংক্রমণ রোধ করতে তৃণমূল স্তরে যাতে আরও ভাল ভাবে কাজ করা যায় সে জন্যই এই উদ্যোগ।
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, টাস্ক ফোর্সের অধীনে ব্লকের প্রতিটি পঞ্চায়েতের গ্রাম সংসদ এলাকায় কতজন বিদেশ বা ভিন্ রাজ্য থেকে আসছেন তার দৈনন্দিন তালিকা তৈরি করা হবে। সেই তালিকা ব্লক অফিসে এবং বিএমওএইচ-এর কাছে থাকবে। সেই তালিকা ধরে টাস্ক ফোর্স ঠিক করবে কাদের হোম কোয়রান্টিনে রাখা হবে, কাদের হাসপাতালের কোয়রান্টিনে। যাঁদের হোম কোয়রান্টিনে রাখা হবে তাঁদের উপরে নিয়মিত নজরদারি করা হবে। আশাকর্মী এবং অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের দিয়ে বাড়ি বাড়ি খোঁজ নেওয়া হবে। কারও সন্দেহজনক উপসর্গ থাকলে বিএমওএইচ-এর পরামর্শ অনুযায়ী তাঁর চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে। প্রতিটি ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে খুলতে হবে আইসোলেশন ওয়ার্ড। গ্রামবাসীদের নিয়ে তৈরি ১০-১৫ জনের গোষ্ঠী পরিচ্ছন্নতার কর্মশালা চালাবে। বাসস্ট্যান্ড এবং জেটিঘাটগুলিতে করা হবে স্বাস্থ্য শিবির। সচেতনতার জন্য লিফলেট বিলি থেকে শুরু করে মাইকে প্রচার করা হবে। কোয়রান্টিনে নিয়ে যাওয়াকে কেন্দ্র করে কোনও ব্যক্তির সঙ্গে যদি স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মীদের ঝামেলা হয় তা হলে সেখানে টাস্ক ফোর্স সরাসরি হস্তক্ষেপ করবে। স্বাস্থ্যশিবির বা সচেতনতামূলক প্রচারে পুলিশকে সঙ্গে রাখা হবে। প্রতি সপ্তাহে দু’বার করে টাস্ক ফোর্স নিজেদের মধ্যে বৈঠক করবে। তাতে কী কাজ হল তার পর্যালোচনা করে সেই রিপোর্ট পাঠাতে হবে জেলাশাসকের কাছে। শুধু ব্লকগুলিতেই নয়, হাওড়া এবং উলুবেড়িয়া পুরসভাতেও একই ভাবে গঠন করা হয় টাস্ক ফোর্স। দুই পুর এলাকায় বিদেশ বা ভিন্ রাজ্য থেকে আগতদের তালিকা তৈরি করা হবে ওয়ার্ডভিত্তিক।
আমতা-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সুকান্ত পাল বলেন, ‘‘আমাদের ব্লকে টাস্ক ফোর্স গঠন করা হয়েছে। শুক্রবারই আমরা প্রথম বৈঠক করেছি। সবাইকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিদেশ বা ভিন্ রাজ্য থেকে যাঁরা আসছেন, তাঁদের তালিকা তৈরি হচ্ছে।’’
শুক্রবার পর্যন্ত জেলায় মোট ৬৩৮ জনকে কোয়রান্টাইনে রাখা হয়েছে। তার মধ্যে উলুবেড়িয়া সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের কোয়রেন্টাইনে আছেন চার জন। বাকিরা হোম কোয়রান্টাইনে। এ ছাড়া সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে এক জন এবং হাওড়া জেলা হাসপাতালে এক জন করে ভর্তি আছেন আইসোলেশন ওয়ার্ডে। এর আগে সত্যবালা আইডি এবং হাওড়া জেলা হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা দু’জনের রক্ত পরীক্ষার জন্য নাইসেডে পাঠানো হয়েছিল। তাতে কিছু পাওয়া যায়নি বলে জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর।