প্রতীকী ছবি
করোনা-আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য হাওড়া জেলায় আরও একটি কোভিড হাসপাতাল চালু হচ্ছে। পাশাপাশি বাড়ানো হচ্ছে আরও দু’টি কোভিড হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা। এর ফলে, কোভিড-১৯ চিকিৎসার জন্য জেলায় আরও ৩০০টি নতুন শয্যা পাওয়া যাবে বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর।
উল্লেখ্য, এই মহূর্তে জেলায় মোট ৭টি কোভিড হাসপাতাল রয়েছে। যেগুলির মোট শয্যা সংখ্যা ১,২৫০। তিনশো বাড়লে সেই সংখ্যা হবে ১,৫৫০। নতুন কোভিড হাসপাতালটি চালু হচ্ছে বেলুড় শ্রমজীবী হাসপাতালে। এখানে খোলা হবে ১০০ শয্যার কোভিড হাসপাতাল। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভবানী দাস বলেন, ‘‘বেলুড় শ্রমজীবী হাসপাতালকে কোভিড হাসপাতাল করার জন্য স্বাস্থ্যভবনের অনুমতি চাওয়া হয়েছিল। অনুমতি মিলেছে।’’ অন্যদিকে বালিটিকুরি ইএসআই এবং উলুবেড়িয়া ইএসআই হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে। বর্তমানে দু’টি হাসপাতালেই ১০০টি করে শয্যা আছে। বাড়ানো হচ্ছে অতিরিক্ত ১০০ করে শয্যা। তবে পরিষেবা কবে থেকে চালু হবে, তা জানাতে পারেনি স্বাস্থ্য দফতর।
জেলায় প্রাতিষ্ঠানিক নিভৃতবাস কেন্দ্রগুলি গুটিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর। দফতরের এক পদস্থ কর্তা জানান, মূলত বাইরে থেকে আসা লোকজন এবং পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য কেন্দ্রগুলি করা হয়েছিল। এখন পরিযায়ী শ্রমিকদের আসা বন্ধ হয়েছে। এখন যাঁরা ফিরছেন, তাঁরা তুলনায় আর্থিক ভাবে স্বচ্ছল। তাঁদের গৃহ-নিভৃতবাসে থাকার কথা বলা হচ্ছে। তাঁরা প্রাতিষ্ঠানিক নিভৃতবাসে থাকতে চাইছেন না। জেলা স্বাস্থ্য দফতর জোর দিচ্ছে ‘সেফ হাউস’ তৈরিতে। এখন হাওড়ায় ‘সেফ হাউসের’ সংখ্যা ১৯। করোনার সামান্য উপসর্গ রয়েছে এমন রোগী এবং উপসর্গহীন যে সকল রোগীর বাড়িতে আইসোলেশনে থাকার যথেষ্ট জায়গা নেই, তাঁদের ‘সেফ হাউসে’ রাখা হচ্ছে। জেলার দু’টি বড় ‘সেফ হাউস’ রয়েছে বালিটিকুরি এবং ডুমুরজলা স্টেডিয়ামে। বাকিগুলি ছড়িয়ে ছিটিযে রয়েছে জেলার বিভিন্ন ব্লকে। সব মিলিয়ে এই মুহূর্তে জেলায় ‘সেফ হাউস’গুলির মোট শয্যা সংখ্যা ৯৯৮। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলার বিভিন্ন ব্লকের অনেক ‘সেফ হাউসে’ রোগীর চাপ তেমন নেই। যেমন, ঝামটিয়াতে আমতা ২ নম্বর ব্লকের ১৫ শয্যার ‘সেফ হাউসে’ গত এক মাসে একজন রোগীও আসেননি। আবার শ্যামপুর ২ ব্লকের ১৫ শয্যার ‘সেফ হাউসে’ জনা দশেক রোগী রয়েছেন।
মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, ‘‘বাড়িতেই উপসর্গহীনদের চিকিৎসা চলায় ‘সেফ হাউস’গুলিতে শয্যার তুলনায় রোগীর সংখ্যা কম। উপসর্গ দেখা দিলে তাঁদের কোভিড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তবু চিকিৎসায় যাতে কোনও ঘাটতি না থাকে, সেই লক্ষ্যে ‘সেফ হাউসে’র উপরে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।’’ জেলায় বর্তমানে কোভিড পজ়িটিভ রোগীর সংখ্যা ১,৯৭৯। গত সাতদিন ধরে গড়ে প্রতিদিন ১৮০ জন করে সংক্রমিত হচ্ছেন। তবে সুস্থ হওয়ার হার বাড়ছে বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের দাবি। দৈনিক সুস্থতার হার (৬৫ শতাংশ) গত সপ্তাহের তুলনায় (৬০ শতাংশ) বেড়েছে। তবে মৃত্যুর হার (সর্বোচ্চ দৈনিক ৩ শতাংশ) একই রয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের দাবি, করোনা-রোগীদের চিকিৎসায় ঘাটতি নেই। কোভিড হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা যেমন বাড়ানো হচ্ছে, তেমনই জোর দেওয়া হচ্ছে ‘সেফ হাউসে’র উপরে। তাঁদের আরও বক্তব্য, এখন দরকার সচেতনতা। মাস্ক পরা এবং পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখলে পরিস্থিতি জটিল হবে না।
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)