প্রহৃত মহিলা। —নিজস্ব চিত্র।
এত দিন করোনা রোগীদের হেনস্থার অভিযোগ উঠেছে পাড়া-পড়শিদের বিরুদ্ধে। এ বার করোনা আক্রান্তের বিরুদ্ধে পড়শিদের মারধর করার অভিযোগ উঠল। বিষয়টি থানা-পুলিশ পর্যন্ত গড়িয়েছে। বুধবার সন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটেছে হুগলির গুপ্তিপাড়ায়। অভিযুক্তের পরিবার অবশ্য অভিযোগ মানেননি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, সম্প্রতি গুপ্তিপাড়ার এক যুবক করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন। তিনি কলকাতা পুলিশের হোমগার্ড। গত ৭ অগস্ট তাঁকে ব্যান্ডেল ইএসআই কোভিড হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। বুধবার ছাড়া পান। অভিযোগ, হাসপাতাল থেকে ফিরে তিনি সটান প্রতিবেশীর বাড়িতে যান। ওই বাড়ির যুবককে ডাকতে থাকেন। ওই যুবকের অভিযোগ, ‘‘আমি বেরিয়ে এলে জামার কলার ধরে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয়। লাথি মারে। তার পরে মায়ের চোখে ঘুসি মারে। বলতে থাকে, আমরা নাকি ওঁর বাবা-মাকে খারাপ কথা বলেছি।’’ চেঁচামেচিতে পড়শিরা বেরিয়ে আসেন। ওই পুলিশকর্মীর ভাই এসে তাঁকে বাড়ি নিয়ে যান।
ঘটনার জেরে গ্রামে ক্ষোভ ছড়ায়। স্থানীয় ফাঁড়ির পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। গ্রামবাসীরা হোমগার্ডের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে নালিশ জানান। রাতেই প্রহৃত মহিলা ফাঁড়িতে লিখিত অভিযোগ করেন। বুধবার জিরাট হাসপাতালে তাঁর প্রাথমিক চিকিৎসা করানো হয়। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগের ভিত্তিতে জেনারেল ডায়েরি করে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
ওই হোমগার্ডের বাড়ির সামনে একটি মুদি দোকান আছে। প্রতিবেশীদের একাংশের দাবি, ওই যুবকের করোনার খবর জানার পরে আশাকর্মীর উপস্থিতিতে তাঁর বাবাকে বলা হয়, আপাতত যেন ওই দোকান খোলা না হয়। পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে তাঁদের বাড়ির সামনে দু’টি বাঁশ পুঁতে ফিতে দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়। বাড়ির সামনে সরকারি ট্যাপকলের মুখ প্লাস্টিক দিয়ে আটকে দেওয়া হয়। এতেই ওই যুবক ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন বলে অভিযোগ। গ্রামবাসীদের বক্তব্য, যাতে সংক্রমণ না ছড়ায়, সে জন্য সবাই মিলিত ভাবেই ওঁদের দোকান খুলতে নিষেধ করা হয়েছিল। ওঁদের পাশে থাকারও আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ভুল বুঝে ওই হোমগার্ড ওই বাড়িতে চড়াও হলেন।
অভিযুক্তের ভাইয়ের দাবি, ‘‘দাদার করোনা হওয়ায় কয়েক জন বাবা-মাকে খারাপ কথা বলে। দাদা হাসপাতাল থেকে ফিরে ওই বাড়িতে গিয়ে এর প্রতিবাদ করে। দাদা কাউকে মারেনি।’’
তবে, হাসপাতাল থেকে ফিরে যে ওই বাড়িতে তাঁর দাদার যাওয়া উচিত হয়নি, তা তিনি মানছেন।