প্রতীকী ছবি।
উভয় সঙ্কটে পড়েছেন ওঁরা।
মৃত্যুর পরে পরিবারের একজনের করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে। স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশমতো উলুবেড়িয়া-১ ব্লকের চণ্ডীপুর পঞ্চায়েতের চণ্ডীপুর ঘোষপাড়ার পাঁচ শিশু-সহ ওই পরিবারের ১৪ জন চার দিন ধরে গৃহ-নিভৃতবাসে রয়েছেন। কিন্তু তাঁদের অভিযোগ, প্রশাসনের কাছ থেকে কোনও সহযোগিতা মিলছে না। শিশুদের দুধ, ওষুধ এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর অভাব হচ্ছে। অথচ, তাঁরা বেরোতেও পারছেন না। প্রশাসনের নানা মহলে ফোন করে সাড়া মিলছে না বলেও তাঁদের অভিযোগ।
ওই পরিবারের এক জনের অভিযোগ, ‘‘পাছে কেউ কিছু বলেন, সেই ভয়ে আমরা বাইরে বেরোচ্ছি না। কিন্তু প্রশাসনের কারও দেখা নেই। প্রশাসনের টোল-ফ্রি ফোন নম্বরে সাড়া পাচ্ছি না। পঞ্চায়েতে ফোন করেছি। কেউ আসেননি। বিডিও-র নম্বরে ফোন করেও উত্তর মেলেনি। বাড়িও স্যানিটাইজ় করা হয়নি।’’ একই সঙ্গে ওই ব্যক্তির খেদ, ‘‘বাড়িতে বৃদ্ধা মা আছেন। প্রতিদিন তাঁর ওষুধ লাগে। কে এনে দেবে? ওষুধের অভাবে মা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।’’
ওই পরিবারের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ রাখা হয়নি, এমন অভিযোগ মানেননি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের এক আধিকারিক। তাঁর দাবি, ‘‘প্রতিদিন স্বাস্থ্যকর্মী এবং আশাকর্মীরা নিভৃতবাসে থাকা মানুষজনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তাঁদের খোঁজখবর নেন। ওই পরিবারের সঙ্গে তাঁরা নিয়মিত সাক্ষাৎ করেন। কিন্তু ওই পরিবারের সদস্যেরা কোনও সমস্যার কথা জানাননি। আমরা আবার খোঁজখবর নিচ্ছি। ওঁদের সমস্যা গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে।’’
তিনি ওই পরিবারের কোনও ফোন পাননি বলে দাবি করেছেন পঞ্চায়েত প্রধান রেজাউল হক মোল্লা। তিনি বলেন, ‘‘শুনেছিলাম ঘোষপাড়ার একজন মারা গিয়েছেন। কিন্তু তিনি যে সংক্রমিত ছিলেন বা তাঁর পরিবার যে গৃহ-নিভৃতবাসে আছে, তা কেউ জানাননি। খোঁজ নিয়ে পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে যতটা সম্ভব ওই পরিবারের পাশে থাকার চেষ্টা করব।’’ একই আশ্বাস দিয়ে বিডিও কার্তিকচন্দ্র রায়ও দাবি করেছেন, ওই পরিবারের কোনও ফোন পাননি।
স্বাস্থ্য দফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২২ জুলাই ওই পরিবারের এক জনের জ্বর হয়। ২৫ জুলাই চণ্ডীপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে তাঁর লালারসের নমুনা দেন পরিবারের লোকজন। ২৬ জুলাই জ্বরে আক্রান্ত ব্যক্তি মারা যান। পরের দিন জানা যায়, তিনি সংক্রমিত হয়েছিলেন। এরপরেই তাঁর পরিবারের সকলকে গৃহ-নিভৃতবাসে থাকতে বলা হয়। বৃহস্পতিবার পরিবারের পাঁচ জন ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে লালারসের নমুনা দিয়ে আসেন।
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)