মনীষীদের মাঝে মমতার ছবি, বিতর্ক পান্ডুয়ায়

কয়েক মাস আগে কেশপুরে তৃণমূলের একটি কার্যালয়ে সুভাষচন্দ্র, বিবেকানন্দ, ভগৎ সিংহের মতো মনীষীদের ছবির মাঝে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি ঠাঁই পাওয়ায় বিরোধীরা প্রশ্ন তুলেছিলেন, ‘‘মমতা কি মনীষী!’’

Advertisement

সুশান্ত সরকার

পান্ডুয়া শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৪:২৩
Share:

কেন্দ্রবিন্দু: এই ছবি নিয়েই বিতর্ক। নিজস্ব চিত্র

ফের মনীষীদের ছবির সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি নিয়ে বিতর্ক।

Advertisement

কয়েক মাস আগে কেশপুরে তৃণমূলের একটি কার্যালয়ে সুভাষচন্দ্র, বিবেকানন্দ, ভগৎ সিংহের মতো মনীষীদের ছবির মাঝে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি ঠাঁই পাওয়ায় বিরোধীরা প্রশ্ন তুলেছিলেন, ‘‘মমতা কি মনীষী!’’ প্রায় একই রকম প্রশ্ন এ বার উঠল পান্ডুয়ায় ৩০ তম মনীষী স্মরণে আয়োজিত ‘মিলনমেলা’য়। রবিবার এখানেও দেখা গেল, মঞ্চের পিছনে গাঁধীজি, বিবেকানন্দ, সুভাষচন্দ্র, রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, শরৎচন্দ্রের পাশে রয়েছে মমতার ছবিও!

রবিবার দুপুরে পান্ডুয়া শশিভূষণ সাহা উচ্চ বিদ্যালয়ে ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়। মিলনমেলা কমিটিই উদ্যোক্তা। কমিটির সভাপতি হলেন পান্ডুয়া পঞ্চায়েত সমিতির মৎস্য কর্মাধ্যক্ষ তৃণমূলের অসিত চট্টোপাধ্যায়। অনুষ্ঠানে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে ব্লকের কৃতীদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়। ছিলেন রাজ্যের সংখ্যালঘু দফতরের মন্ত্রী শেখ গিয়াসউদ্দিন মোল্লা, জেলা তৃণমূল সভাপতি দিলীপ যাদব, পান্ডুয়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি চম্পা হাজরা এবং জেলা পরিষদের সদস্যেরাও। কন্যাশ্রী, সবুজ সাথী-সহ স্কুল পড়ুয়াদের জন্য রাজ্য সরকারের নানা প্রকল্পের আলোচনা করেন মন্ত্রী।

Advertisement

শ্রোতাদের আসনে অনেক অভিভাবক, শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং শহরের প্রবীণ মানুষেরাও ছিলেন। তাঁদের একাংশের অভিযোগ, এমন অনুষ্ঠানে মনীষীদের নিয়ে আলোচনা না-করে শাসকদলের উন্নয়নের প্রচার করা হয়েছে। ছাত্রছাত্রীদের সংবর্ধনা দেওয়ার নামে শাসকদলের গুণগান শোনানো হয়। কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিরোধীরা। বিজেপির পান্ডুয়া মণ্ডলের সভাপতি অশোক দত্তের অভিযোগ, ‘‘এ ভাবে বাংলার মনীষীদের অপমান করা হল। তাঁদের ছবির সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি দেওয়া হয় কী করে? পান্ডুয়াবাসী হিসেবে এটা আমাদের লজ্জা। এটা বন্ধ হওয়া উচিত।’’ পান্ডুয়ার সিপিএম বিধায়ক আমজাদ হোসেন বলেন, ‘‘দুর্নীতিগ্রস্ত সরকারের কাছ থেকে মানুষ মুখ ঘুরিয়েছেন। তাই মনীষীদের ছবির পাশে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি দিয়ে প্রচার করা হচ্ছে।’’

উদ্যোক্তারা এর মধ্যে আপত্তির কিছু দেখছেন না। ‘মিলমেলা’র সম্পাদক সম্পাদক সঞ্জীব ঘোষের দাবি, ‘‘মনীষীদের সম্মান করি। পশ্চিমবঙ্গের নব রূপকার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। তাই মুখ্যমন্ত্রীর ছবি ওখানে রাখা হয়েছে।’’ আর কমিটির সভাপতি অসিতবাবুর দাবি, ‘‘ভুল করিনি। মুখ্যমন্ত্রীর অনুপ্রেরণায় বাংলার ছাত্রছাত্রীদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়। রাজ্যের সরকারি দফতরে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি আছে। তাই অনুষ্ঠানে তাঁর ছবি রেখেছি।’’ খোলা মঞ্চ কি কোনও সরকারি দফতর? নাকি এটা সরকারি অনুষ্ঠান? প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement