তারকেশ্বরের সম্পত্তি বেদখলের অভিযোগ

মহন্তের চিঠি মুখ্যমন্ত্রীকে

সম্প্রতি মন্দির কর্তৃপক্ষের তরফে মহারাজের ওই চিঠি নবান্নে পৌঁছে দেওয়া হয়। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে বেদখল হওয়ায় ওই সব সম্পত্তি পুনরুদ্ধারের ব্যবস্থা করারও আবেদন জানিয়েছেন তিনি।

Advertisement

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

তারকেশ্বর শেষ আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০১৮ ০১:৪৫
Share:

বিতর্কে: মন্দিরের সম্পত্তি দখলের অভিযোগ উঠেছে এই দোকানগুলির বিরুদ্ধে। ছবি: দীপঙ্কর দে

শৈব্যতীর্থ তারকেশ্বর এস্টেটের বহু সম্পত্তিই বেদখল হয়ে গিয়েছে, এই অভিযোগ তুলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হলেন সেখানকার মহন্ত মহারাজ সুরেশ্বর আশ্রম।

Advertisement

সম্প্রতি মন্দির কর্তৃপক্ষের তরফে মহারাজের ওই চিঠি নবান্নে পৌঁছে দেওয়া হয়। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে বেদখল হওয়ায় ওই সব সম্পত্তি পুনরুদ্ধারের ব্যবস্থা করারও আবেদন জানিয়েছেন তিনি। কিছুদিন আগেই তারকেশ্বর উন্নয়ন পর্ষদের (টিডিএ) কাজকর্ম নিয়ে চেয়ারম্যান তথা পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন মহারাজ। মন্ত্রীর কাছেও তিনি একই আবেদন জানান।

মহারাজ বলেন, ‘‘মন্দিরের বহু সম্পত্তিই বেহাত হয়ে গিয়েছে। মন্দিরের জমিতে যত্রতত্র দোকানঘর তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। ওই সম্পত্তি জনস্বার্থে ব্যবহার হলে আপত্তি নেই। কিন্তু বহু ক্ষেত্রেই তা হচ্ছে না। ব্যক্তি স্বার্থে ব্যবহৃত হচ্ছে। তাতেই আপত্তি। সেই কারণেই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানিয়েছি।’’ একই সঙ্গে তাঁর ক্ষোভ, ‘‘বিধি অনুযায়ী এখানকার তিনটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালন সমিতির সভাপতির পদে মহন্তের থাকার কথা। কিন্তু সেই বিধিও মানা হয়নি। মন্ত্রীকে সে কথাও জানিয়েছি।’’

Advertisement

পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘টিডিএ হওয়ার পরে তারকেশ্বর মন্দিরের যে স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি রয়েছে, সেগুলির তালিকা করা হচ্ছে। রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রে আশু ব্যবস্থা কী নেওয়া যায়, সে ব্যাপারে পদক্ষেপ করা হবে। এ নিয়ে মহন্ত মহারাজের সঙ্গে কথা হয়েছে।’’

মন্দির কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, ওই চত্বরে এক সময় দু’বিঘারও বেশি জমিতে ফুল-ফলের বাগান ছিল। সেই ফুল-ফল মন্দিরের পুজোয় ব্যবহার হতো। কিন্তু অনুমতি না নিয়ে বাম আমলেই পর্যটন দফতর একটি টুরিস্ট লজ তৈরি করে ফেলে। বাগান উধাও হয়ে যায়। মন্দিরের জমিতে শিশু ক্লিনিক, সুলভ শৌচালয় রয়েছে। কিন্তু শৌচালয়ের সামনে গত কয়েক বছরে অন্তত ৩০টি দোকানঘর বসে যায়। সেই সব দোকান-ঘর থেকে মোটা টাকা লিজ নেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া, মন্দির এলাকাতেই এক সময় একটি পুকুরে প্রচুর পদ্ম ও শালুক ফুল হতো। পুকুরটি ‘পদ্মপুকুর’ নামেই পরিচিত। সেই ফুল পুজোর কাজে লাগত। কিন্তু সেই পুকুর এখন নষ্ট হয়ে গিয়েছে। পুকুর পাড়ে বেআইনি নির্মাণ গড়ে উঠেছে বলে অভিযোগ।

কিন্তু মন্দিরের সম্পত্তি এ ভাবে দখল করছে কারা? এ নিয়ে মহন্ত মহারাজ কোনও মন্তব্য করতে চাননি। মন্দির কর্তৃপক্ষেরই একাংশের অভিযোগ, শাসকদলেরই কিছু নেতা ওই দখলে মদত দিয়েছেন। অভিযোগ মানতে চাননি তারকেশ্বরের পুরপ্রধান স্বপন সামন্ত। মন্দিরের সম্পত্তি বেদখল হওয়া নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমাকে কিছুই জানানো হয়নি। তেমন হলে পুরসভা থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement