ছবি এপি।
আমপানে যাঁদের বাড়ি ভেঙে গিয়েছে তাঁদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করল হাওড়া জেলা প্রশাসন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, যাঁদের বাড়ি ভেঙে গিয়েছে তাঁদের ২০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। পরে ঠিক হয়, এই ২০ হাজার টাকা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে একশো দিনের কাজের প্রকল্পের ৯০ দিনের মজুরিও ক্ষতিগ্রস্তদের হাতে তুলে দেওয়া হবে। এর অর্থ হল, আরও প্রায় ১৮ হাজার টাকা তিনি পাবেন। সব মিলিয়ে মোট ৩৮ হাজার টাকা পাবেন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি।
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। কয়েকদিনের মধ্যেই ক্ষতিগ্রস্তরা টাকা পেয়ে যাবেন। ক্ষতিগ্রস্তদের নাম এবং ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর নিয়ে নেওয়া হয়েছে। তাঁদের অ্যাকাউন্টে সরাসরি টাকা দিয়ে দেওয়া হবে বলে জেলা প্রশাসনের এক পদস্থ কর্তা জানান।
আমপানে হাওড়া জেলায় লক্ষাধিক বাড়ির ক্ষতি হয়। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তিনটি তালিকা করা হয়। পুরো ভেঙে যাওয়া, বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এবং আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির তালিকা। এর মধ্যে পুরো ভেঙে গিয়েছে প্রায় ৯ হাজার বাড়ি। আপাতত তাঁরাই ক্ষতিপূরণের টাকা পাবেন বলে জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর। বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এবং আংশিক ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণের বিষয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়নি বলে জেলা প্রশাসনের কর্তারা জানান।
এ দিকে বাড়ির ক্ষতিপূরণের তালিকা তৈরি নিয়ে পক্ষপাতদুষ্টতার অভিযোগ করেছেন ক্ষতিগ্রস্তদের একাংশ। অভিযোগ উঠেছে তিন ধরনের ক্ষতির তালিকা তৈরির ক্ষেত্রেই। অভিযোগ, পঞ্চায়েতের তরফ থেকে ঝড়ের পরে যে তালিকা তৈরি হয়েছে তাতে বাড়ির প্রকৃত ক্ষতি হয়েছে এমন ব্যক্তিদের অনেকের নাম নেই। অভিযোগ, পঞ্চায়েতের কর্তারা পছন্দমতো তালিকা তৈরি করেছেন। এমনকী তাঁরা পঞ্চায়েতের কাছে বাড়ির ছবি তুলে ক্ষতিপূরণের লিখিত আবেদন জমা দিতে গেলেও তা নেওয়া হয়নি বলে অনেকের অভিযোগ। তাঁদের সন্দেহ শেষ পর্যন্ত তাঁরা ক্ষতিপূরণের টাকা পাবেন না।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, ঝড়ের পরেই পঞ্চায়েত, বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী এবং ব্লক প্রশাসনের প্রতিনিধিরা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে তালিকা তৈরি করেছেন। ফলে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের নাম বাদ যাওয়ার সম্ভাবনা কম। তবে কেউ যদি সুনির্দিষ্ট তথ্য দিয়ে যদি তাঁদের কাছে অভিযোগ জানান, তা খতিয়ে দেখা হবে বলে জেলা প্রশাসনের কর্তারা জানিয়েছেন।