Strike

উড়ল ফুল, ভাঙা পড়ল মিষ্টির হাঁড়ি

হাওড়ায় এ দিন সেই ডাক উপেক্ষা করে যাঁরা পথে নেমেছিলেন তাঁদের মিষ্টিমুখ করাতে চেয়েছিল বিজেপি। সেই মতো রাস্তায় মিষ্টির হাঁড়ি হাতে নেমেছিলেন বিজেপি কর্মীরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হাওড়া শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০২০ ০২:৪৩
Share:

বিজেপির তরফে পুলিশকে মিষ্টি খাওয়ানো হচ্ছে (নীচে)। নিজস্ব চিত্র

হাটে হাঁড়ি ভাঙল। মিষ্টির হাঁড়ি।

Advertisement

বাম শিল্প সংগঠনগুলি এনআরসি ও নয়া নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় বুধবার ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল। হাওড়ায় এ দিন সেই ডাক উপেক্ষা করে যাঁরা পথে নেমেছিলেন তাঁদের মিষ্টিমুখ করাতে চেয়েছিল বিজেপি। সেই মতো রাস্তায় মিষ্টির হাঁড়ি হাতে নেমেছিলেন বিজেপি কর্মীরা। পথচারী ও গাড়িচালকদের সেই মিষ্টি খাওয়ানোর সময়ে পুলিশের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয় তাঁদের। তাতে রাস্তায় পড়ে ফেটে গেল মিষ্টির হাঁড়ি। রাস্তায় গড়াগড়ি খাওয়া মিষ্টি ঠোকরাতে উড়ে এল কাক। যা নিয়ে তৃণমূলের এক নেতার কৌতুকপূর্ণ মন্তব্য, ‘‘আবারও হাটে হাঁড়ি ভাঙল বিজেপির।’’

ধর্মঘটকে ঘিরে বুধবার রাজ্যের বিভিন্ন জেলা কিংবা কলকাতাতেও বিক্ষিপ্ত অশান্তি হয়েছে। মারমুখী ভূমিকায় অনেক ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে বাম কর্মী-সমর্থকদের। কিন্তু হাওড়া শহরে তাঁদের গাঁধীগিরি করতেই দেখা গিয়েছে। ধর্মঘটের বিরোধিতা করা বিজেপির লোকজনকেও দেখা গিয়েছে পথচারীদের মিষ্টি খাওয়াতে।

Advertisement

বুধবার সকালে বাস নিয়ে রাস্তায় বেরিয়েছিলেন হাওড়া-আমতা রুটের চালক রফিকুল ইসলাম। শানপুর মোড়ে ধর্মঘটের সমর্থনে বেরোনো বাম শিল্প সংগঠনের মিছিল থেকে বাসচালক রফিকুলের আসনের দিকে ছুড়ে দেওয়া হল এক গুচ্ছ ফুলের পাপড়ি। ধর্মঘটকারীরা তার পরে জানালেন, যাঁদের জন্য ধর্মঘট, তাঁরা বিষয়টি না বুঝেই রাস্তায় বেরিয়েছেন। তাই ফুল ছুড়ে তাঁদের বিবেক জাগানোর চেষ্টা করছেন তাঁরা।

আবার রাস্তায় দেখা গেল বিজেপি নেতা কর্মীদের পথচারীদের মিষ্টি খাওয়ানোর ছবি। এ দিন বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ জনা চল্লিশ বিজেপি সমর্থক হাওড়া ময়দানে জড়ো হয়েছিলেন ধর্মঘটের বিপক্ষে মিছিল করার জন্য। মিছিল শুরুর আগে তাঁরা স্থানীয় বঙ্গবাসী মোড়ে জড়ো হন মিষ্টির হাঁড়ি নিয়ে। ধর্মঘট উপেক্ষা করে রাস্তায় বেরোনো পথচারী ও গাড়িচালকদের তাঁরা মিষ্টি খাইয়ে স্বাগত জানানোর চেষ্টা করলে বিশাল পুলিশ বাহিনী তাঁদের বাধা দেয়। ঘটনাকে কেন্দ্র করে তাঁরা পুলিশের সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন। তাতে মিষ্টির হাঁড়ি রাস্তায় পড়ে ভেঙে যায়। ওই ঘটনায় পুলিশ আট জন বিজেপি কর্মীকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে গিয়ে পরে ছেড়ে দেয়।

ওই দুই ব্যতিক্রমী ঘটনা ছাড়া এ দিন হাওড়ায় তেমন কোনও বড় ধরনের গোলমাল হয়নি। সকাল থেকে হাওড়া স্টেশন চত্বরে ট্যাক্সির সংখ্যা কম থাকলেও সরকারি বাসের ব্যবস্থা ছিল। পরে বেলার দিকে ট্যাক্সি চলাচলও স্বাভাবিক হয়ে যায়। তবে রাস্তায় লোকজন কম থাকায়, সকালের দিকে বিভিন্ন স্টেশনে অবরোধ হওয়ায় এবং হাওড়া স্টেশনে যাত্রী কম থাকায় হাওড়া ফেরিঘাটও এ দিন ছিল অন্য দিনের তুলনায় ফাঁকা। তবে বেলা ১১টার পরে ট্রেন চলাচল কিছুটা স্বাভাবিক হলে হাওড়ায় যাত্রীর সংখ্যা

বাড়তে থাকে।

ধর্মঘটের জেরে এ দিন হাওড়ার সমস্ত কেন্দ্রীয় সরকারি অফিস ও রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্ক ছিল বন্ধ। রাজ্য সরকারি অফিসগুলিতে উপস্থিতির হার ছিল অন্য দিনের মতোই। যানবাহন কিছুটা কম থাকায় রাস্তাঘাট ছিল অনেকটা ফাঁকা। হাওড়ার দাশনগর, ইছাপুর ও কদমতলা শিল্পাঞ্চল ছিল স্বাভাবিক।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement