প্রতীকী ছবি।
পুর-কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে অস্থায়ী সাফাইকর্মীদের কর্মবিরতি উঠে গেল বৈদ্যবাটিতে। মজুরি বাড়ানোর দাবিতে গত মঙ্গলবার থেকে কর্মবিরতি শুরু হয়েছিল। বৃহস্পতিবার পুরপ্রধান অরিন্দম গুঁইন আন্দোলনকারী সাফাইকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করেন। তিনি আশ্বাস দেন, অস্থায়ী সাফাইকর্মীদের দৈনিক ২০ টাকা এবং গাড়ি চালকদের মজুরি দৈনিক ৩০ টাকা করে বাড়ানো হবে। ওই আশ্বাস পেয়ে সকলে কাজে যোগ দেন।
পুরসভা সূত্রের খবর, পুর-এলাকায় শ’তিনেক অস্থায়ী সাফাইকর্মী রয়েছেন। তাঁদের ক্ষোভ, দৈনিক মাত্র ১২০ টাকায় তাঁদের কাজ করতে হয়। বেশ কিছু দিন ধরেই ওই টাকা বাড়ানোর দাবি করে আসছিলেন তাঁরা। কিন্তু পুর-কর্তৃপক্ষ তাতে আমল দেননি বলে অভিযোগ। দাবি আদায়ের জন্য শেষ পর্যন্ত কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আন্দোলনকারীদের তরফে দাবি জানানো হয়, সাফাইকর্মীদের দৈনিক দু’শো টাকা এবং গাড়ি চালকদের দৈনিক আড়াইশো টাকা দিতে হবে। সাফাইকর্মীদের একাংশ কর্মবিরতি শুরু করায় শহরে তার প্রভাব পড়ছিল। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ ছড়াচ্ছিল সাধারণ মানুষের মধ্যেও।
বৃহস্পতিবার সংবাদমাধ্যমে এই খবর প্রকাশের পরই খোদ পুরপ্রধান আসরে নামেন। তাঁর আশ্বাসে বর্ধিত ২০ টাকাতেই কাজে যোগ দিতে সম্মত হন আন্দোলনকারীরা। পরে পুরপ্রধান বলেন,‘‘বিক্ষিপ্ত ভাবে কিছু সাফাইকর্মী কাজ বন্ধ করেছিলেন। তবে সমস্যা মিটে গিয়েছে। দুর্গাপুজোর আগেই, আগামী অগস্ট মাস থেকে বর্ধিত মজুরি দেওয়া হবে।’’
যদিও সাফাইকর্মীদের বক্তব্য, মাত্র ২০ টাকা বাড়ানোয় তাঁদের সমস্যা পুরোপুরি মিটবে না। পুরপ্রধানের বক্তব্য, ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল আরবান এমপ্লয়মেন্ট স্কিম’-এ ওই শ্রমিকদের কাজে নেওয়া হয়েছিল। সরকারি নিয়মেই তাঁদের মজুরি দেওয়া হয়। সাফাইকর্মীদের টাকা বাড়ানোর বিষয়টি আগে থেকেই তাঁদের চিন্তাভাবনার মধ্যে ছিল। আপাতত ২০ টাকা বাড়ানো হল। পরবর্তীকালে প্রয়োজন হলে বিষয়টি সরকারের গোচরে আনা হবে।
পুরপ্রধান যাই দাবি করুন বৈদ্যবাটির লাগোয়া ভদ্রেশ্বর পুরসভায় কিন্তু অনেকটা টাকা বেশি বেতন দেওয়া হয় একই কাজ করা কর্মীদের। ভদ্রেশ্বরে সাফাইকর্মীরা দৈনিক ২০০ টাকা করে এবং গাড়ির চালকেরা প্রতিদিন পান ২১৫ টাকা করে। বস্তুত বৈদ্যবাটি পুরসভার সাফাইকর্মীদের ক্ষোভের অন্যতম কারণ পাশের অন্য পুরসভার সঙ্গে তাঁদের এই বেতন বৈষম্য।
বৈদ্যবাটি পুরসভার কর্তারা অবশ্য দাবি করেছেন, তাঁদের সব সাফাইকর্মী ব্যাঙ্কের মাধ্যমে বেতন পান। প্রত্যেকেরই এটিএম কার্ড আছে। পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, এলাকায় কাজের চাপ থাকলেও বাইরে থেকে শ্রমিক নেওয়া হয় না। ওই কর্মীদের ওভারটাইম দিয়ে কাজ করানো হয়, যাতে তাঁরা বাড়তি টাকা রোজগার করতে পারেন। ভদ্রেশ্বর পুরসভার চেয়ারম্যান মনোজ উপাধ্যায় বলেন,‘‘আমরা পুজোর সময় ১৩০০ টাকা বোনাস দিই। যে সব কর্মীরা অগ্রিম টাকা চান তাঁদের ১০০০ টাকা করে দেওয়া হয়।’’