পুজোর আবহেও অশান্তি হুগলিতে

তৃণমূল-বিজেপি গোলমাল দুই এলাকায়

বৃহস্পতিবার রাতে খানাকুলের চক্রপুর বাজারে দু’দলের যে গোলমাল শুরু হয়েছিল, তা গড়াল শনিবার দুপুর পর্যন্ত। চক্রপুর ছাড়াও তেতে উঠল পাশের নন্দনপুর এবং রাজহাটি গ্রাম। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তিন গ্রামেই শুরু হয় পুলিশি টহল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৩:১৩
Share:

প্রতীকী ছবি।

পুজো এসে গেল। কিন্তু হুগলির নানা প্রান্তে তৃণমূল-বিজেপি কাজিয়ায় ছেদ পড়ল না। শুক্রবার তারকেশ্বরে অশান্তি হল। খানাকুলেও তিন দিন ধরে গোলমাল চলল। দু’জায়গায় জখম হয়েছেন দু’দলের কয়েকজন। গ্রেফতার হয়েছেন তিন জন।

Advertisement

বিজেপি কর্মী রমেশ বেরা শুক্রবার রাতে তারকেশ্বরের চাঁপাডাঙার বটতলার কাছে আক্রান্ত হন। রাস্তা থেকে তাঁকে টেনে নিয়ে গিয়ে একটি ঘরে আটকে কয়েকজন তৃণমূল কর্মী মারধর করে তাঁর মাথা ফাটিয়ে দেয় এবং আগ্নেয়াস্ত্র বের করে খুনের হুমকি দেয় বলে অভিযোগ। ঘটনায় পুরশুড়া ব্লক যুব তৃণমূল সভাপতি খোকন মল্লিক এবং তারকেশ্বর ব্লক তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি লাল্টু চট্টোপাধ্যায় জড়িত বলে রমেশের অভিযোগ। তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি কর্মী হিসেবে চাঁপাডাঙা এলাকায় সরকারি কাজে দুর্নীতির প্রতিবাদ করি। তাই লাল্টু-খোকনরা মারধর করল।’’

তৃণমূল অভিযোগ অস্বীকার করেছে। খোকনের পাল্টা অভিযোগ, ‘‘রমেশই ৬ জনকে নিয়ে আমার দোকানে গিয়ে ৫০ হাজার টাকা দাবি করে। আমি তখন দোকানে ছিলাম না। কর্মীরা টাকা দিতে অস্বীকার করলে ওরাই মারধর করে। দোকান থেকে ৩৫০০ টাকাও লুট করে।’’ একই অভিযোগ লাল্টুরও। খোকনের দোকানের এক কর্মচারীর অভিযোগের ভিত্তিতে ওই রাতেই পুলিশ শেখ গুলজার নামে এক জনকে গ্রেফতার করে। শনিবার বিকেল রমেশের তরফে থানায় কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি বলে পুলিশ জানিয়েছে। ধৃত গুলজারকে শনিবার চন্দননগর আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক তাঁকে ১৪ দিন জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।

Advertisement

বৃহস্পতিবার রাতে খানাকুলের চক্রপুর বাজারে দু’দলের যে গোলমাল শুরু হয়েছিল, তা গড়াল শনিবার দুপুর পর্যন্ত। চক্রপুর ছাড়াও তেতে উঠল পাশের নন্দনপুর এবং রাজহাটি গ্রাম। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তিন গ্রামেই শুরু হয় পুলিশি টহল।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে চক্রপুর বাজারে শেখ বাদশা এবং সুজন দাস নামে দুই বিজেপি কর্মীকে মারধরের অভিযোগ ওঠে জনাছয়েক তৃণমূল কর্মীর বিরুদ্ধে। শেখ বাদশাকে খানাকুল গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। এরই পাল্টা হিসেবে শুক্রবার রাতে ওই বাজারে হানা দিয়ে অভিযুক্ত এক তৃণমূল কর্মীকে লাঠি-বাঁশ দিয়ে মারধর এবং তাঁর দোকানের মালপত্র নষ্ট করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে বিজেপির বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় অভিযুক্ত রাজহাটির রমেশ দাস এবং বচ্চন কারক নামে দুই বিজেপি কর্মীকে শনিবার সকালে গ্রেফতার করে পুলিশ। দুপুরে নন্দনপুরে বিজেপির একটি দলীয় কার্যালয় ভাঙচুরের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। তৃণমূল অভিযোগ মানেনি।

অশান্তির জন্য তৃণমূলকে দায়ী করে বিজেপির আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিমান ঘোষের অভিযোগ, “তৃণমূলের যুবনেতা নজিবুল করিমের নেতৃত্বে এলাকায় অশান্তি সৃষ্টি করা হচ্ছে। পুলিশও সেই মিথ্যা অভিযোগের ভিত্তিতে আমাদের দু’জনকে ধরেছে। ওরা আমাদের কার্যালয় ভেঙেছে।’’

খানাকুলের যুব তৃণমূল নেতা নজিবুল করিমের দাবি, ‘‘চক্রপুরে বিজেপির ছেলেরা দল এবং নেত্রীর নামে গালাগাল করায় প্রতিবাদ করা হয়েছিল। কিন্তু ওরা আমাদের এক জনকে মেরেছে। ওদের যে কার্যালয়ে ভাঙচুরের কথা বলা হচ্ছে তা স্থানীয় একজনের দখলে থাকা পূর্ত দফতরের জায়গা। বিজেপি সেখানে বাঁশ পুঁতে ছিল। তা মানুষই উপড়ে দিয়েছেন।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement