প্রতীকী ছবি।
পেশার তাগিদে বা অন্য কারণে ছেলেমেয়েরা বাইরে থাকায় বহু বৃদ্ধ, বৃদ্ধাকে আজকাল বাড়িতে একাই থাকতে হচ্ছে। একা থাকার জন্য নানা সমস্যায়ও পড়তে হচ্ছে তাঁদের। সেই সমস্যা সমাধানে এবার এগিয়ে এল পুলিশ। একাকী প্রবীণদের সাহায্যে অ্যাপ আনছে চন্দননগর কমিশনারেট।
অনেক ক্ষেত্রে প্রবীণ দম্পতি বা একাকী বৃদ্ধ, বৃদ্ধাকে নিশানা করছে দুষ্কৃতী দল। কলকাতা ও শহরতলিতে সম্প্রতি এরকম বেশ কয়েকটি ঘটনাও ঘটেছে। আগাম খবর নিয়ে বাড়িতে হানা দিচ্ছে দুষ্কৃতীরা। জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি বহু ক্ষেত্রে প্রাণে মেরে ফেলাও হচ্ছে তাঁদের। অনেক ক্ষেত্রে আবার একা থাকার ফলে অসুস্থ হলে দেখার কেউ থাকছে না। বাড়িতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে একা বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে, এমন ঘটনাও ঘটেছে। পুলিশ, প্রতিবেশিরা দরজা ভেঙে তাঁদের দেহ উদ্ধার করেছেন।
এই পরিস্থিতিতে একাকী বৃদ্ধ, বৃদ্ধার পাশে দাঁড়াতে অ্যাপ আনছে পুলিশ। চন্দননগরের কমিশনার হুমায়ুন কবীরের উদ্যোগে তৈরি হচ্ছে এই অ্যাপ। কোনওরকম সমস্যায় পড়লে অ্যাপের মাধ্যমে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবেন একাকী বৃদ্ধরা। অ্যাপের পাশাপাশি থাকছে হেল্পলাইন নম্বরের ব্যবস্থাও।
ইতিমধ্যেই কমিশনারেটের সাতটি থানাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এলাকায় যে সব বয়স্ক মানুষেরা একা থাকেন তাঁদের তালিকা তৈরি করতে। পুলিশ তাঁদের ফোন নম্বর সংগ্রহের কাজ শুরু করেছে। তাঁদের কাছে পুলিশের ফোন নম্বর পৌঁছে দেওয়া হবে। জরুরি কোনও সমস্যায় পড়লে সেই নম্বরে ফোন করতে পারবেন তাঁরা। চুরি,ডাকাতির পাশাপাশি রাত-বিরেতে শারীরিক সমস্যায়ও পাশে দাঁড়াবে পুলিশ। ব্যবস্থা করা হবে অ্যাম্বুলেন্স, চিকিৎসকের।
কমিশনার হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘‘মানুষের বয়স হলে শারীরিক ভাবে দুর্বল হয়ে পড়েন। মনটাও অনেক ক্ষেত্রে দুর্বল হয়ে আসে। তার উপর বাড়িতে নির্ভর করার মত কেউ না থাকলে সমস্যা আরও বাড়ে। প্রবীণদের এই সমস্যার কথা চিন্তা করেই আমরা একটি অ্যাপ তৈরি করছি। ফোন নম্বরও থাকছে। দিনের যে কোনও সময় বয়স্করা তাঁদের সমস্যার কথা জানালে, তা সমাধানের সাধ্যমত চেষ্টা করা হবে।’’ প্রবীণদের পাশাপাশি পরবর্তীকালে নারী সুরক্ষার ক্ষেত্রেও অ্যাপটি ব্যবহার করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান তিনি।
পুলিশের এই প্রচেষ্টাকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন এলাকাবাসী। চুঁচুড়ার বাসিন্দা শিক্ষক সনৎ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘খুবই ভাল উদ্যোগ। একটা বয়সের পর মানুষ নির্ভরতা খোঁজে। বাড়িতে কেউ না থাকলে সমস্যা বাড়ে। সেই জায়গায় পুলিশ যদি পাশে এসে দাঁড়ায়, তাহলে তো খুবই ভাল।’’