ঝাপসা ‘চোখ’-এ নজরদারি

হাওড়া সিটি পুলিশের কমিশনার গৌরব শর্মা বলেন, ‘‘প্রতিটি এলাকাতেই নজরদারির জন্য আরও সিসি ক্যামেরা লাগানোর প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে। বেলুড়-বালিতেও সেই প্রকল্পেই সিসি ক্যামেরা লাগানো হবে।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০১৯ ০১:৫৯
Share:

প্রতীকী ছবি।

নজরদারির ‘চোখ’ কোথাও থাকলেও তার দৃষ্টি ঝাপসা। কোথাও আবার পর্যাপ্ত চোখের অভাবে নজরদারির কাজ ঠিক মতো হচ্ছে না।

Advertisement

এমনই সমস্যায় জেরবার হাওড়া পুলিশ কমিশনারেটের বালি ও বেলুড় থানা এলাকা। সিসি ক্যামেরা সেখানে নজরদারির চোখ। পুলিশ সূত্রের খবর, বেলুড় এলাকায় পর্যাপ্ত সিসি ক্যামেরা রয়েছে। তবে রক্ষনাবেক্ষণের অভাবে অধিকাংশ ক্যামেরাতেই কিছু ধরা পড়ে না। গোটা বালি এলাকাতেই ক্যামেরা রয়েছে ১০-১২টির মতো। তার মধ্যে অধিকাংশই ট্র্যাফিক দফতরের।

হাওড়া সিটি পুলিশের কমিশনার গৌরব শর্মা বলেন, ‘‘প্রতিটি এলাকাতেই নজরদারির জন্য আরও সিসি ক্যামেরা লাগানোর প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে। বেলুড়-বালিতেও সেই প্রকল্পেই সিসি ক্যামেরা লাগানো হবে।’’

Advertisement

২০১১ সালে হাওড়া জেলা পুলিশ ভেঙে তৈরি হয় কমিশনারেট। শহরের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় জোর দিতে একটি বড় থানাকে ভেঙে এলাকাভিত্তিক ছোট ছোট থানা বানানো হয়। সেই সময়ই কমিশনারেটে বিভিন্ন দফতর তৈরির পাশাপাশি প্রতিটি থানা এলাকায় সিসি ক্যামেরা বসানোর উপরেও জোর দেন কর্তারা। সেই মতো প্রথমেই ট্র্যাফিক দফতর জিটি রোড-সহ শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় নজরদারি চালাতে ক্যামেরা বসায়। পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন থানা এলাকাতে পুলিশ কমিশনারেট ছাড়াও স্থানীয় বিধায়ক, সাংসদ তহবিলের টাকায় সিসি ক্যামেরা লাগানোর কাজ শুরু হয়।

ছোট-বড় কারখানা, এশিয়ার বৃহত্তম লোহার ছাঁটের বাজার বজরংবলী ছাড়াও বসতি অঞ্চল ঘেরা বেলুড় থানা এলাকা। গোটা এলাকায় নজরদারির জন্য রয়েছে প্রায় ২০০টি সিসি ক্যামেরা। কয়েক দিন আগে লিলুয়া স্টেশন সংলগ্ন রাস্তায় একটি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। পরে দুই ছিনতাইবাজকে গ্রেফতার করে বেলুড় থানার পুলিশ। কিন্তু তদন্তে নেমে প্রথমে বেগ পেতে হয় তদন্তকারীদের। কারণ ওই রাস্তায় থাকা ক্যামেরা অকেজো থাকায় কোনও ছবি ধরা পড়েনি।

বালি এলাকার সমস্যাটি আবার অন্য রকম। এখানে থানার সামনে হাতেগোনা কয়েকটি ক্যামেরা লাগানো থাকলেও বাকি গোটা এলাকায় কোনও নজরদারি ক্যামেরা নেই। সম্প্রতি বালিখাল সংলগ্ন একটি গঙ্গার ঘাটে এক তরুণীর কাটা মাথা ও দেহাংশ ভরা ব্যাগ উদ্ধার হলেও, সেখানে সিসি ক্যামেরা না থাকায় কে বা কারা ওই কাণ্ড ঘটিয়েছিল তা জানতে পারেননি তদন্তকারীরা। ট্র্যাফিকের কয়েকটি মাত্র সিসি ক্যামেরা লাগানো রয়েছে বালির জিটি রোডে। স্থানীয় সূত্রের খবর, এলাকার কোথায় ক্যামেরা লাগানো হবে সে বিষয়ে বছর খানেক আগে বালি থানার তরফে সমীক্ষা চালানো হলেও পরে কাজ এগোয়নি।

তবে শুধু সিসি ক্যামেরা বসালেই হবে না। নিয়মিত তা রক্ষণাবেক্ষনের প্রয়োজন রয়েছে বলেও মনে করেন সিসি ক্যামেরা বিশেষজ্ঞরা। তেমনই এক জন অনির্বাণ মিশ্র বলেন, ‘‘ক্যামেরার থেকেও সব থেকে বেশি নজর দেওয়া প্রয়োজন অপটিক্যাল ফাইবার কেব্‌লের উপর। মূলত ওইগুলিই বেশি খারাপ হয়। তাই ১৫ দিন অন্তর ওই কেব্‌লের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে হয়। কারণ কেব্‌ল ক্ষতিগ্রস্ত হলে কোনও ভাবেই ক্যামেরা কাজ করবে না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement