বিক্ষোভ: কোষাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি। নিজস্ব চিত্র
এর আগে বিএসইউপি প্রকল্পে গরিবদের বাড়ি তৈরির টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ উঠেছিল। এ বার বিদ্যুৎ বিলের ১০ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠল তাঁর বিরুদ্ধে। কোষাধ্যক্ষ অরিন্দম চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে বার বার দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় তাঁকে গ্রেফতারের দাবিতে সোমবার বিক্ষোভ দেখালেন শাসক দল প্রভাবিত পুরকর্মী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
ডানকুনি পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, মাসখানেক আগে অরিন্দমবাবুর বিরুদ্ধে বিএসইউপি প্রকল্পে গরিবদের বাড়ি তৈরির জন্য বরাদ্দ প্রায় ৮৫ লক্ষ টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি জানাজানি হলে দলের নির্দেশে পুরপ্রধান হাসিনা শবনম ডানকুনি থানায় অরিন্দমবাবুর বিরুদ্ধে এফআইআর করেন। যদিও পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করেনি। তাদের দাবি, তিনি গা-ঢাকা দিয়েছেন। এ সবের মধ্যেই দিন কয়েক আগে ফের আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ ওঠে অরিন্দমবাবুর বিরুদ্ধে। অভিযোগ, বিদ্যুৎ বিলের প্রায় ১০ লক্ষ টাকা তিনি আত্মসাৎ করেছেন। পুরসভার হিসেবরক্ষক বিষয়টি লিখিত ভাবে পুরপ্রধান-সহ অন্যদের জানান। পুর-কর্তৃপক্ষ অবশ্য এ বিষয়ে এখনও কোনও পদক্ষেপ করেননি। তবে একই লোকের বিরুদ্ধে বার বার দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় পুর কর্তৃপক্ষ রীতিমতো অস্বস্তিতে। পুরপ্রধান বলেন, ‘‘হিসাবরক্ষক সুনীল মণ্ডল চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন ৯ লক্ষ ৫৮ হাজার টাকার গরমিল হয়েছে। বিষয়টি আমি দলীয় নেতৃত্বকে জানাচ্ছি। নেতৃত্ব যা বলবেন, সেই অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।’’
অভিযোগ, মাস তিনেক আগে ‘বেয়ারার চেক’ এ বিদ্যুৎ বিলের টাকা নেন অরিন্দমবাবু। কিন্তু সেই টাকা বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানিতে জমা পড়েনি। পুরকর্মী সংগঠনের ডানকুনি শাখার কার্যকরী সভাপতি বাপ্পা নন্দী এবং সম্পাদক লালমোহন ঘোষ বলেন, ‘‘পুরপ্রধানের সই করা চেক গায়েব হয়ে গেল। স্বচ্ছতা প্রমাণ করতে গোটা বিষয়টা সামনে আসা দরকার। পুরপ্রধান চুপচাপ বসে না থেকে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিন।’’ সংগঠনের জেলা সভাপতি অন্বয় চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘সাধারণ মানুষের টাকা নয়ছয় হয়েছে। এটা মেনে নেওয়া যায় না। প্রয়োজনে সংবাদপত্রে ছবি-সহ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে অভিযুক্তকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেওয়া হোক।’’ এ দিন তৃণমূলের পুরকর্মী সংগঠনের তরফে পুরসভায় অবস্থান বিক্ষোভ করা হয়। পুরপ্রধানের কাছে স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয় সংগঠনের তরফে।
কোষাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া ছাড়াও অস্থায়ী কর্মীদের রাজ্য সরকার ঘোষিত ন্যূনতম মজুরি, অভিজ্ঞতা এবং যোগ্যতা অনুযায়ী স্থায়ীকরণ, সচিত্র পরিচয়পত্র, প্রভিডেন্ট ফান্ডের আওতায় আনা-সহ নানা দাবি জানানো হয় স্মারকলিপিতে। পুরপ্রধানের বক্তব্য, ‘‘প্রভিডেন্ট ফান্ড দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। বাকি দাবিগুলিও বিবেচনা করা হবে।’’