প্রতীকী ছবি
একের পর এক অপরাধের ঘটনা ঘটছে হাওড়ায়।
ভরদুপুরে বাড়ির ভিতরে ঢুকে বৃদ্ধাকে মারধর করে সোনা লুটের ঘটনা ঘটেছিল চার দিন আগেই। দিন পনেরো আগে প্রকাশ্য রাস্তায় গুলি করে খুন করা হয়েছিল প্রোমোটারকে। এ বার দিনেদুপুরে অর্থলগ্নি সংস্থার অফিসে ঢুকে লোকজনকে বেঁধে নগদ টাকা ও গয়না লুট করল দুষ্কৃতীরা। শেষ পর্যন্ত লুটের মাল উদ্ধার করতে পারলেও ডাকাতদের নাগাল পায়নি পুলিশ। পরের পর ঘটনায় শহরের আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে তীব্র অসন্তোষ তৈরি হয়েছে।
হাওড়ার রামরাজাতলার একটি ঘনবসতিপূর্ণ বাজার এলাকায় শনিবার দুপুরে ওই দুঃসাহসিক ডাকাতির ঘটনা ঘটে। রামরাজাতলা স্টেশন রোডের ওই অর্থলগ্নি সংস্থার অভিযোগ, চার ডাকাত অফিসে ঢুকে কর্মীদের মারধর করে এবং গ্রাহকদের মাথায় আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে লকার রুমে বন্ধ করে দেয়। এর পরে ভল্ট ভেঙে কয়েক কিলোগ্রাম সোনার গয়না ও নগদ কয়েক লক্ষ টাকা নিয়ে চম্পট দেয় তারা। ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই সোনা বন্ধক রেখে ঋণ নেওয়া গ্রাহকেরা সংস্থার অফিসের সামনে এসে কান্নাকাটি শুরু করে দেন।
হাওড়া সিটি পুলিশ জানায়, ডাকাতির দু’ঘণ্টার মধ্যে বর্ধমানের কাছ থেকে গয়না ও টাকা উদ্ধার হয়েছে। যে গাড়িটি চেপে ডাকাতেরা পালাচ্ছিল, সেটিও আটক করা হয়েছে। তবে চার ডাকাত পুলিশকে দেখেই ধানখেতের উপর দিয়ে পালিয়েছে। সূত্রের খবর, ডাকাতেরা সংস্থার কর্মী এবং অন্যদের মোবাইল ছিনিয়ে নিয়েছিল। তার মধ্যে একটি মোবাইলের জিপিএস ট্র্যাকার সক্রিয় থাকায় ডাকাতদের হদিস পেতে সুবিধে হয়।
রামরাজাতলা স্টেশনের কাছে একটি পাঁচতলা বাড়ির দোতলায় রয়েছে ওই অর্থলগ্নিকারী সংস্থার অফিস। সেখানে সোনার গয়না বন্ধক রেখে ঋণ দেওয়া হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এ দিন দুপুর ২টো ২০ মিনিট নাগাদ চার যুবক মুখ ঢেকে, হাতে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে আচমকা অফিসে ঢুকে নিরাপত্তাকর্মী চন্দন ঘোষকে মারধর করতে শুরু করে। তার পরে অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজারের ঘরে ঢুকে তাঁর থেকে ভল্টের চাবি চায় দুষ্কৃতীরা। অভিযোগ, তাঁকে মারধর করে গ্রাহক ও কর্মীদের সঙ্গে লকার রুমে আটকে দেওয়া হয়। ওই সংস্থার ইন্টারনাল অডিট ম্যানেজার সুন্দর নায়েক বলেন, ‘‘ওরা রিভলভার ঠেকিয়ে আমাদের লকার রুমে বন্দি করে আধ ঘণ্টা ধরে ডাকাতি করে। প্রায় ২৬ কেজি সোনা ও নগদ ১৪ লক্ষ টাকা নিয়ে গিয়েছে।’’
রামরাজাতলার মতো বাণিজ্যিক এলাকায় পুজোর মুখে এমন ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। ঘটনার পরে হাওড়া সিটি পুলিশের পদস্থ অফিসারেরা এবং গোয়েন্দারা ঘটনাস্থলে পৌঁছন। প্রত্যক্ষদর্শীদের থেকে পুলিশ খবর পায়, একটি গাড়িতে চেপে কোনা এক্সপ্রেসওয়ের দিকে গিয়েছে ডাকাতেরা। দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে যাওয়ার সময়ে গাড়িটিকে চিহ্নিত করে পুলিশ। বর্ধমানের আগে গাড়ি ও ডাকাতি করা সমস্ত জিনিসপত্র ফেলে পালায় দুষ্কৃতীরা।
হাওড়া সিটি পুলিশের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘ডাকাতদের ধরতে পুলিশি তল্লাশি চলছে। খুব শীঘ্রই সকলকে গ্রেফতার করা হবে।’’