—ফাইল চিত্র।
রাতের অন্ধকারে একটি কোচিং সেন্টারে বোমা ছুড়ে পালাল দুষ্কৃতীরা। শনিবার ঘটনাটি ঘটেছে শ্রীরামপুরের মাহেশের খটিরবাজার এলাকায়। ঘটনার জেরে আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়। তদন্তে নেমেছে পুলিশ। রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কেউ অবশ্য ধরা পড়েনি। পুলিশ জানিয়েছে, লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। দোষীদের চিহ্নিত করে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শ্রীরামপুর পুরসভার ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের ওই এলাকায় কোচিং সেন্টারটিতে পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয়। পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত সব বিষয় এবং উচ্চ মাধ্যমিকের কলা বিভাগের বিভিন্ন বিষয় পড়ানো হয়। সব মিলিয়ে শ’দে়ড়েক পড়ুয়া আছে। শিক্ষক-শিক্ষিকার সংখ্যা ৭-৮ জন। কোচিং সেন্টারটি চলে জনৈক মুকেশকুমার সিংহের তত্ত্বাবধানে। জায়গাটিও তাঁর। তিনটি ঘরে পড়াশোনা চলে। মা-বাবা, স্ত্রী এবং ছোট দুই ছেলেকে নিয়ে তিনি সেখানেই থাকেন।
মুকেশ জানান, সাধারণত তাঁরা রাত সাড়ে ১০টার মধ্যে খেয়েদেয়ে শুয়ে পড়েন। এক আত্মীয় আসায় শনিবার রাতে তাঁর সঙ্গে গল্প করতে দেরি হয়ে যায়। রাত ১২টা নাগাদ তাঁরা এক তলায় এসে খাওয়া-দাওয়া করছিলেন। তখনই দোতলার ঘর লক্ষ্য করে বোমা ছোড়া হয়। বিকট শব্দে বোমাটি ফাটে। তার জেরে দরজার কিছুটা অংশ ভেঙে যায়। ঘরের টিউবলাইট ভেঙে যায়। ধোঁয়ায় চারদিক ঢেকে যায়। বোমার আওয়াজে স্থানীয় বাসিন্দারা ছুটে আসেন। আসে পুলিশও। শনিবার চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের এসিপি-২ বিজয়কৃষ্ণ মণ্ডল ঘটনাস্থলে যান।
মুকেশ বলেন, ‘‘আচমকা ওই ঘটনায় প্রচণ্ড ভয় পেয়ে যাই। ঘরে বৃদ্ধ বাবা-মা, স্ত্রী, দুই ছেলে থাকে। ঘটনার কিছুক্ষণ আগেও আমরা ওই ঘরেই ছিলাম। তখন বোমা ছোড়া হলে আমরা জখম হতে পারতাম। বোমা ফাটার পরে বাইরে বেরিয়ে অবশ্য কাউকে দেখতে পাইনি। বোমা ছুড়েই দুষ্কৃতীরা পালায়।’’
কেন তাঁর ঘরে বোমা ছুড়বে দুষ্কৃতীরা? মুকেশ জানান, তিনটি ঘরে অত ছাত্রছাত্রীকে পড়ানো সমস্যা হচ্ছিল। সেই কারণে পাশেই আরও দু’টো ঘর তৈরি করেছেন তিনি। কাজ কিছুটা বাকি থাকলেও গত শুক্রবার ঘর দু’টির দ্বারোদঘাটন করা হয়েছে। ঘর দু’টি করার কারণে কোনও দুষ্কৃতী ঠিকাদাররের থেকে টাকা চেয়ে তা না পেয়ে ওই ঘটনা ঘটিয়েছে কিনা, তাঁরা তা বুঝতে পারছেন না। তাঁর কথায়, ‘‘১৭ বছর ধরে এখানে পড়াচ্ছি। আগে কখনও এমন কিছু হয়নি। ঠিক বুঝতে পারছি না।’’ স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, কে বা কারা কেন ওই ঘটনা ঘটিয়েছে, পুলিশ দ্রুত তার কিনারা করুক। এলাকায় পুলিশি টহল কমেছে বলেও তাঁদের অভিযোগ। পুলিশের দাবি, এলাকায় নিয়মিত টহলদারি চলে।