তেড়েফুঁড়ে: ভূপতিত ব্যারিকেড। এগোচ্ছে বিজেপির মিছিল। মঙ্গলবার, হাওড়ার পঞ্চাননতলায়। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার
হাওড়ায় মুখ্যমন্ত্রীর মিছিলের আগের দিন মঙ্গলবার নতুন নাগরিকত্ব আইনের পক্ষে ‘শান্তি মিছিল’ করল বিজেপি। আজ, বুধবার হাওড়া ময়দান থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নতুন নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে মিছিল করার কথা। এ দিন হাওড়া জেলা বিজেপির পক্ষে মধ্য হাওড়ার পঞ্চাননতলায় দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে হাওড়া ময়দান পর্যন্ত শান্তি মিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছিল। যার ফলে সকাল থেকেই ওই এলাকায় উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এ দিকে মঙ্গলবার থেকে আরও চব্বিশ ঘণ্টার জন্য ইন্টারনেট বন্ধ রেখেছে প্রশাসন।
বিজেপির এ দিনের ওই মিছিল ঘিরে গোলমালের আশঙ্কায় বিশাল পুলিশ বাহিনী ও র্যাফ তৈরি ছিল রাস্তায়। তবে এ দিনের মিছিলকে ঘিরে অপ্রীতিকর কোনও ঘটনা ঘটেনি। অন্য দিকে এ দিন সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ নাজিরগঞ্জের হাঁসখালি পোল এলাকার কিছু বাসিন্দা নতুন নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে রাস্তা অবরোধ করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বেধে যায়। পুলিশ লাঠি চালিয়ে ও কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে অবরোধকারীদের হটিয়ে দেয়।
গত শনিবার থেকে হাওড়ার বিভিন্ন জায়গায় নতুন নাগরিকত্ব আইনের হিংসাত্মক বিরোধিতা ঘিরে চরম বিশৃঙ্খলা হয়েছে। এ দিন তাই পুলিশ কঠোর ছিল। হাওড়া জেলা বিজেপির কেন্দ্রীয় অফিস থেকে বেরোনো ওই মিছিলকে ঘিরেও সকাল থেকেই উত্তেজনা দেখা যায়। যে জায়গা থেকে প্রথমে মিছিল শুরু হওয়ার কথা ছিল, সেই কদমতলা বাসস্ট্যান্ডের কাছে হাজির হন হাওড়া সিটি পুলিশের ডিসি (উত্তর) ওয়াই রঘুবংশী। সঙ্গে ছিল বিশাল পুলিশবাহিনী ও র্যাফ। পরে ঠিক হয় মিছিল হবে পঞ্চাননতলায় জেলা বিজেপির কেন্দ্রীয় অফিস থেকে হাওড়া ময়দান পর্যন্ত। ওই খবর আসার পরেই পুলিশ হাওড়া ময়দানমুখী মিছিল আটকে দেয়। পরে মিছিল ফের কদমতলার দিকে আসতে গেলে পাওয়ার হাউস মোড়ে পুলিশ ব্যারিকেড করায় মিছিল আর এগোয়নি। বিজেপি সমর্থকেরা সেখানেই বসে পড়েন। ঘণ্টাখানেক ধরে পঞ্চাননতলা রোড অবরুদ্ধ থাকার পরে আন্দোলনকারীদের গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে গিয়ে জামিনে মুক্তি দেয় পুলিশ।
অন্য দিকে, এ দিন সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ আন্দুল রোডের হাঁসখালি পোল এলাকার কিছু বাসিন্দা ওই আইনের বিরোধিতায় আন্দুল রোড অবরোধ করেন। যার ফলে যানজটে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে ওই ব্যস্ত রাস্তা। খবর পেয়ে বিশাল পুলিশবাহিনী ও র্যাফ ঘটনাস্থলে যায়। অবরোধ হটাতে পুলিশ লাঠি চালালে অবরোধকারীরাও পাল্টা ইট ছুড়তে শুরু করেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ দু’রাউন্ড কাঁদানে গ্যাস ছুড়লে অবরোধকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান।
হাওড়ার পুলিশ কমিশনার গৌরব শর্মা বলেন, ‘‘ঘটনাস্থল থেকে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গত তিন দিনে সব মিলিয়ে ১৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। হিংসাত্মক কার্যকলাপ কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা হবে না।’’