প্রতীকী ছবি।
গতবারে ওঁরা জিতেছিলেন সিপিএমের টিকিটে। মাঝপথে যোগ দিয়েছিলেন তৃণমূলে। আশ্বাস ছিল, এ বারের ভোটে টিকিট নিশ্চিত। কিন্তু কোথায় টিকিট?
পান্ডুয়া পঞ্চায়েত সমিতির বিদায়ী ১২ জন সদস্য টিকিটের দাবি নিয়ে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হয়েছেন। তাঁদের অবস্থা নিয়ে পান্ডুয়ার রাজনৈতিক মহলে এখন জোর চর্চা চলছে। অনেকে বলছেন, ওই সদস্যদের আম এবং ছালা দুই-ই গেল! তৃণমূলে টিকিট পাওয়ার নিশ্চয়তা নেই। আবার পুরনো দলেও ভিড়তে পারছেন না।
পান্ডুয়া পঞ্চায়েত সমিতিতে মোট আসন ৪৬টি। গত নির্বাচনে সিপিএম ৩৪টি আসনে জিতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। তৃণমূল ১১টি এবং বিজেপি একটি আসন পায়। গত বছরের শেষ দিকে ১২ জন সিপিএম সদস্য দল ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন। ফলে তৃণমূল পঞ্চায়েত সমিতি ‘দখল’ করে। তৃণমূল সূত্রের খবর, ওই ১২ জনের দলবদলের নেপথ্যে ছিলেন দলীয় নেতা অসিত চট্টোপাধ্যায়। তিনি ছিলেন পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা। সমিতিতে ক্ষমতা বদলের পরে তিনি সহ-সভাপতি হয়ে যান। সিপিএম ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়া সদস্যদের মধ্যে নিশাপতি রক্ষিত বলেন, ‘‘এ বারের ভোটে দাঁড় করানোর আশ্বাস দিয়ে অসিতবাবু আমাদের তৃণমূলে এনেছিলেন। কিন্তু তার পর থেকে আমাদের সঙ্গে কোনও আলোচনা করেননি। সমিতির বৈঠকেও ডাক পেতাম না। এখন প্রার্থীপদ পাওয়া নিয়েও চরম অনিশ্চয়তা।’’
সানিমা বিবি নামে ওই দলের আর এক সদস্যের আক্ষেপ, ‘‘আগের দলেই বোধহয় ভাল ছিলাম। আমাদের জন্যই মাঝপথে তৃণমূল ক্ষমতা পেল। এখন আমাদের ছুড়ে ফেলে দেওয়া হবে? অসিতবাবুর কথায় তৃণমূলে এলাম। এখন দেখছি উনি নিজেই অন্যের জায়গায় দাঁড়ানোয় জলঘোলা হচ্ছে। আমাদের আসন উনি সুরক্ষিত করবেন কী করে?’’
ওই সদস্যেরা জানান, দলের ব্লক নেতৃত্বের কাছে সাড়া না-পেয়ে তাঁরা বিষয়টি জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা মন্ত্রী তপন দাশগুপ্তকে জানান। তাতেও কাজ না-হওয়ায় মমতাকে ই-মেল করে বিষয়টি জানিয়েছেন। এরপরেও তাঁরা বুঝতে পারছেন না, ভাগ্যে শিকে ছিঁড়বে কিনা!
অসিতবাবু জানান, ওঁদের মধ্যে ৬ জনকে পঞ্চায়েত সমিতির টিকিট দেওয়া যাবে। এক জন নিজেই দাঁড়াতে চাননি। এক জন মারা গিয়েছেন। মাত্র ৪ জনকে টিকিট দেওয়া যাবে না। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের দলের পুরনো নেতারাই এ বার টিকিট পাচ্ছেন না। এত দাবিদার, কী আর করা যাবে!’’
এক সময়ের দলের লোকেদের এই অবস্থা দেখে পান্ডুয়ার সিপিএম বিধায়কের কটাক্ষ, ‘‘ওঁরা মানুষের সঙ্গে বেইমানি করেছেন। মানুষ ওঁদের ক্ষমা করবেন না।’’