হামলা: ভাঙা হয়েছে জানলার কাচ। নিজস্ব চিত্র
পঞ্চায়েত নির্বাচনের ঢাকে কাঠি পড়তেই শাসক দল তৃণমূলের বিরুদ্ধে ‘সন্ত্রাস’-এর অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে হুগলি জেলার নানা এলাকায়। সোমবার রাতে শ্রীরামপুর-উত্তরপাড়া ব্লকের রিষড়া পঞ্চায়েতের দুই সিপিএম সদস্যের বাড়িতে হামলার অভিযোগ উঠল তৃণমূল কর্মীদের বিরুদ্ধে। দুই বাড়িতেই শাসক দলের দুষ্কৃতীরা ভাঙচুর চালায় এবং শাসানি দেয় বলে অভিযোগ।
সিপিএম নেতৃত্বের অভিযোগ, সোমবার রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ জনা পঞ্চাশ দুষ্কৃতী সুভাষনগর এলাকায় সিপিএমের পঞ্চায়েত সদস্য কিশোর চক্রবর্তীর বাড়িতে হামলা চালায়। দুষ্কৃতীদের মুখ কাপড়ে বাধা ছিল। তারা ইট ছুড়ে জানলার কাচ ভেঙে দেয়। কিশোরবাবু ভোটে দাঁড়ানোর চেষ্টা করলে ফল ভাল হবে না বলেও শাসানি দেওয়া হয়। মঙ্গলবার সকালে ওই বাড়ির সামনে গিয়ে দেখা যায়, গোটা তিনেক জানলার কাচ ভাঙা। বাড়ির এক সদস্য বলেন, ‘‘আমরা কিছু বলব না। বললে আবার যদি হামলা হয়!’’
অভিযোগ, শুক্লা চক্রবর্তী নামে পঞ্চায়েতের অন্য এক সিপিএম সদস্যের বাড়িতেও একই কায়দায় হামলা চালানো হয়। শাবল দিয়ে জানলা এবং গেট ভাঙার চেষ্টা করা হয়। বাড়ির এক মহিলা বলেন, ‘‘ভাঙচুর, হুমকি আরা গালাগালির জেরে ভয়ে কাঁটা হয়ে গিয়েছিলাম। মেয়ের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা চলছে। সেও ভয় পেয়ে গিয়েছে।’’ হামলাকারীরা ফিরে গেলে বাড়ির লোকেরা পুলিশে খবর দেন।
সিপিএমের স্থানীয় নেতৃত্বের বক্তব্য, এই এলাকায় সিপিএম যথেষ্ট শক্তিশালী। শুক্লাদেবী এবং কিশোরবাবু দু’জনেই টানা তিন বারের পঞ্চায়েত সদস্য। এ বারেও ভোটে দাঁড়ালে তাঁদের জয় নিশ্চিত। সেই ভয়েই তৃণমূলের লোকেরা এ ভাবে হামলা চালিয়েছে। ব্লক তৃণমূল সভাপতি নিখিল নন্দীর অনুগামীরাই হামলা চালিয়েছে বলে তাঁদের অভিযোগ। জেলা সিপিএম সম্পাদক দেবব্রত ঘোষ বলেন, ‘‘যাঁরা আমাদের প্রার্থী হবেন বলে খবর পেয়েছে, শাসক দলের দুষ্কৃতীরা তাঁদের বাড়িতেই আক্রমণ করছে। ওঁদের বাড়িতে সেই কারণেই ওরা হামলা করেছে। আমরা নির্বাচন কমিশনকে সব জানাচ্ছি।’’
ব্লক তৃণমূল সভাপতি নিখিলবাবুর সঙ্গে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি। দলেরই নেতা তথা শ্রীরামপুর-উত্তরপাড়া পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি আচ্ছালাল যাদবের বক্তব্য, ‘‘কেউ যদি মনে করেন অন্যায় হচ্ছে, তা হলে প্রশাসনের দ্বারস্থ হতে পারেন। প্রশাসন নিশ্চয়ই মনোনয়ন জমা দেওয়ার ব্যবস্থা করবে।’’