বক্তব্য পেশ করছেন অরূপ রায়। নিজস্ব চিত্র
লাগাতার প্রচারে ফল মিলল। কয়েক হাজার গ্রামবাসীর উপস্থিতিতে শনিবার এক ব্যতিক্রমী গ্রামসভা হল হাওড়ার বাগনান-২ ব্লকের ওড়ফুলিতে। নজরদারি চালাতে উড়ল ড্রোন। কোট-টাই পরে আয়-ব্যয়ের হিসেব দিলেন পঞ্চায়েত সচিব। গ্রামবাসী জানালেন চাহিদার কথা।
যা দেখে খুশি সমবায়মন্ত্রী অরূপ রায় বললেন, ‘‘ভেবেছিলাম গ্রামসভায় আমি এসে কী করব? এখন দেখছি না এলে ভুল করতাম। এত মানুষ পঞ্চায়তের কাজে অংশ নিতে হাজির হয়েছেন, ভাবা যায় না।’’ জেলাশাসক চৈতালি চক্রবর্তী বললেন, ‘‘আমি বহু গ্রামসভায় গিয়েছি। এত মানুষক হাজির হতে কোথাও দেখিনি।’’
পঞ্চায়েতের নিয়ম বলছে, প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতকে বছরে দু’বার করে গ্রাম সংসদের সভা করতে হবে। বছরে একবার ডাকতে হবে গ্রামসভা। তাতে সব সংসদের বাসিন্দারা হাজির থাকবেন। তাঁদের সামনে গত অর্থবর্ষের জমা-খরচের হিসাব পেশ করতে হবে। পরবর্তী অর্থবর্ষের বাজেট এবং বাৎসরিক উন্নয়ন পরিকল্পনা অনুমোদন করাতে হবে।
কিন্তু বহু ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে, সরকারি স্তরে প্রচার থাকা সত্ত্বেও গ্রাম সংসদের সভাগুলিতে সে ভাবে গ্রামবাসীরা যোগ দেন না। একই হাল হয় বাৎসরিক গ্রামসভারও। কিন্তু ২০টি সংসদ নিয়ে গড়া ওড়ফুলি পঞ্চায়েতে দেখা গেল ভিন্ন চিত্র।
এ বার বহুদিন ধরেই প্রচার চালাচ্ছিল ওই পঞ্চায়েত। লিফলেট বিলি, মাইকে প্রচার, উন্নয়নের ফিরিস্তি সংক্রান্ত পুস্তিকা বিলি করে গ্রামবাসীদের সচেতন করা হয়েছে। পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষের দাবি, গ্রাম সংসদের সভাতেও ভাল ভিড় হয়েছিল। সামনে পঞ্চায়েত ভোট বলেই কি এত উদ্যোগ? মানতে চাননি প্রধান তৃণমূলের শ্রীকান্ত সরকার। তিনি বলেন, ‘‘কয়েক মাসের মধ্যেই পঞ্চায়েতের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। তাই সব মানুষ যাতে আসেন, আমরা পাঁচ বছরে তাঁদের কী দিয়েছি, তার মূল্যায়ন যাতে তাঁরা করতে পারেন সে জন্যই গ্রামসভা সফল করতে জোরদার প্রচার চালিয়েছি।’’
চককমলা হাইস্কুল মাঠে ওই গ্রামসভায় সমবায়মন্ত্রী এবং জেলাশাসক ছাড়াও এসেছিলেন জেলা সভাধিপতি করবী ধুল-সহ বিভিন্ন স্তরের জনপ্রতিনিধি এবং প্রশাসনের কর্তারা। গ্রামবাসীদের অনেকে বিভিন্ন প্রস্তাব তুলে ধরেন। ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে কাজ করেও টাকা না পাওয়ার সমস্যার কথাও জানান। মঞ্চ থেকে ছাত্রছাত্রীদের হাতে ‘সবুজ সাথী’ প্রকল্পের সাইকেল-সহ বিভিন্ন প্রকল্পের জিনিসপত্র উপভোক্তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।