প্রতীকী ছবি
টুকলি করায় পরপর দু’দিন দুই পরীক্ষার্থীর খাতা বাতিল করেছেন আরামবাগ গার্লস কলেজ কর্তৃপক্ষ। তার জেরে শনিবার ঘণ্টাদুয়েকের বিক্ষোভে উত্তেজনা ছড়াল ওই কলেজে। নিরাপত্তার অভাব বোধ করায় কলেজ কর্তৃপক্ষ পুলিশ ডাকেন।
ওই কলেজে ‘সিট’ পড়েছে গোঘাটের কামারপুকুর শ্রীরামকৃষ্ণ সারদা বিদ্যা মহাপীঠের স্নাতক স্তরের প্রথম বর্ষের পরীক্ষার্থীদের। শুক্রবার ছিল ইংরেজি অনার্সের পরীক্ষা। নকল করতে গিয়ে এক ছাত্রী ধরা পড়েন। শনিবার বাংলা (সাধারণ) পরীক্ষার সময়েও একই কারণে ধরা পড়েন এক ছাত্র। এরপরেই বেলা পৌনে ১টা নাগাদ বাইরে থেকে বেশ কিছু ছাত্রছাত্রী এসে খাতা বাতিল করা
যাবে না, এই দাবি তুলে আরামবাগ গার্লস কলেজে বিক্ষোভ দেখান এবং শিক্ষক-শিক্ষিকা ও অধ্যক্ষকে হুমকি দেন বলে অভিযোগ।
পুলিশ বাহিনী গিয়ে বিক্ষোভকারীদের কলেজ চত্বর থেকে সরিয়ে দেয়। কিন্তু বিক্ষোভকারীরা কলেজের মূল ফটকের বাইরে রাস্তায় বসে পড়েন। দুপুর আড়াইটা নাগাদ কলেজ সভাপতি তথা আরামবাগের পুরপ্রধান স্বপন নন্দী গিয়ে কলেজ অধ্যক্ষ সৈয়দ সাজিদুল ইসলামের সঙ্গে একপ্রস্ত আলোচনার পর বিক্ষোভকারীদের আশ্বাস দিলে অবরোধ ওঠে। স্বপন নন্দী বলেন, “ছাত্রছাত্রীদের বলেছি, বিষয়টা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হবে।”
আরামবাগ গার্লস কলেজের অধ্যক্ষ বলেন, “নকল করা নিয়ে সতর্ক করতে প্রতিটি কক্ষে বাংলায় নোটিস দিয়েছি। আমি নিজে গিয়ে বলেছি। তারপরেও নকল করায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম মতো দু’দিনে দু’জনের খাতা বাতিল হয়েছে। ছাত্রছাত্রীদর দাবি, তাদের অবাধে নকল করতে দিতে হবে। পরীক্ষায় গার্ড শিথিল করতে হবে। এই অরাজকতা মেনে নেওয়া যায় না। যা পরিবেশ তৈরি হচ্ছে, তাতে ক্রমশ পরীক্ষা ব্যবস্থাটাই হাস্যকর হয়ে উঠছে। এই অবস্থায় সবচেয়ে সমস্যা শিক্ষকদের নিরাপত্তা নিয়ে।” বিক্ষোভকারীরা যে তাঁর কলেজেরই তা মেনেছেন গোঘাটের কলেজটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ চিত্তরঞ্জন ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘ওখানে কী হয়েছে জানি না। পরীক্ষা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম সকলকেই মানতে হবে। কারা ওই কলেজে গিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
গত কয়েক বছর ধরেই স্নাতক স্তরের পরীক্ষায় গোঘাটের কলেজটির পরীক্ষার্থীদের ‘সিট’ পড়ছে আরামবাগ গার্লস কলেজে। বিক্ষোভকারীদের পক্ষে একজন বলেন, ‘‘আমরা শুনেছিলাম, জনাপনেরো ছাত্রছাত্রীর পরীক্ষার খাতা বাতিল হয়েছে। আমাদের দাবি, সামান্য ভুলের জন্য কোনও ছাত্রছাত্রীর ভবিষ্যৎ যেন নষ্ট নয় হয়। একজনেরও পরীক্ষার খাতা বাতিল করা যাবে না।” নকলে অভিযুক্ত ছাত্রের দাবি, তাঁর পায়ের কাছে একটা কাগজ পড়ে থাকতে দেখে তিনি তা তুলেছিলেন। তারপরেই তাঁর খাতা কেড়ে নেওয়া হয়।