উদ্ধার হওয়া ভেসেল। রিষড়া ফেরিঘাটে ক্ষতিগ্রস্ত জেটি (ইনসেটে)।
আমপানের ধাক্কায় কাছি ছিঁড়ে বেরিয়ে গিয়েছিল দু’টি ভেসেল এবং একটি লঞ্চ। একটি ভেসেল গঙ্গা থেকে উদ্ধার করা গিয়েছে। বাকি দু’টি এখনও নিখোঁজ। প্রকৃতির প্রলয়ে ক্ষতি হয়েছে জেটিরও। বিপর্যয়ের ধাক্কা এখনও না-কাটায় রিষড়ার সঙ্গে উত্তর ২৪ পরগনার খড়দহ ঘাটের ফেরি পরিষেবা চালু হল না।
লকডাউন পর্বে প্রায় দু’মাস ফেরি চলাচল বন্ধ ছিল। সোমবার, ‘আনলক-ওয়ান’-এর প্রথম দিনে উত্তরপাড়া থেকে গুপ্তিপাড়া পর্যন্ত গঙ্গায় ফেরি পরিষেবা চালু হলেও ব্যতিক্রম রিষড়া-খড়দহ। রিষড়া পুরসভার তত্ত্বাবধানে এই ঘাট চলে। পুর প্রশাসক বিজয়সাগর মিশ্র জানান, ভেসে যাওয়া তিনটি জলযানের মধ্যে ডুবুরি নামিয়ে একটি উদ্ধার করা গিয়েছে। জেটিরও ক্ষতি হয়েছে। জেটি মেরামত এবং আরও অন্তত দু’টি ভেসেল না-পেলে পরিষেবা চালানো মুশকিল। তিনি বলেন, ‘‘জেলা প্রশাসন এবং পরিবহণ দফতরে লিখিত ভাবে বিষয়টি জানানো হয়েছে। পরিবহণ দফতরের লোকেরা এসে জেটির অবস্থা দেখে গিয়েছেন। আশা করছি, জেটি মেরামতের পাশাপাশি রাজ্য সরকার শীঘ্রই ভেসেলের ব্যবস্থাও করবে। আরও চারটি ভেসেল পেলে ভাল ভাবে পরিষেবা দেওয়া সম্ভব হবে।’’
অফিস-কাছারি খুলে গিয়েছে। মানুষ পথে বের হচ্ছেন। রিষড়া-খড়দহ ফেরিঘাট চালু না-হওয়ায় বিশেষত নিত্যযাত্রীরা সমস্যায় পড়েছেন। তাঁরা চাইছেন, দ্রুত সমস্যার সমাধান হোক। দুই ঘাট হয়ে প্রতিদিনি অন্তত পাঁচ হাজার লোক যাতায়াত করেন।
ঘাট সূত্রের খবর, লকডাউনে পরিষেবা বন্ধের সময় থেকেই পাঁচটি জলযান রিষড়ায় জেটিতে বাধা ছিল। আমপানের দিন রাত ৮টা নাগাদ প্রবল ঝড়বৃষ্টির সময় জেটির উত্তর দিকের নোঙর উঠে চলে আসে। তার ফলে পন্টুন এবং গ্যাংওয়ে কিছুটা ঘুরে যায়। গ্যাংওয়ের উপরে টিনের শে়ডও নষ্ট হয়ে যায়। ১০০ আসনের একটি লঞ্চ, ৪০ আসনের একটি ভেসেল এবং ৮০ আসনবিশিষ্ট একটি ভুটভুটি কাছি ছিঁড়ে ভেসে যায়। গঙ্গার জল তখন রীতিমতো ফুঁসছে।
ঘাটকর্মী প্রশান্ত ঘোষাল কাছেই থাকেন। তিনি বলেন, ‘‘ওই অবস্থায় আমি এবং আরও তিন মাঝি জেটিতে এসে দেখি আরও দু’টি ভুটভুটিতে জল ঢুকেছে। ঝড়বৃষ্টির মধ্যেই কোনও রকমে জল বের করি।’’ এক দিন পরে ডুবুরিরা একটি ভেসেলের সন্ধান পান।
ঘাটকর্মীরা জানান, জোয়ারের সময় লঞ্চ এবং ভেসেল চালানো হয়। ভাটার সময় খড়দহের দিকে চড়া পড়ে। তখন ভুটভুটি চলে।